‘আমি ফুলঝুড়ি নই, কালিপটকাও নই, আমি তুবড়ি। একবার জ্বললে সহজে নিভি না’। সম্প্রতি এই সংলাপটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামীকাল থেকে জি বাংলায় সম্প্রচারিত হবে নতুন ধারাবাহিক ‘উড়ন তুবড়ি’। এর প্রোমোতেই ‘তুবড়ি’ চরিত্রটিকে এই সংলাপটি বলতে দেখা গিয়েছে। এই ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র ‘তুবড়ি’-র ভূমিকায় অভিনয় করছেন সোহিনী বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও বহু ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। তবে, সোহিনী এই প্রথম মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করছেন। আজ ‘সময় আপডেটস’-এর ‘মুখোমুখি’ বিভাগে রইল সোহিনী-র তুবড়ি হয়ে ওঠার গল্প। অভিনয় জীবন নিয়ে কী বললেন সোহিনী বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আমরা তা জেনে নেব।
● সোহিনী থেকে তুবড়ি হওয়ার জার্নিটা কেমন ছিল?
●● আমি অভিনয় জগতে এসেছি ২০১৮ সালে। আমি অভিনেত্রী হবই, ছোটবেলা থেকে এমন কোনও পরিকল্পনা আমার ছিল না। কিন্তু বাচ্চারা যেটা করে, সব দেখে নকল করা। সেটা আমিও করতাম। আর সুপ্ত একটা ইচ্ছা ছিল অভিনেত্রী হওয়ার। সেইসময় এই পেশায় রয়েছে এমন কেউই আমার চেনাশোনা ছিল না। তখন আমি বিভিন্ন ইন্টারভিউ দেখার পর জানতে পারি যে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি জমা দিতে হয়। সেই থেকেই স্টুডিওতে গিয়ে গিয়ে ছবি জমা দিয়ে আসি। তারপর আমি একজন দর্শক হিসাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। সেইসময়ই একটা অনুষ্ঠানে গিয়ে অডিশনের খোঁজ পাই। তারপর অডিশন দিই। সিলেক্টও হই। যেমন সাধারণত হয়ে থাকে। সেভাবেই অভিনয় জগতে আসা আমার। আমি প্রথম কাজ করি ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ধারবাহিকে। তারপর একে একে ‘জয় বাবা লোকনাথ, ‘অলৌকিক না লৌকিক’, ‘কি করে বলব তোমায়’, ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। তবে মুখ্যচরিত্রে এই প্রথম অভিনয় করছি জি বাংলার ‘উড়ন তুবড়ি’ ধারাবাহিকে।
● ‘উড়ন তুবড়ি’ ধারাবাহিকেই তুমি প্রথমবার মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করছো। কেমন লাগছে?
●● খুবই ভালো লাগছে। অনেক কিছু শিখতে পারছি। এই ধারাবাহিকে লাবনী দি, রানা দা, ঋ দি-র মতো অনেক সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন। সবার থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি। আমাদের পরিচালক অমিত দা ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সন্দীপ দা-ও খুব ভালো। তাঁরা আমাদের খুব সাপোর্ট করছেন। সবমিলিয়ে খুব মজা করে, অনেক কিছু শিখে এই কাজটা করছি।
● তুবড়ি-র মতো একটা স্ট্রং চরিত্রকে কীভাবে রপ্ত করলে?
●● এর জন্য ‘মর্দানি’, ‘গঙ্গুবাই’-এর মতো সিনেমাগুলো দেখেছি। যদিও এখানে চরিত্রটা একেবারে ওরকম নয়। কিন্তু একটু রুক্ষ্ম ও কঠিন, স্বাধীন একটা চরিত্র। আঙ্গুল তুলে কেউ কথা বললে তাকে কিছু না বলে চলে যাওয়ার মেয়ে নয় তুবড়ি। এই চরিত্রটা প্রতিবাদী চরিত্র। সেই কারণে এই ধরণের সিনেমাগুলো দেখেছি যাতে চরিত্রটাকে সেইভাবে নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে পারি।
● বড় পর্দায় অভিনয় করার ইচ্ছে আছে?
●● হ্যাঁ, অবশ্যই। এরপর দেখা যাক কী হয়। তবে, সিনেমা বা ধারাবাহিক, যেখানেই অভিনয় করি না কেন, চেষ্টা করবো প্রত্যেকটা চরিত্রই যেন আলাদা রকম হয়। যেমন ‘উড়ন তুবড়ি’-তেও আমার চরিত্রটা একেবারে অন্যরকম এবং অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এর আগে যে কটি চরিত্রে অভিনয় করেছি, সবকটাই অন্যরকম চরিত্র ছিল। সবসময় চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। এটাই আমার ইচ্ছে।
● বড়পর্দায় অভিনয় করার সুযোগ পেলে কোন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?
●● একজন নয়, একাধিক অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছা রয়েছে। অভিনেতাদের মধ্যে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, যিশু সেনগুপ্ত এবং কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়-এর সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়াও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালিত ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছে রয়েছে। তাঁকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি। ওঁর কাজ দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
● ওটিটিতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
●● হ্যাঁ, অবশ্যই। হইচই-এর ‘একেনবাবু সিজন ৪’-এ আমি কাজ করেছি। ভবিষ্যতে ভালো চরিত্র পেলে অবশ্যই ওটিটিতে আরও কাজ করার ইচ্ছা আছে আমার।
● তোমার মতে, এই সময়ে থিয়েটারের গুরুত্ব কতটা?
●● হয়তো থিয়েটারের দর্শকের সংখ্যা সীমিত। কিন্তু থিয়েটারের যাঁরা দর্শক তাঁরা কোনওদিনই থিয়েটার থেকে সরে আসবেন না। দর্শক সংখ্যাটা বাড়তে পারে কিন্তু কমবে না। এছাড়াও আমার মনে হয়, থিয়েটারই একজন অভিনেতার অভিনয় করার দক্ষতাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। তাই থিয়েটারের গুরুত্ব এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে