রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত জানতে হবে। কারণ, ঠিক মতো বৃদ্ধি না হলে পিছিয়ে পড়বে শিশু। তাই সে বেড়ে উঠছে কি না জানতে হলে নিয়মিত শিশুর ওজন, উচ্চতা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া সর্বজন স্বীকৃত গ্রোথ চার্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। এতে বয়স অনুযায়ী ওজন, উচ্চতা, মাথার পরিধি গ্রাফের সাহায্যে বানানো থাকে। ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য আলাদা চার্ট আছে, যা দিয়ে সহজেই শিশুর বৃদ্ধি মাপা যায়।
 

একজন শিশুর সঠিক ওজন কত হতে পারে?

একজন শিশু পুষ্টি ও বৃদ্ধি সঠিক হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত জানা ভীষণ প্রয়োজন। কারণ, সঠিক পুষ্টি বৃদ্ধি না পেলে শিশুর বেড়ে ওঠা বেশ খানিকটা বিলম্বিত হয়। বয়স অনুযায়ী সঠিক ওজন। উচ্চতা, মাথার মাপ, ছাতির মাপ, মধ্য বাহুর পরিধি সঠিক থাকা দরকার। সাধারণত একটি শিশুর জন্মাবার পর তার ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে প্রথম তিন মাস। ৬ মাস বয়সে শিশুর ওজন জন্মের সময়ের ওজনের দ্বিগুণ হয়, এক বছরে ৩ গুণ, দুই বছরে ৪ গুণ, তিন বছরে ৫ গুণ, পাঁচ বছরে ৬ গুণ হয়।

যেহেতু শিশুর ওজন নির্ভর করে তার জন্মানোর সময় ওজনের ওপরে, তাই একই বয়সের সমস্ত শিশুর ওজন এক হতে পারে না। প্রত্যেকে আলাদা ওজন হয়। সঠিক পুষ্টি ও যত্ন পেলে একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরে প্রায় সমস্ত শিশুদের ওজন একই রকম হয়ে যায়।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: পুজোর আগে উজ্জ্বল ত্বক ও ঝলমলে চুল চাই? ভরসা রাখতে পারেন এই সব ডিটক্স পানীয়তে

রিভিউ: মহাকাশ বিদ্ধ করা রকেটের মতোই শক্তিশালী মাধবনের ‘রকেট্রি: দ্য নাম্বি এফেক্ট’

 

শিশুর পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে কেন সমস্যা দেখা যায়?

শিশুর ওজন ও উচ্চতা নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যদি পুষ্টি ও বৃদ্ধি সঠিক না হয় তাহলে বুঝতে হবে উপযুক্ত পুষ্টি পাচ্ছে না শিশু। তখন দেখতে হবে সে ঘনঘন অসুস্থ হচ্ছে কিনা, প্রয়োজন মতো ক্যালোরি প্রোটিন ফ্যাট সমৃদ্ধ খাদ্য খাচ্ছে কিনা, প্রয়োজন ভিটামিন এ পাচ্ছে কি না, কৃমিতে আক্রান্ত হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়ে।

আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১৭: অ্যাঁ, বলো কী নন্দলাল…!

কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-৮: পার্ক, ইট, এঞ্জয়

 

খাদ্য তালিকায় কী কী রাখা যেতে পারে?

 

ডিম

দিন প্রোটিনের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে ডিম অবশ্যই রাখতে হবে।
 

দুধ

দুধ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ডি এর খুব ভালো উৎস। সেই কারণে হাড় থেকে দাঁত মজবুত করতে দুধের কোনও বিকল্প নেই। দুধের পাশাপাশি দুগ্ধজাত দ্রব্য যেমন বাড়িতে পাতার দই ছানা, পনির খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
 

সয়াবিন

সয়াবিন আপনার শিশুর হাড় এবং পেশি মজবুত করে তোলে। এর সঙ্গে এটি উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে থাকে। সয়াবিন সব্জির মতো করে রান্না করে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারবেন।
 

মুরগির মাংস

মাংস খেতে প্রায় প্রত্যেকটি বাচ্চাই ভালোবাসে। মাংসে থাকা প্রোটিন শিশুর মাসল ডেভেলপমেন্টে ভীষণভাবে সাহায্য করে। তবে প্রতিদিন খাদ্য তালিকা মাংস রাখা উচিত নয়। কারণ তা কোষ্ঠকাঠিন্যের একটা কারণ হতে পারে। তাই সপ্তাহে দু’দিন থেকে তিনদিন খাদ্য তালিকায় মাংস রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪০: ব্রণ হয়েছে? তার মানেই কি লিভার খারাপ?

অমর শিল্পী তুমি, অমর শিল্পী তুমি

 

তেল-ঘি

বাড়ন্ত শিশুদের শক্তির অতিরিক্ত প্রয়োজন হয়, আর ঠিক সেই কারণেই খাদ্য তালিকায় সামান্য পরিমাণে ঘি বা বাটার রাখা যেতে পারে।
 

বাদাম

বাদাম ভিটামিন-ই এর খুব ভালো উৎস। আর এই ভিটামিন-ই ব্রেন ডেভেলপমেন্টের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। যেহেতু ছোট শিশুরা বাদাম চিবিয়ে খেতে পারে না। তাই সমস্ত রকমের বাদাম গুঁড়ো করে তাদের খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে।
 

ফল

ফল যে প্রত্যেকের জন্য কতটা উপকারী কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা আমাদের আলাদা করে বলে দিতে হবে না। ফলে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন খনিজ লবণ উপস্থিত থাকে যা বাড়ন্ত শিশুদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মূলত সিজনের ফল খাদালিকায় রাখতে হবে।

তবে মনে রাখা প্রয়োজন একজন শিশুর পাকস্থলী একজন বড়দের পাকস্থলীর থেকে আকারে অনেক ছোট। তাই খাদ্যের পরিমাণের দিকে মাথা না খাটিয়ে খাদ্যের পুষ্টির দিকে মাথা খাটানোটা প্রয়োজনীয়। শিশুকে পরিমাণে কম করে খাওয়ান কিন্তু পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান তাহলেই শিশুর পুষ্টি বৃদ্ধি যথেষ্ট পরিমাণে হবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content