বাম দিক থেকে টম হল্যান্ডর , অলিভিয়া কোলম্যান, টম হিডলস্টন, এলিজাবেথ ডেবিকি ও হিউগ লরি।
রিভিউ: দ্য নাইট ম্যানেজার-১
পরিচালনা: সুজেন বেইর
অভিনয়: টম হিডলস্টন, হিউগ লরি, এলিজাবেথ ডেবিকি, অলিভিয়া কলম্যান
রেটিং: ৭.৫ / ১০
****
রিভিউ: দ্য নাইট ম্যানেজার-২
পরিচালনা: সন্দীপ মোদী ও প্রিয়াঙ্কা ঘোষ
অভিনয়: আদিত্য রয় কাপুর, অনিল কাপুর, শোভিতা ধুলিপালা, তিলোত্তমা সোম, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, জয় সেনগুপ্ত
ভাষা: হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলুগু, মারাঠি, কন্নড় ও মালয়ালম
রেটিং: ৮.০ / ১০
পার্ট-টু লেখা হলেও ‘দ্য নাইট ম্যানেজার’ মূল ইংরেজি ওয়েব সিরিজ সিজন ওয়ানের পরবর্তী অংশ নয়। একই গল্প হলেও ইংরেজি ভাষায় তৈরি সিজন ওয়ানের দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরের ফটোকপিও নয় পার্ট-টু।
অত্যন্ত যত্ন করে দস্তুর মতো গবেষণা করে পটভূমি ও চরিত্রের ভারতীয়করণ করা হয়েছে। নেট দুনিয়ায় কেউ কেউ ভারতীয় ‘দ্য নাইট ম্যানেজার’কে সিজন-টু বলছেন। কিন্তু ডিজনি হটস্টারে এই ওয়েব সিরিজকে পার্ট-টু সিজন ওয়ান বলা হয়েছে। বাংলা-সহ সাতটি ভাষায় সম্প্রচারিত এই ওয়েব সিরিজের প্রথম চারটি পর্ব গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। বাকি তিনটি পর্ব অর্থাৎ পাঁচ, ছয়, সাত প্রকাশ পেয়েছে হালে গত ২৯ জুন। সচরাচর এমনটা হয় না মানে এখনও পর্যন্ত কোনও সিজনের পর্ব দুটো ভাগে প্রকাশিত হয়নি। এরপরে হয়তো এই ধারা বজায় রেখে এমনটা হবে। আসলে ছবির দুনিয়ার লড়াইটা এখন ওয়েব সিরিজে। তাই চ্যানেল এবং প্রযোজক প্রথম পর্যায়ে চারটি পর্বে দর্শককে ধরে ফেলেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে মানুষ অপেক্ষা করেছে ফেব্রুয়ারি থেকে জুন, চার চারটি মাস।
প্রতি পর্বের নামকরণ হয়েছে সেই পর্বের কাহিনির বিশেষ কোনও ঘটনার সূত্রে। এ ভাবেই পর্বগুলি হল জখম, মিশন, মেহমান, সুইটলিওয়ালা, অভিমন্যু, ম্যাজিক ট্রিক এবং ইমার্তি।
সাধারণত কোনও ছবি বা ওয়েব সিরিজের সম্বন্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আমরা অনেকেই সেই পুরো গল্পটা বলতে থাকি। সেটা তো অপ্রয়োজনীয়। লেখাটা পড়ে যদি কারও মনে হয় যে এই ছবি বা ওয়েব সিরিজটা একবার দেখি, তাহলে গল্পটা তো তিনি তখন নিজে উপভোগ করবেন। একটু একটু করে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো। পেঁয়াজ ছাড়িয়ে কেটে কুঁচিকুঁচি করে মুড়িতে ছড়িয়ে দিলে সেই খোসা ছাড়ানোর মজাটা তো পাওয়া যাবে না। তাই ‘নো’ গল্প। সেটা আপনারা উপভোগ করবেন। আমি খালি কাহিনিসূত্রটা বলব। অ্যামাজন প্রাইমে আছে ২০১৬ সালে তৈরি ইংরেজি ভাষায় বিবিসি ওয়ান-এর ‘নাইট ম্যানেজার’। আর ডিজনি হটস্টারে ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য নাইট ম্যানেজার পার্ট-টু’।
১৯৯৩ সালে একই নামের এই মূল উপন্যাসটির রচয়িতা জন লে কারে। এই উপন্যাস থেকে ২০১৬ সালের ওয়েব সিরিজের উপযোগী করে এটির চিত্রনাট্য লিখেছেন ডেভিড ফার। পরিচালনা করেছেন ড্যানিশ চিত্রপরিচালিকা সুজেন বেইর। সংগীত পরিচালনা ভিক্টর রেয়েস।
ডিজনি হটস্টার-এ ‘দ্য নাইট ম্যানেজার’-এর ভারতীয় সংস্করণের নির্মাতা সন্দীপ মোদী ও প্রিয়াঙ্কা ঘোষ। চিত্রনাট্য শ্রীধর রাঘবন। সংলাপ রচয়িতা অক্ষত ঘিলদিয়াল ও শান্তনু শ্রীবাস্তব। সংগীত স্যাম সিএস।
বিবিসি সিরিজের টাইটেল খুব আকর্ষণীয় ছিল, সেখানে সাজানো সূদৃশ্য টি-পট ও চায়ের কাপ বদলে যায় অটোমেটিক মেশিনগানে। অলংকারের বহুমূল্যবান ঝরে পড়া মণিরত্ন বদলে যায় বিমান থেকে পড়তে থাকা বোমায়। আসলে এই কাহিনিতে জড়িয়ে রয়েছে যুদ্ধাস্ত্রের একটা ভয়ঙ্কর ভূমিকা।
