শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

আপনার কি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে? বাবা-মা অথবা পরিবারের নিকট আত্মীয়দের মধ্যে কারও হাইপার লিপিডেমিয়া বা হার্টের রোগ আছে? বয়স ৪০ এর ওপরে? দীর্ঘদিন ধরে আপনি কি ডায়াবেটিস বা হাইপার টেনশনের ওষুধ খাচ্ছেন? তাহলে আর দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো রক্তের লিপিড প্রোফাইল চেক করে নিন। কারণ, প্রাথমিক পর্যায়ে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও সেরকম কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকার ফলে যখন হার্ট, ব্রেন, গলব্লাডার বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে তখন হয়তো রক্ত পরীক্ষা করে এই নিঃশব্দ ঘাতকের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রতি ২৫০ জনের মধ্যে একজন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাধিক্য জনিত কারণে হৃদরোগের ঝুঁকির সম্মুখীন, অর্থাৎ ব্যাপারটা মোটেই হেলাফেরা করা যায় না।
 

কোলেস্টিরল কমাবেন কীভাবে?

দেহের বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার জন্যই উপযুক্ত খাদ্য তালিকা মেনে চলুন।
দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট এক্সারসাইজ এবং ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন।
নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া ও ঘুমের অভ্যাস কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
রাগ ও মানসিক দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। দরকারে মনোবিদের পরামর্শ নিন।
সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
দিনে তিন থেকে চার লিটার বিশুদ্ধ জল পান করুন।
অতিরিক্ত লবণ, চিনি, মিষ্টি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্সফারটি অ্যাসিড এবং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার বর্জন করে চলা উচিত।
ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার, প্রয়োজনীয় মাত্রায় ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখতে হবে।
ধূমপান ও মদ্যপানের মতো অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত।
ডায়েটে খারাপ ফ্যাটের বদলে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলি স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রাধান্য দিতে হবে।
গতানুগতই রান্নার পদ্ধতিতে বদল এনে স্বাস্থ্যসম্মত উপায় রান্না করতে হবে।

আরও পড়ুন:

ডায়েট ফটাফট: শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও মাছের রাজা, একঝলকে জেনে নিন ইলিশের গুণাগুণ

কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-১০: সাবিত্রীদেবীর দৃষ্টিতে টুকরো সময়

 

কোলেস্টেরলে ভুগলে কী কী খাবেন?

হোলহুইট প্রোডাক্টস, ডালিয়া, ওটস, বার্লি, জোয়ার, রাইস ব্র্যান, ব্রাউন রাইস, কিনোয়া ইত্যাদি।
মেথি, হিঞ্চে, কলমি, নটে, গিমে, পালং, সর্ষে, লাউ, কুমড়ো, কচু ইত্যাদি যে কোনও ধরনের সবুজ শাক।
আনাজপাতির মধ্যে লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, পটল, ঢেঁড়স, মোচা, গাজর, কপি, মুলো, টম্যাটো, ডাঁটা, ব্রকোলি, মটরশুঁটি, বেল পেপার ইত্যাদি।
ফলের মধ্যে লেবু, কমলা লেবু, আপেল, ন্যাশপাতি, তরমুজ, পেঁপে, কলা, আঙুর, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
খোসাওয়ালা ডাল, সয়াবিন, তিল, তিসি, চিয়াসিড, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ো বীজ, ওয়ালনাট, আমন্ড ইত্যাদি।
সামুদ্রিক মাছ, তাজা পুকুর নদীর মাছ, পোল্ট্রি, নন ফ্যাট মিল্ক, ফ্যাট ফ্রি দুধের দই, ছানা, ঘোল ইত্যাদি।
হলুদ, লঙ্কা, দারচিনি, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, লবঙ্গ, গোলমরিচ, মেথি, তুলসী ও বিভিন্ন রকমের হার্বস।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১০: দশমহাবিদ্যা ও ঠাকুরের কালীভাবনা…

টানটান ত্বক চাই? বয়স ধরে রাখতে মেনে চলুন ত্বক বিশেষজ্ঞের এই পরামর্শগুলি

 

কোলেস্টেরলে ভুগলে কী কী খাবেন না?

ফাস্টফুড ও হাইলি প্রসেসড ফুড।
কেক, প্রেস্টি, পিৎজা, বার্গার, সাদা পাউরুটি, কুকিজ ইত্যাদি বেকারি প্রোডাক্টস।
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ট্রান্স ফ্যাড ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার।
ময়দাজাত খাবার।
চিনি ও চিনিযুক্ত বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয়।
সফট ড্রিংকস, অ্যালকোহল ও ফলের রস।
রেডমিট, প্রাণীর যন্ত্রাংশ, পশুর চর্বি, মাছের ডিম ইত্যাদি।
গরু ও মোষের দুধ, মাখন, চিজ, ক্রিম, আইসক্রিম, মার্জারিন।
জ্যাম, জেলি, মধু, আচার, সুইট স্নাক্স।
হ্যাম, সসেজ, ক্যানড ফ্রুটস ইত্যাদি।

আরও পড়ুন:

পাখি সব করে রব, পর্ব-৩: আচমকা বলরাম চেঁচিয়ে বলল, ‘বাপি, বাপি—ওই যে বাপি’

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৬: গলা সাধলেই লতাকণ্ঠী?

 

হাই কোলেস্টেরল যুক্ত কিছু খাবার

প্রায় সমস্ত রকম প্রাণীজ ফ্যাট যেমন পশু মাংস, মেটে, ঘি, মাখন, চর্বি, আইসক্রিম, নারকেল তেল, বনস্পতি, পাম অয়েল, মিল্ক ফ্যাট ইত্যাদি। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এই ধরনের খাবার বর্জন করে চলা উচিত।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৪৯৭১

* ডায়েট ফটাফট (Healthy Diet tips): শম্পা চক্রবর্তী (Shampa Chakrabarty), ডায়েট কনসালটেন্ট।

Skip to content