বুধবার ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

বর্ষাকালে সর্দি-কাশি, জ্বর, পেটখারাপ ছাড়াও আর যে অসুখের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তা হল ‘কনজাংটিভাইটিস’। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস এই দুটি কারণেই চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এখন চারপাশের বহু মানুষই এই অসুখে ভুগছেন। এর প্রাথমিক লক্ষণ হল চোখ লাল হয়ে যাওয়া। এ ছাড়াও যন্ত্রণা, চোখে অস্বস্তি, চোখ থেকে অনবরত জল পড়ার মতো সমস্যা দেয়। বড়দের তো হয়েই, এই রোগের হাত থেকে নিস্তার নেই শিশুদেরও। মুশকিল হল ছোঁয়াচে হওয়ার কারণে খুব দ্রুত এটি ছড়িয়ে পড়ে।

আমাদের চোখের সাদা অংশে একটা পাতলা পর্দা থাকে, যাকে কনজাংটিভা বলা হয়। সংক্রমণের কারণে এই কনজাংটিভা ফুলে যায়। ফলস্বরূপ চোখলাল হয়ে যায়। চোখ চুলকোয়, পিচুটি হয়, জল বেরোয় ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। আর ঠিক সেই কারণের জন্যই চোখের সংক্রমণ রুখতে নিত্যদিন বেশ কিছু খাবার আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি। কী কী খাবার পাতে রাখা যেতে পারে?
 

এই সব খাবার পাতে রাখতে পারেন

 

সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের খুব ভালো উৎস। এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনবদ্য। এই যৌগটি চোখের ‘মেইবোনিয়ান’ গ্রন্থির তৈলাক্ত পদার্থের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে এই ধরনের মাছের তেল চোখের জন্য খুবই উপকারী।
 

ডিম

ভিটামিন-এ এর পাশাপাশি ডিমে পাওয়া যায় জিঙ্ক ও লুটিন। জিঙ্ক চোখের সাদা অংশের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রোজ পাতে ডিমের কুসুম চোখ ভালো রাখে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: থাইরয়েডের চোখরাঙানি? সুস্থ থাকতে কোন খাবার পাতে রাখবেন, আর কোনগুলি এড়িয়ে চলবেন?

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩৭: মহানায়কের সেই ভুবন ভুলানো হাসি আর সস্নেহ চাহনির কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে

 

লেবু

চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল, ভিটামিন-সি। এর প্রধান উৎস লেবু জাতীয় ফল। নিয়মিত মুসাম্বি লেবু বা পাতিলেবু খেলে ভিটামিন সি এর চাহিদা সহজেই পূরণ হয়।
 

দুধ জাতীয় খাবার

দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় দ্রব্য যেমন দই, ছানা, পনির এগুলো ভিটামিন-এ এবং জিঙ্কের খুব ভালো উৎস। যা চোখের যত্নের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৯: ডায়াবেটিসে কি আলু একদম বন্ধ?

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৮: ঘরবাড়ি ভালা নাই আমার

 

গাজর

গাজর ভিটামিন-এ অর্থাৎ ক্যারোটিনের ভীষণ ভালো উৎস। নিয়মিত গাজর খাদ্য তালিকায় রাখলে চোখের যত্ন যেমন নেওয়া হয়, তেমনি চোখের সংক্রমণের সম্ভাবনাও অনেকটা কমে যায়। এমনকি মিষ্টি আলু, পালং শাক, কুমড়ো— খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
 

ত্রিফলা

তিন ফলের মিশ্রণ হল ত্রিফলা। আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা থাকে এতে। এই ত্রিফলা চোখকে সুস্থ রাখতে খুবই কার্যকরী।
 

বাদাম

বাদাম ভিটামিন-এ এর খুব ভালো উৎস। চোখের ছানি পড়া-সহ চোখের নানা অসুখ প্রতিরোধ করতে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম বীজও খাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩: আত্মারামে কুটো বাঁধা আছে

দশভুজা: আমি আর কখনওই ফিরে আসার প্রত্যাশা করি না…

 

এপ্রিকট, কিশমিশ

ড্রাইফ্রুটস এ পর্যাপ্ত পলিফেনলস থাকায় তা শরীর থেকে ফ্রি র্যা ডিকেলস দূর করে, চোখের মাসলের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
 

সবুজ শাকসব্জি

সবুজ শাকসব্জিতে আছে লুটিন ও জিয়াজেনথিন। এ দুটি হল ক্যারোটিনোয়েড। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের ‘অপটিক নার্ভ’কে ক্ষতির হাত থাকে রক্ষা করে। ব্রকোলি, বেল পেপার এবং কমলালেবুর মতো ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খেতে পারলে ভালো।

তবে মনে রাখা প্রয়োজন, চোখ আমাদের শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ। এটা নিয়ে অযথা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত নয়। তাই কনজাংটিভাইটিস এর সমস্যা যাতে না হয় ষে জন্য উপরোক্ত খাদ্যগুলো আমরা রোজ খাদ্য তালিকায় রাখতে পারলে ভালো। কিন্তু যদি সমস্যার দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে হবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content