বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

নারীদের জীবনে এক প্রকার উপহার হল পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব। এটা প্রত্যেক নারীর জীবনে এমন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা নারীকে গর্ভধারণের উপযুক্ত করে তোলে। প্রত্যেক নারীর জীবনে পিরিয়ডের এই কয়েকটি দিন শারীরিক ও মানসিক কিছু সমস্যা দেখা যায়।

পিরিয়ডের দিনগুলিতে রক্তক্ষরণের জন্য নারী শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। এ সময় যন্ত্রণা, মুড সুইং, খিদে না পাওয়া ইত্যাদি খুব সাধারণ সমস্যা। তলপেটে অতিরিক্ত ব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, মাথা ঘোরা, বমি-বমি ভাব, মুখে অরুচি, অস্বস্তি বোধ, অ্যাসিডিটি ইত্যাদি নানান সমস্যা দেখা যায়।

এইসময় শরীরে বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। বিশ্রাম ও জল খাওয়ার পাশাপাশি দুর্বলতা কাটাতে ডায়েটের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এবার জেনে নেওয়া যাক ডায়েটে কী কী খাবার রাখা আবশ্যক।
 

প্রোটিনযুক্ত খাবার

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কোষের গঠনে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ডিম, মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি প্রোটিনের ভালো উৎস। তাই পিরিয়ডের সময় এই সব খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
 

ফলমূল

ভিটামিন-সি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পিরিয়ডের সময় এর উপকারিতা আরও কিছুটা বেড়ে যায়। শরীরে আয়রনের শোষণ বাড়াতে এবং তার কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে ভিটামিন-সি এর প্রয়োজন হয়। ভিটামিন সি-এর উৎকৃষ্ট উৎস হল আমলকি, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, আনারস, কামরাঙা, লেবু ইত্যাদি।

 

ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম

ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম খনিজ লবণযুক্ত খাবার মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, বেশি টানের মতো লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভালো উৎস অ্যাভোকাডো, মিষ্টি আলু, বিনস, মিষ্টি কুমড়োর বীজ ইত্যাদি। কলাও পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস, যা পিরিয়ডের সময় খুবই উপকারী।
 

কলা খুব উপকারী

পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস কলা। কলা ভিটামিন-বি৬ এরও খুব ভালো উৎস। পিরিয়ডের সময় কলা খুব জরুরি। কলা বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে। পেট পরিষ্কার রাখে। পিরিয়ডের সময় মুড তালিকায় কলা রাখা জরুরি।
 

ভিটামিন-ই

ভিটামিন-ই পিরিয়ডের চলাকালীন পেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কুমড়োর বীজ, গমের বীজ, সূর্যমুখী বীজ, পেস্তা, কাজুবাদাম, কাঠ বাদাম, চিনা বাদাম ইত্যাদিতে ভিটামিন-ই বেশি মাত্রায় পাওয়া যায়। তাই খাদ্য তালিকায় এই ধরনের খাবার রাখলে পিরিয়ড জনিত সমস্যায় বিশেষভাবে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: বিয়ে আর বেশি দেরি নেই? স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল ও ঝলমলে ত্বকের জন্য এই সহজ উপায়গুলি মেনে চলছেন তো?

ঋতুস্রাবের ব্যথায় জেরবার? রইল ঘরোয়া টোটকা

ফিজিওথেরাপি: কেউ ঠান্ডায় জব্দ, কেউ গরমে, কোন ব্যথায় কোন ধরনের সেঁক কাজে লাগে?

 

আয়রন

পিরিয়ডের সময় শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য মাছ, মাংস, ডিম, ফুলকপি পাতা, ছোলা, শাক, ধনেপাতা, তরমুজ, কালোজাম, খেজুর, পাকাতেতুল, আমড়া, কিসমিস ইত্যাদি খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অতিরিক্ত পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা যায়। তাই খাবারদাবার নিয়ে সতর্ক থাকা ভালো।
 

ফাইবারযুক্ত খাবার

ফাইবার দেহের হজম শক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে ফাইবার কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও খনিজ লবণের উৎকৃষ্ট উৎস। সবুজ শাকসবজি ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস যা হজমে সাহায্য করে। পিরিয়ডের সময় সুস্থ থাকার জন্য ফাইবার অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাবারে সবুজ শাকসবজি বা ফাইবার যুক্ত খাবার রাখা দরকার।

আরও পড়ুন:

মনের আয়না: নেতিবাচক ভাবনা সরিয়ে সঙ্গীকে বোঝার চেষ্টা করুন, ফিরবে হৃত যৌনজীবন

যোগা-প্রাণায়াম: ডায়াবেটিসে ভুগছেন? শরীরে বাড়ছে মেদ? সূর্যপ্রণামেই মিলতে পারে মুক্তি

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৩: আশা-যাওয়ার পথের ধারে ‘নবীন যাত্রা’ [১১/০৯/১৯৫৩]

 

সবুজ শাকসবজি

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখা আবশ্যক। তার মধ্যে পালংশাক জরুরি সবজি উল্লেখযোগ্য। স্যালারি শাকও খাওয়া যেতে পারে। শাক আয়রন, ভিটামিন-বি এবং ফাইবারে অন্যতম উৎস, যা হজমে সাহায্য করে।
 

পাতে থাকুক দই

দই হজমে সাহায্য করে। তাছাড়া যাদের দুধে অ্যালার্জি হয়, তাদের ক্ষেত্রে দই খুব উপকারী। দই শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে।
 

ক্যালশিয়াম

পিরিয়ডের সময় ক্যালশিয়াম জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। দুধ, দুধ জাতীয় খাবার, পনির, টোফু, সোয়া মিল্ক, ছোট কাঁটাযুক্ত মাছ ক্যালশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ক্যালশিয়াম পিরিয়ডের ব্যথা কমায়।

আরও পড়ুন:

বিনোদন: যে গান যায়নি ভোলা— প্রাক জন্মদিনে তাঁর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য…/১

ফল কালারের রূপ-মাধুরী, পর্ব-৭: রঙের খেলা আর উইসকনসিনের আঁকাবাঁকা ফাঁকা রাস্তা—জীবনীশক্তিকে আরও উসকে দেয়

খাই খাই: রাতে নিরামিষ পদে স্বাদ বদল চাই? বানিয়ে ফেলুন তেল পটল

 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

সামুদ্রিক মাছ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস। পিরিয়ড চলাকালীন যে ব্যথা হয় এবং শরীরে ক্ষয় রোধে মেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।
 

সামুদ্রিক মাছে

সামুদ্রিক মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩, ভিটামিন, মিনারেল, ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি পাওয়া যায়। এই সব উপাদান পিরিয়ড চলাকালীন শরীরের ক্ষয় পূরণ করে এবং ব্যথা কমাতেও ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন:

দশভুজা: দু’শো বছর আগে হলে তিনি ইঞ্জিনিয়ারের বদলে সতী হতেন

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২৫: বনবাসের সঙ্গী সীতা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪১: ঠাকুরবাড়িতে এসে সাহেব খেতেন ভাজা চিঁড়ের সঙ্গে কড়াইশুঁটি

 

চকোলেট

চকলেটে আন্টি-অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকায় এটি খেলে পিরিয়ড চলাকালীন দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। পিরিয়ডের সময় ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দেখা যায়। আর ডার্ক চকলেটের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম।
 

পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান

পিরিয়ডের সময় রক্তপাতের কারণে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়। টাই জলের এই অভাব পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে হবে। জলের সঙ্গে এই সময় হালকা গরম জাতীয় পানীয় খেলে বেশি আরাম বোধ হয়। তাই এ সময় চা, কফি বা গরম জলও খাওয়া যেতে পারে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২


Skip to content