মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

তীব্র দাবদাহের পর বর্ষার প্রথম ছোঁয়ায় সদ্যস্নাত সবুজ প্রকৃতির মতো আমাদের মনও স্নিগ্ধ সবুজ হয়ে ওঠে। কিন্তু মুশকিল হল এই বর্ষাকালে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীও মহানন্দে বংশবিস্তার করায় বেড়ে যায় টাইফয়েড, জ্বর-জারি, সর্দি, কাশি, জন্ডিস, ডেঙ্গু, ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রির মতো অসুখ-বিসুখ। বর্ষাকালের সুস্থ, সতেজ থাকতে হলে শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রত্যেকেরই সঠিক খাদ্যবিধি মেনে চলা উচিত। এই সময় গুরুত্ব দিতে হবে রোগ প্রতিরোধের ওপর।
 

বর্ষাকালির সুস্থ থাকতে কী কী খাবেন?

 

হট ড্রিংকস

এ সময় বৃষ্টিতে ভিজলে বাড়ি ফিরে এসে গরম গরম লেবু চা, আদা-তুলসী পাতা মধু-সহ চা গ্রিন টি, কালো কফি ইত্যাদি পান করলে সর্দি, কাশি, ফ্লু, গলা ব্যথা বা অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কা কিছুটা এড়ানো যায়।

 

জল

শিশু ও অসুস্থ মানুষজনকে জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে খাওয়াতে হবে। রাস্তার ধারের কাঁটা ফলের রস, আখের রস, রঙিন পানীয়, শরবত ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
 

তেতো জাতীয় আনাচপাতি

বর্ষাকালির ডায়েটে উচ্ছে, করলা, নিমপাতা ইত্যাদি তেতো জাতীয় সবজি নিয়মিত খাওয়া গেলে হজম ভালো হবে। ফলে ডায়রিয়া, কনস্টিপেশন বা পেটে রোগের আশঙ্কা কম থাকবে।

আরও পড়ুন:

ডায়েট ফটাফট: রোজ গুচ্ছ গুচ্ছ চুল পড়ছে? নিয়মিত যে খাবারগুলি খেলে কমবে সমস্যা

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-৩১: মানুষ, যৌনতা এবং দেবোত্তমদের রূপকথা

 

ভিটামিন-সি যুক্ত ফল ও সব্জি

সর্দি, কাশি, জ্বর-জারি, ফ্লু ইত্যাদি থেকে মুক্ত হতে দেহের সামগ্রীক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ভিটামিন-সি যুক্ত বিভিন্ন ধরনের ফল ও সব্জি। এই সময়ে ডায়েটে পাতিলেবু, বাতাবি লেবু, আনারস, আমলকি, কাঁচালঙ্কা ও বিভিন্ন তাজা আনাচ পাতি অবশ্যই রাখা উচিত।
 

অন্যান্য ফল

শশা, পেয়ার, আনারস, তরমুজ, আম, আপেল, বেদানা, জাম, জারুল ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা দেহের অনাক্রম্যতা বাড়ায়। অর্থাৎ রোগের প্রতিরোধে সাহায্য করে। অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ফল যেমন মোক্ষম হাতিয়ার, তেমনিই অনেক রোগের বদ্ধ হিসেবে ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫: চন্দ্রমণির বধূবরণ

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-২২: পঞ্চমের সুরে কিশোর-আশার গাওয়া ‘জীবন কে হার মোড় পে’ গানটির কথা মনে পড়ে?

 

সবুজ শাকপাতা

আইরন, ভিটামিন-সি, ফলিক অ্যাসিড, ডায়েটরি ফাইবার, কপার ও বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সবুজ শাকপাতা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে বর্ষার মরশুমে সর্দি, কাশি, জ্বর-জারি, পেটের গোলমালের মতো সমস্যা এড়ানো যায়।

তবে বর্ষাকালে শাকপাতা খুব ভালোভাবে বেছে, ধুয়ে দরকারে এক ঘণ্টা লবণ জলে ভিজিয়ে রেখে তারপর রান্না করা উচিত। কাদামাটিযুক্ত সামান্য পচা বা পোকায় কাটা কখনওই খাবেন না।
 

মশলা পাতি

এই সময় রান্নায় বা কাঁচা অবস্থায় পেয়াজ, রসুন, লঙ্কা, হলুদ, জিরে, আদা, দারচিনি, গোলমরিচ ইত্যাদি বিভিন্ন মশালাপাতি ব্যবহার করুন। বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় মশলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নানান রকম অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা বারো মাসই বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাইয়ের মোকাবিলায় সাহায্য করে। বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মধ্যে হলুদের কুরকুমিন, পেঁয়াজের কোয়েরসেটিন, আদার জিনজেরল, দারচিনির সিনামিক অ্যাসিড, লঙ্কার ক্যাপসেইসিন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

এ সময় খিচুড়ি, ভেজিটেবল বা চিকেন সুপ, ডাল-সব্জি, মাছের ঝোল, ওটস-পরিজ ইত্যাদি বেশ উপকারী।

আরও পড়ুন:

কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-৪: রাজ পরিবারের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক ও ব্রাহ্মবাদ

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩১: বিড়াল ঘাঁটলেই কি ডিপথেরিয়া হতে পারে?

 

সাবধানতা

বাইরের খাবার বিশেষত ভাজাভুজি, ফাস্টফুড, মশলাদার খাবার, কাঁটা ফলের রস ও কাঁটা ফল, রঙিন পানিও এ সময় বাদ দিন।
এড়িয়ে চলুন ডেয়ারি মিল্ক, হালুইকরের মিষ্টি, পনির, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফার্মেন্টেড খাবার।
অতিরিক্ত ডাল জাতীয় খাবার ও কপি জাতীয় সবজি চলবে না।
বাসি, পচা ও বেশিদিন ধরে ফ্রিজে রাখা খাবার খাবেন না।
একসঙ্গে অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। অল্প অল্প করে বারে বারে খেলে হজম ভালো হয়।
ফ্রিজের ঠান্ডা পানীয় বর্জন করুন।
সর্বদা বিশুদ্ধ জল পান করতে হবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৪৯৭১

* ডায়েট ফটাফট (Healthy Diet tips): শম্পা চক্রবর্তী (Shampa Chakrabarty), ডায়েট কনসালটেন্ট।

Skip to content