গা ছমছমে ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-১০: আচমকা নাকে এলো সেই অদ্ভুত পোড়া গন্ধটা
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৬: আমার হৃদয় কাঁপে পরিস্থিতির চাপে
প্রথম পর্বটি যে ঘটনা দিয়ে শুরু হয় সেটি বিবিসি সিরিজে ছিল না। এখানে নির্মাতা নির্দেশক চিত্রনাট্যকারের মুন্সিয়ানা। গল্পের ‘বিটুইন দ্য লাইনস’ থেকে এই আশ্চর্য দৃশ্যভাবনা যা গল্প যত এগোবে তত স্পষ্ট হয়ে উঠবে। বিবিসি সিরিজ শুরু হয়েছিল মিশরের কায়রো শহরে। ২০১১ জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি হোসেনি মোবারক এর বিরুদ্ধে যখন সারাদেশ উত্তাল সেই সময়টায়। ২৫ জানুয়ারি কায়রোর অলিতে গলিতে শুরু হয়েছিল জণরোষ আন্দোলন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সময়টা জানি। কারণ ঠিক ১৫ দিন আগে ১০ জানুয়ারি আমি সপরিবারে কায়রো ছেড়েছিলাম। ঝড়ের আগের থমথমে ভাবটা অনুভব করেছিলাম যেন তখন।
রবি বেহেল অনিল কাপুর ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
ব্রিটিশ টিভি সিরিজটি মোট ৩৬টি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। ৩টি গোল্ডেন গ্লোব এবং ২টি প্রাইম টাইম এমি পুরস্কার সহ ১১টি পুরস্কার লাভ করে ইংরেজি ওয়েব সিরিজ।
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১: জয়রামবাটির আদরের ছোট্ট সারু
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৭: মদ না খেলে ফ্যাটি লিভার হয় না?
কাহিনিসূত্র
প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার এবং অভিজাত হোটেলের নাইট ম্যানেজার জোনাথন পাইন (টম হিডলস্টন) বা শান্তনু (শান) সেনগুপ্ত (আদিত্য রয় কাপুর)। ব্রিটিশ ইন্টালিজেন্সের অ্যাঞ্জেলা বার (অলিভিয়া কলম্যান) বা ভারতীয় র’ এজেন্ট লিপিকা সইকিয়া রাও (তিলোত্তমা সোম) জানতে পারেন ভারতীয় উপমহাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শৈলেন্দ্র/ শেলী রুংতা (অনিল কাপুর) তার ব্যবসার আড়ালে অবৈধ যুদ্ধাস্ত্র বিক্রির কারবার চালাচ্ছে। লিপিকার সূত্রে ভারত সরকারের গুপ্তচর হিসেবে রুংতার বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তার ডেরায় পৌঁছনো এবং জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে শান সেনগুপ্ত’র নিঃশব্দ লড়াই নিয়ে এ কাহিনি।
ইংরেজি সিরিজে এই সাইকোপ্যাথ চরিত্রটির নাম রিচার্ড অনস্লো রোপার ওরফে ডিকি বা চিফ। নাম ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছেন হিউগ লরি। দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং জয় সেনগুপ্ত। শাশ্বত শেলীর দলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ পল। আর জয় লিপিকার বস র’ এজেন্ট দানিস খান।
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩: সুন্দরবনে মানুষের আদি বসতি
লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-৫: হিচককের লন্ডন, হিচককের সিরিয়াল কিলার
একই চরিত্রে শুধুমাত্র সংলাপে ভাষার তফাত তাই অভিনয়ের তুল্যমূল্য বিচারটা স্পষ্ট। এক নিঃশ্বাসে বলা যায় আদিত্য রায় কাপুর, অনিল কাপুর, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, জয় সেনগুপ্তরা চোখে চোখ রেখে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। শেলীর বান্ধবী বা স্ত্রী কাবেরী ওরফে কে’র ভূমিকায় শোভিতা ধুলিপালা তারই চরিত্র জেমিমা মার্শেল বা জেড-এর ভূমিকাভিনেত্রী এলিজাবেথ ডেবিকির সঙ্গে সমান দক্ষতায় পাল্লা দিয়েছেন।
আদিত্য রায় কাপুর, শোভিতা ধুলিপালা ও অনিল কাপুর।
* দ্য নাইট ম্যানেজার পার্ট টু সিজন ১ (হিন্দিসহ ৭টি ভারতীয় ভাষায়) দেখুন ডিজনি হটস্টারে।
* দ্য নাইট ম্যানেজার, সিজন ১ (বিবিসি সিরিজ ইংরেজি) দেখুন আমাজন প্রাইমে।