মঙ্গলবার ৯ জুলাই, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

আমলকি একটা খুবই ছোট্ট ফল। কিন্তু এর ঔষধি গুণ প্রচুর। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, যা অন্যান্য ফলে তুলনায় পরিমাণে অনেক বেশি। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে আমলকির জুড়িমেলা ভার। দেশীয় ফল হিসেবে আমলকি সবার কাছেই খুবই পরিচিত। এটি দামী হলেও সহজলভ্য। আবার এর উপকারিতাও অনেক।
 

আমলকির পুষ্টিগুণ

আমলকির অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। এই গাছের ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা যায়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন-সি থাকে, যা পেয়ারার চেয়ে ৩ গুণ ও কাগজি লেবুর চেয়ে ১০ গুণ, কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি। একজন পুর্ণ বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি দরকার। কেউ যদি দিনে দুটো আমলকি খান তাহলে সে ওই পরিমাণ ভিটামিন সি পেতে পারেন। আমলকি খেলে মুখে রুচিও বাড়ে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে কোলাজেন, কী খেলে শরীরে এর মজুত বাড়বে

দশভুজা, শক্তিরূপেন সংস্থিতা, পর্ব-২: একলা চলো রে…

 

আমলকির উপকারিতা

 

চুলের যত্নে ও খুশকির সমস্যায়

চুলের গোড়া মজবুত করতে, খুশকি দূর করতে, কম বয়সের চুল পাকা রোধ করতে, এমনকি চুলের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য আমলকি গুরুত্বপূর্ণ। এক কথায় বলা যায়, যে কোনও ত্বকের সমস্যায় আমলকি উপকারী। প্রতিদিন সকালে আমলকির রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যে কোনও রকমের ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
 

ক্ষুধামন্দ দূর করতে

আমলকি না খাওয়ার ইচ্ছেকে কমিয়ে দেয়। প্রতিবার খাওয়ার আগে সামান্য আমলকিগুড়ো মধু দিয়ে খেলে ক্ষুধামন্দ সহজেই দূর হবে।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, অসমের আলো-অন্ধকার, পর্ব-২: ইতিহাসে অসম

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৫০: কুষ্টি বিচার, না কি রক্ত বিচার! জরুরি কোনটা?

 

দেহের চর্বি কমাতে

ওজন কমাতে আমলকি সাহায্য করে। নিয়মিত আমলকি খেলে শরীরে প্রোটিন বৃদ্ধি পায়। ফ্যাট সহজেই কমে যায়। এটি হজম শক্তি যেমন বাড়ায় তেমনি প্রতিদিন আমলকি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
 

হাড় মজবুত করতে

ভিটামিন-সি এর পাশাপাশি আমলকি ক্যালশিয়ামের ভরপুর। তাই হাড় মজবুত করতেও সাহায্য করে।
 

কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস সমস্যায়

আমলকি শরীর থেকে টক্সিন সহজেই বার করে দেয়। খাবার হজম করতেও সাহায্য করে। আমলকিতে উপস্থিত ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পাইলসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
 

গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা দূর করতে

দীর্ঘমেয়াদী সর্দি-কাশির নিরাময়ে আমলকির রস উপকার। সামান্য আমলকির রস মধু দিয়ে দিনে তিন চারবার করে খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৫: সুর হারানো হারানো সুর

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৪: শ্যামপুকুরে ঠাকুর

 

রক্তের সুগার কমাতে

বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে, আমলকিতে থাকা পলিফাইনাল রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।
 

দাঁতের মাড়ির রোগ স্কার্ভি দূরীকরণে

স্কার্ভি নামক দাঁতের রোগটি নিরাময়ের জন্য ভিটামিন-সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক কথায় বলা যায়, ভিটামিন-সি এর অভাবে স্কার্ভি হয়, যা সাধারণত দাঁত ও মাড়ির রোগ। মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ, মাড়িতে ঘা ইত্যাদি স্কার্ভি রোগের লক্ষণ। আমলকিতে ভিটামিন-সি থাকায় তা যে কোনওরকমের দাঁতের সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
 

কী ভাবে খাবেন?

আমলকির রস অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত মাত্রায় আমলকির রস অ্যাসিডের সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রতিদিন ১০ মিলিগ্রামের বেশি আমলকির রস খাওয়া উচিত নয়। আবার আমলকি কেটে রোধে শুকনো করে খেলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content