শুক্রবার ৫ জুলাই, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

Quinoa—যার সঠিক উচ্চারণ হবে কিনোয়া। নাম শুনে একটু খটমটো বা অপরিচিত লাগলেও মোটেও নতুন নয়। প্রায় ৭ হাজার বছর আগে ইনকা সভ্যতায় কিনোয়ার ব্যবহারের কথা জানা গিয়েছে। বলা হতো ‘মাদার অব অল গ্রেনস’। যদিও কিনেয়া দানাশস্যের মতো খেতে হলেও ঠিক দানাশস্য নয়। বরং বীজ জাতীয় খাদ্য। বৈজ্ঞানিক নাম—চেনোপোডিয়াম কিনোয়া।
 

পুষ্টিগুণে ভরপুর

৯টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ উন্নত প্রোটিন, ডায়টরি ফাইবার, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য বি ভিটামিনস ছাড়াও ক্যামফেরল এবং কোয়ারসেটিন জাতীয় ফ্ল্যাভোনয়েডস-এর গুণে সমৃদ্ধ কিনোয়াকে ‘সুপার সিড’ হিসেবে গণ্য করা যায়।

মোটামুটি ১৮৫ গ্রাম রান্না করা কিনোয়া থেকে প্রায় ৮.১৪ গ্রাম প্রোটিন, ২২২ কিলোক্যালরি শক্তি, ৫.১৮ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার, ৩৯.৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৩.৫৫ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। কিনোয়াতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় দু’রকমের ফাইবার আছে এবং আছে কিছু পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও। কিনোয়া সাধারণত নন জিএমও, অর্গানিক্যালি প্রোন ফ্রি খাদ্য।

 

কিনোয়ার উপকারিতা

লো ক্যালোরির ডাইয়েটরি ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য হওয়ায় যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁরা নানাভাবে ডায়েটের অন্তর্ভুক্ত করুন কিনোয়াকে।

ডায়াবেটিকরাও কিনোয়া খেলে উপকৃত হবেন। কারণ কিনোয়া বি ভিটামিনস এবং ফাইবার সমৃদ্ধ লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাদ্য।

উচ্চ রক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য, হাই কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখ ইত্যাদি বিভিন্ন বড় বড় সমস্যায় সহজ সমাধান হতে পারে কিনোয়া। তবে এক্ষেত্রে কিনোয়ার পাশাপাশি উপযুক্ত ডায়েট ও জীবনধারণ পদ্ধতি মেনে চলা বাঞ্ছনীয়।

উদ্ভিজ্জ প্রোটিন সমৃদ্ধ কিনোয়া ফ্ল্যাভোনয়েডস গোত্রীয় কোয়ারসেটিন ও ক্যামফেরল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কিনোয়ার ক্যালশিয়াম, প্রোটিন ও ম্যাগনেশিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। অস্ট্রিওপোরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।

গর্ভবতী মায়েদেরকেও মাত্রা মতো দেওয়া যেতে পারে ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ কিনোয়া।

বিপাক ক্রিয়া ঠিক রেখে হজম সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে কিনোয়া।

আরও পড়ুন:

ডায়েট ফটাফট: সানস্ক্রিন মাখবেন তো বটেই, এবার খেয়েও দেখুন—সিঙ্গল ইনভেস্টমেন্টে ডবল প্রফিট!

জিম-ট্রিম: জিম করে ভুঁড়িকে বাই বাই করতে চান? তাহলে এই ব্যায়ামগুলি করুন

 

সাবধানতা

কিনোয়াতে স্যাপোনিন, অক্সালেট ও ফাইটেট জাতীয় অ্যান্টিনিউট্রিশনাল ফ্যাক্টর থাকে, যা অন্ত্র থেকে ক্যালশিয়াম, আয়রন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিয়েন্টস শোষণে বাধা দিতে পারে। তাই কিনোয়া রান্না আগে অন্তত আধঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রেখে তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ জল দিয়ে প্রেসারকুকারে সেদ্ধ করে নিলে এর ক্ষতিকর দিক এড়ানো যায়।

আরও পড়ুন:

পর্দার আড়ালে, পর্ব-২১: ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ শুটিংয়ে সিউড়ির বাঁশবনে দু’ দুটি বাঘ আনিয়েছিলেন সত্যজিৎ

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪: আপনি কি খেয়ে উঠেই শুয়ে পড়বেন? জানেন কী হচ্ছে এর ফলে

 

কীভাবে খাবেন কিনোয়া?

কিনোয়ার পোলাও, খিচুড়ি, স্যুপ, স্যালাড, প্যানকেক, উপমা, পরিজ, দোসা ইত্যাদি সবই অত্যন্ত পুষ্টিকর উপাদেয়।

ফুলকপি, গাজর, বিনস, মটরশুঁটি, পেঁয়াজকলি, ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ ইত্যাদি বিভিন্ন সব্জি সামান্য ‘কাউ ঘি’তে সাঁতলে নিয়ে সেদ্ধ করা কিনোয়া মিশিয়ে মাপ মতো লবণ, কাঁচালঙ্কা, গোলমরিচ, গরম মশলা বা অন্যান্য পছন্দসই মশলা মিশিয়ে তৈরি খাবার ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা টিফিন হিসেবে আদর্শ হতে পারে।

আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৩: বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই উইসকনসিনের সঙ্গে পার্থক্যটা টের পেলাম, মুহূর্তে ঠোঁট, গাল জমে যেতে লাগল

এক কফিতেই বাজিমাত! ওজন ঝরানো থেকে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ, কী ভাবে খাবেন?

আপেল, কলা, কমলালেবু, নাশপাতি, বেদানা, পেঁপে, বেরি, আঙুর ইত্যাদি বিভিন্ন পছন্দসই ফলের সঙ্গে সেদ্ধ করা কিনোয়া এবং টকদই মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন চমৎকার সুস্বাদু স্যালাড বা পরিজ।

যাঁরা আমিষ ভক্ত, তাঁরা কিনোয়া সেদ্ধ করে তার সঙ্গে সেদ্ধ করার টুনা, চিকেন বা ডিম মিশিয়ে পেয়াজ, আদা, ক্যাপসিকাম, স্প্রিং অনিয়ন এবং অন্যান্য মশলাপাতি-সহ বানিয়া বানিয়ে নিতে পারেন…কি নাম দিই বলুন তো?

ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে সেদ্ধ করা কিনোয়া কর্ণ, পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, গাজর, টম্যাটো, লেবুর রস ইত্যাদি-সহ বানিয়ে নিতে পারেন স্যুপ বা প্যাটিস, যা একই সঙ্গে সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ওয়েট ওয়াচার।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৪৯৭১
* ডায়েট ফটাফট (Healthy Diet tips): শম্পা চক্রবর্তী (Shampa Chakrabarty), ডায়েট কনসালটেন্ট।

Skip to content