রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।

কোচবিহারের মহারানি সুনীতি দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের গুণগ্রাহী। পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রমের এক মাধুর্যময় বন্ধন ছিল। রবীন্দ্রনাথকে বারবার তিনি প্রাণিত করেছেন। কবি নতুন গল্প লিখে মহারানিকে কতবার শুনিয়েছেন। সুনীতি দেবীর নিজেও লিখতেন। শুধু রাজকার্য ও সাহিত্য রচনা নয়, নারীশিক্ষা বিস্তারেও মহারানি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। মহারানির স্মৃতি বিজড়িত সুনীতি একাডেমি এখন রাজ্য সরকার-দ্বারা পরিচালিত রাজ্যের উল্লেখযোগ্য বিদ্যালয়। প্রতিবছরই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আশাপ্রদ রেজাল্ট হয়ে থাকে। ২০২২ সালে রাজ্যে সপ্তম হয়েছিল এই স্কুলের ছাত্রী পূর্বালী পাল।
মহারানির স্মৃতি বিজড়িত বিদ্যালয়টি নতুন প্রজন্মের মধ্যে পাঠাভ্যাস বাড়াতে চায়, তাদের আরও বেশি করে বইমুখী করে তুলতে চায়। সেই লক্ষ্যে তাঁরা ছোটদের বইমেলার আয়োজন করেছেন, জানালেন প্রধান শিক্ষিকা মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস। ছাব্বিশে এপ্রিল সাড়ম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে ছ’ দিনের এই বইমেলার।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬০: রাতদুপুরে বিপন্নকে বাঁচাতে হাটখোলার পাট আড়তের টাকা এসেছিল জোড়াসাঁকোয়

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৫২: প্রাকৃতিক উপায়ে মাছের ফলন বাড়াতে পুকুরে উদ্ভিদকণা ও প্রাণীকণার ভারসাম্য ঠিক রাখা জরুরি

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৬: রতনপুর মহামায়া দর্শন

বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ: অজীর্ণ রোগে ঘরে বসেই আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে প্রতিকার সম্ভব

কলকাতা থেকে তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশকরা নজর কাড়ার মতো সব ছোটদের বই নিয়ে হাজির হয়েছেন এই মেলায়। পুরোনো দিনের ছোটদের সাহিত্যের পাশাপাশি একালের স্মরণীয় গল্প-উপন্যাসও পাওয়া যাচ্ছে। বইমেলায় এসে বিস্মিত হয়েছেন এই প্রতিবেদন, এখনও ছোটদের কথা ভেবে কত সুন্দর সুন্দর বই বাংলা ভাষায় লেখা হচ্ছে, ছাপা হচ্ছে। ছোটদের বই বিক্রি না হলে প্রকাশকদের মধ্যে এমন তৎপরতা দেখা যেত না।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-২: এখানে দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, বাণিজ্যনীতি এবং বৈদেশিক নীতির চর্চা করা হয়েছে

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১১: নাথানিয়্যাল গোবিন্দ সোরেনের গল্প

দশভুজা: আমি বনফুল গো: তিনিই ছিলেন ভারতীয় ছবির প্রথম সিঙ্গিং সুপারস্টার/১

সুনীতি একাডেমি আয়োজিত এই ছোটদের বইমেলার উদ্বোধন-অনুষ্ঠানে জেলাশাসক-সহ স্থানীয় প্রশাসনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, প্রতিবেশী স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন। বইমেলার উদ্বোধন করেছেন ছোটদের বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট কবি ও সম্পাদক অমিতকুমার দে।

মহারানি সুনীতি দেবী।

প্রথম দিনই সন্ধ্যায় মুক্তমঞ্চে পরিবেশিত আবৃত্তি ও সংগীত শুনতে শুনতে অনেকেই বই দেখেছেন, বই কিনেছেন, তা এই প্রতিবেদকের নজরে পড়েছে। মুক্তমঞ্চে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গীত পরিবেশন সকলকে মুগ্ধ করে।‌
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩২: কি ‘উপহার’ সাজিয়ে দেব

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৮: সলিল চৌধুরীর সুরারোপিত গান খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেন পঞ্চম

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৭: গরমে পান্তা ভাত কি সত্যিই শরীর ঠান্ডা করে?

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১৭: অর্থনীতির প্রান্তিকতায় নারী এবং তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ

শুধু এই স্কুলের ছাত্রীরা নয়, অন্যান্য স্কুল থেকেও দলে দলে ছাত্রছাত্রীরা মেলায় এসেছে। ছোটরা বই পড়ে না, একথাটি পুরোপুরি যে সত্যি নয়, তা উদ্বোধনের দিনই মনে হয়েছে। বাকি দিনগুলোতে ছোটদের ঢল নামবে ছোটদের বই বেলায়, বড়রাও আসবেন, স্কুলের একাধিক শিক্ষিকার মুখে সেই আশার কথাই শোনা গেল।

বইমেলায় পড়ুয়ারা।

শুধু বইমেলা দেখতে, বই কিনতে নয়, ছাত্রীরা যে সব সুন্দর সুন্দর মডেল তৈরি করেছে, সেগুলো দেখতেও যে জনসমাগম হবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। সুনীতি একাডেমির প্রধান শিক্ষিকা মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস আশাবাদী, সেই আশার সুর তাঁর কণ্ঠে শোনা গেল। এত বড় আয়োজনে বহু মানুষের সক্রিয় সহযোগিতা রয়েছে। রয়েছে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষিকাদের সক্রিয় সহযোগিতা। প্রধান শিক্ষিকা সেই সহযোগিতার কথা বারবার বলছিলেন। প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীদের রকমারি অনুষ্ঠান রয়েছে। মুক্তমঞ্চেও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকছে।

Skip to content