শুক্রবার ৫ জুলাই, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

কিডনি, আমাদের শরীরের একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই অঙ্গ মূলত আমাদের শরীর থেকে যাবতীয় টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এহেন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে সমস্যা দেখা দিলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপরেও তার প্রভাব সরাসরিভাবে পড়ে। তাই কিডনিকে ভালো রাখা অত্যন্ত জরুরি।

শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ এখনও খুবই কম আছে। তাই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলে মূলত খাবার-দাবার নিয়ন্ত্রণ করে কিডনিকে বিশ্রাম দিতে হবে। না হলে কিডনি খারাপ হতে শুরু করবে। পরবর্তী ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে তা ডায়ালিসিসের পর্যায়ে পৌঁছবে।

রোগীর ওজন, বয়স শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির ওপর বিবেচনা করে রোগীর ডায়েটচার্ট প্রস্তুত করা হয়। এই খাদ্যতালিকায় কখনওই একই ধরনের ডায়েট দেওয়া হয় না। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে ডায়েট ভিন্ন। ঠিকঠাক ডায়েট মেনে চলেন কিডনি সমস্যা নিয়েও দীর্ঘদিন পর্যন্ত সুস্থ থাকা যায়।

রক্তচাপের বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, ইউরিন ইনফেকশন, ভেজাল খাবার খাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে কিডনি রোগের সমস্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। তাই কিডনির অসুস্থতায় চিকিৎসার একটি অন্যতম অংশ হল ডায়েট।
 

রোজকার খাদ্যাভ্যাসে নজর দিতে হবে যে বিষয়গুলিতে

 

ক্যালোরি হিসেব করে খেতে হবে

কিডনি রোগীদের অন্যান্য রোগীদের তুলনা ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে। প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। যদি কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তবে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। ক্যালোরের উৎস হিসেবে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য খেতে হবে। সেক্ষেত্রে রুটি বা ভাত, সুজি, খই ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। রিফাইন্ড জাতীয় কোনও খাবার না খাওয়াই ভালো।
 

প্রোটিনের ক্ষেত্রে সতর্ক হন

যেহেতু এই সময় ‘ক্রিয়েটিনিন’, ‘ইউরিয়া’ ‘ইউরিক অ্যাসিড’, ‘এলবুমিন’ ইত্যাদির মাত্রা শরীরে বেড়ে যায়, তাই প্রোটিন নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত কিডনি রোগীদের ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে বলা হয়। এ সময় প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ করাই ভালো। যেমন ডিমের সাদা অংশ, মাছ, দুধ, দুই ইত্যাদি।
 

সোডিয়াম বুঝেশুনে

কিডনি রোগীদের সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একজন ব্যক্তি যাঁর কিডনি সমস্যা আছে তিনি সারাদিনের ২ থেকে ৫ গ্রাম লবণ গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কাঁচা নুন একদমই খাওয়া চলে না। রান্নায় খুব সামান পরিমাণে নুন দিতে হবে।
 

প্রয়োজন অনুযায়ী পটাশিয়াম

প্রতিদিন আপনার কতটা পরিমাণ পটাশিয়াম প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করবে আপনি সারাদিনে কতটা ফল বা সবজি খাবেন। উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত সবজি যেমন ফুলকপি, টম্যাটো, মটরশুঁটি ইত্যাদি খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে আপেল, নাশপাতি, পেয়ারা, পেঁপে প্রভৃতি ফল রোজকার ডায়েট চার্টে রাখতে পারেন।
 

নিয়ম মেনে জলপান

সাধারণত প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ব্যক্তির প্রয়োজন অনুযায়ী এক থেকে দেড় লিটার পর্যন্ত জল খেতে বলা হয়। দুধ, চা, অন্যান্য পানীয় সবমিলিয়ে হিসাব করা হয়।

 

১০টি অনিয়ম, যা কিডনি নষ্টের জন্য দায়ি

১. প্রস্রাব আটকে রাখা
২. পর্যাপ্ত জল না খাওয়া
৩. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
৪. যেকোনও সংক্রমণের দ্রুত চিকিৎসা না করা
৫. মাংস বেশি খাওয়া
৬. প্রয়োজনের তুলনায় কম খাওয়া
৭. যেমন ইচ্ছা ব্যথার ওষুধ সেবন
৮. ওষুধ অনিয়মে খাওয়া
৯. অতিরিক্ত মদ খাওয়া
১০. পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন? কী ভাবে নেবেন যত্ন? হাড় মজবুত রাখতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় এই সব বদল আনুন

ডায়েট ফটাফট: তরতাজা থাকতে নিয়মিত প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খান? বড়সড় বিপদ এড়াতে এই সব নিয়ম মেনে চলছেন তো?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৬: সংসার সুখের হয় ‘চাঁপাডাঙার বৌ’-র গুণে

 

কিডনির সমস্যায় যে সব সবজি ও ফল খাবেন

চিচিঙ্গা
লাউ
করলা
পেঁপে
শশা
সজনে ডাঁটা
শাক
লালশাক
কচুশাক
ঝিঙে
আপেল
পেয়ারা
পাকা পেঁপে
নাসপাতি ইত্যাদি।

আরও পড়ুন:

হোমিওপ্যাথি: আপনার কি ঋতুবন্ধ আসন্ন? সমস্যা এড়াতে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি

ছোটদের যত্নে: শিশুর হঠাৎ করে তরকা জনিত জ্বর হলে কী করবেন? জেনে নিন শিশু বিশেষজ্ঞের জরুরি পরামর্শ

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৪: কবির দরজা সাধারণজনের জন্য সারাক্ষণই খোলা থাকত

 

যেসব সবজি ও ফল খাবেন না

ফুলকপি
বাঁধাকপি
পালংশাক
কচু
মুলো
পুঁইশাক
ঢেঁড়স
গাজর
কাঁঠালের বিচি
শিমের বিচি
মুলোশাক
ডাব
কলা
কামরাঙা
আঙুর ইত্যাদি।

আরও পড়ুন:

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২৭: পিতৃসত্য রক্ষা, নাকি পিতার অনুনয়ে রাজ্যভার গ্রহণ?

বাইরে দূরে: ব্যস্ত শহুরে জীবন থেকে সাময়িক মুক্তির আদর্শ ঠিকানা রম্ভা

পর্দার আড়ালে, পর্ব-২২: রাইচরণ চরিত্রটা আমি করতে চাই, আমাকে এই চরিত্রটা করার সুযোগ দিন: উত্তমকুমার

 

যে সব খাবার নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খেতে হবে

প্রাণিজ প্রোটিন, যেমন—
মাছ
মাংস
দুধ
ডিম ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাতে হবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট


Skip to content