রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

কৃমি একটি ক্ষতিকর পরজীবী। মানুষের দেহে ফিতা কৃমি, গোল কৃমি কিংবা বক্র কৃমির মতো বিভিন্ন ধরনের কৃমি দেখা যায়। তবে এদের মধ্যে যে কৃমি অন্ত্রে পাওয়া যায়, তার সম্পর্কেই সবচেয়ে বেশি অবগত মানুষ। অনেক সময় কৃমি আমাদের যকৃত বা অন্যকোনও অঙ্গেও আক্রমণ করতে পারে। অনেকটা কেঁচোর মতো দেখতে হয় কৃমিগুলোকে। রং হলদে। পরিণত অবস্থায় একটি কৃমি ৬ থেকে ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে!
 

কীভাবে বুঝবেন শিশুর পেটে কৃমি হয়েছে?

বাচ্চার খাবারের প্রতি রুচি কমে যায়।
খাওয়া-দাওয়া কমে যায়।
স্বাস্থ্য খারাপ হয়
ওজন বাড়ে না।
বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
এক কথায় বলা যায় শিশু অপুষ্টির শিকার হয়। কারণ সে যা খায়, তার এক-তৃতীয়াংশই খেয়ে ফেলে কৃমির দল।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: রোগমুক্ত শরীর চান? রোজ খান আমলকি

রিভিউ: চারজন সাহসী নারীর গল্প—ধক ধক

 

শরীরে কৃমি ঢোকে কীভাবে?

ঘরের কাজে নোংরাও অপরিশোধিত জলের ব্যবহার।
সব্জি-আনাজ, ফল-মূল ভালো করে না ধুয়ে খাওয়া।
বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট না থাকা।
খাবারের আগে বা টয়লেটের পরে নিয়মিত হাত না ধোয়া।
হাতের নখ বড় রাখা।
দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস।
নোংরা জায়গায়, মাঠে-ঘাটে খালি পায়ে হাঁটা-চলা।
সময় মতো কৃমিনাশক ওষুধ নেওয়ায় গাফিলতি।

আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৫০: কুষ্টি বিচার, না কি রক্ত বিচার! জরুরি কোনটা?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৬: ভয়ের না ‘অভয়ের বিয়ে’

 

কৃমি নির্মূল করতে ওদের পাতে রাখুন এই সব খাবার

 

রসুন

রসুন একটি কৃমিনাশক খাবার। কাঁচা রসুনে থাকে অ্যান্থেলমিন্টিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান, যা পেটের কৃমি মেরে ফেলতে সহায়তা করে। এক সপ্তাহ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দু’কোয়া রসুন খেলে কৃমির সমস্যা থেকে উপশম মিলতে পারে। আধ কাপ জলে দু’টি রসুনের কোয়া দিয়ে সিদ্ধ করে এক সপ্তাহ নিয়মিত খেলেও উপকার পাওয়া যায়।
 

মিষ্টি কুমড়োর দানা

মিষ্টি কুমড়োয় থাকা বিশেষ উপাদান অন্ত্রের কৃমি মেরে ফেলে। তিন কাপ জলে দুই টেবিল-চামচ মিষ্টি কুমড়োর দানার গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটতে দিন ৩০ মিনিট। ঠান্ডা হলে খুদেকে দিন।
 

নিম

নিমেও আছে অ্যান্টিপ্যারাসাইটিকাল উপাদান, অন্ত্রের কৃমি মারতে যার কোনও তুলনাই নেই। গরম দুধে নিমের গুঁড়ো আর মধু মিশিয়ে হপ্তায় দু’বার বাচ্চাকে দিতে পারেন। এক গ্লাস গরম জলে আধা চা-চামচ নিমের পেস্ট মিশিয়ে খালি পেটে খাইয়ে দিন ওকে। এক সপ্তাহ এই নিয়ম মানুন, কৃমি পালাতে বাধ্য।

আরও পড়ুন:

দশভুজা, শক্তিরূপেন সংস্থিতা, পর্ব-৩: মালতীর কথা…

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৫: উদ্যানবাটিতে সারদা মায়ের ঠাকুরের শুশ্রূষা

 

করলা

তেঁতো খাবার বলতে প্রথমেই মাথায় যে খাবারটা আসে, তাই হল করলা। কৃমি তাড়াতে এই করলাকে কিন্তু ভুললে চলবে না। এক কাপ করলার রস জল আর মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দু’দিন অন্তর বাচ্চাকে দিন।
 

কাঁচা হলুদ

কৃমির যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়ার আরও একটি পথ হল কাঁচা হলুদ। হলুদে উপস্থিত কৃমিনাশক উপাদান কৃমিগুলোকে অকেজো করে দেয় এবং ডিমগুলো নষ্ট করে ফেলে। তাই বাড়ির ছোট সদস্যকে হলুদ মেশানো দুধ বা জল দিতে পারেন।
 

কাঁচা পেঁপে

পেঁপের মধ্যে পরজীবী নাশক গুণ রয়েছে। আধ টেবিল চামচ কাঁচা পেঁপের রস আর কয়েক ফোঁটা মধু গরম জলে মিশিয়ে নিন। রোজ সকালে খালিপেটে বাচ্চাকে খাওয়ান।

তবে মনে রাখবেন সমস্যা যদি খুব বেড়ে যায়, তা হলে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ না খেলে বিপদ বাড়তে পারে। কাজেই যদি খাদ্যাভাসের মধ্যে দিয়ে কৃমি প্রতিরোধ করা সম্ভব না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content