ছবি প্রতীকী। সংগৃহীত।
বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, আমরা সারাদিনে যত ক্যালরি গ্রহণ করি, তার কুড়ি থেকে ত্রিশ শতাংশ ফ্যট থেকে আসা উচিত। যার আবার দশ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে আসা প্রয়োজন। আর এই স্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটা ভালো উদাহরণ হল ঘি। একাধিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, ঘিতে থাকা ‘মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড’ শরীরে জমে থাকা ‘ফ্যাট সেল’কে গলাতে সাহায্য করে।
ঘি-এর পুষ্টিগুণ
খাঁটি ঘি একটি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এতে ভিটামিন-এ, ভিটামিনআ-ডি, ভিটামিন-কে, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, খনিজ, পটাশিয়ামের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও প্রচুর পরিমাণে আছে। এর মধ্যে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডও এতে রয়েছে।
ওজন কমাতে ঘি খাওয়া উচিত?
আমরা সারাদিনে কী খাই তার ওপর নির্ভর করবে সারাদিনে ঘি খাওয়ার সঠিক মাত্রা কতটা হবে। ঘি-কে মূলত খাবারের স্বাদ বাড়াতে যতটা দরকার, ঠিক ততটাই ব্যবহার করা প্রয়োজন। ঘি খাওয়া ভালো বলে অনেকটা পরিমাণে ঘি খাওয়া উচিত নয়। এতে খাবারের স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়। সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক পদ্ধতি মেনে নিয়ে ঘি খেলে ওজন বাড়বে না, বরং কমবে।
ঘি খাওয়ার উপকারিতা
ওজন কমাতে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘিতে উপস্থিত ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড চর্বি জড়ো করতে এবং ফ্যাট কোষগুলির আকার কমাতে করতে সাহায্য করে। তাই ঘি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
অনেকে মনে করেন, ঘি খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে। তবে, ঘি-তে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা, আপনার বিপাককে দ্রুত হারে বাড়াতে সহায়তা করবে। ঘিতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকায় ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। তাই যদি ওজন কমাতে চান, তবে প্রতিদিন ১ চা চামচ ঘি খান।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ঘিয়ে রয়েছে কে-২ এবং সিএলএ নামক দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে এই দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলোকে শরীর থেকে বের করে দিয়ে ক্যানসারের আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে ঘি খুব ভালো কাজ করে। ঘিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে এসেনশিয়াল ফ্যাট, যা মস্তিষ্কের কোষের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও ঘি অত্যন্ত কার্যকরী। ঘিয়ের আর একটি বড় গুণ হল সহজে নষ্ট হয় না। প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে ঘি।
হেলদি ডায়েট: দাঁতকে অবহেলা নয়, শিশুর দাঁতের যত্ন নিন গোড়া থেকেই, সতর্ক হন এই সব খাবারে
ডায়েট ফটাফট: ড্যাশ ডায়েট, এক ঢিলে কমবে ওজন ও রক্তচাপ
ত্বকের পরিচর্যায়: ফর্সা হওয়ার দৌড়ে না গিয়ে স্বাভাবিক রং নিয়েই সুন্দর ও সুরক্ষিত থাকুন, জানুন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করে
খালি পেটে ঘি খেতে পারলে শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। দিনে দু’ চামচ ঘি খেলে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমে, বাড়ে উপকারী কোলেস্টেরল। এতে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে যায় প্রায় ২৩ শতাংশ। জানলে ভালো, ঘি-এর স্ফুটনাঙ্ক অনেক বেশি। ঘি-কে ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত গরম করা যায়। বেশিরভাগ তেলই এই তাপমাত্রায় গরম করলে ক্ষতিকারক হয়ে যায়।
গাঁটের ব্যথা কমাতে
খালি পেটে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘি খেলে অস্থিসন্ধির সচলতা বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি মেটাতেও সাহায্য করে। ফলে হাড়ের যেকোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। বৃদ্ধ বয়েসে অনেকেই গাঁটের ব্যথায় কষ্ট পান। সেই ব্যথা কমাতেও ঘি-র উপর ভরসা রাখতেই পারেন।
বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১১: ফুটবলের ব্ল্যাক প্যান্থার: লেভ ইয়াসিন
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৬: কবির ভালোবাসার পশুপাখি
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৪: পঞ্চমকে সিনেমা হলে বসিয়েই বেরিয়ে যান রীতা
ত্বক সুন্দর রাখে
প্রতিদিন খালি পেটে ঘি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ত্বকের কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। ভিটামিন এ ও ই থাকায় ঘি পুষ্টিগুণে ভরপুর ঘিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণও রয়েছে। যা সহজে আমাদের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। ডেলিভারির পর নতুন মায়েদের ঘি খাওয়ানো হয় এই কারণেই।
হজমশক্তি বাড়ায়
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন ২ চামচ ঘি খালি পেটে খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া ২-৩ চামচ ঘি ভাত বা রুটির সঙ্গে খেতে পারলে বাড়ে হজমশক্তি। হজম ক্ষমতা বাড়ানোর কারণে ঘি খিদে বাড়ায়। এ সবের পাশাপাশি সুন্দর গন্ধ এবং স্বাদ অথচ অধিকাংশ দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো ঘি খেলে অ্যালার্জি হওয়ার ভয়ও নেই।
টক্সিনমুক্ত করতে সাহায্য করে
ঘিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলোকে শরীর থেকে বের করে দিয়ে ক্যান্সারের আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়।
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৯: সুরের আকাশে ঘটালে তুমি স্বপ্নের ‘শাপমোচন’
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: সারা বছরের বন্ধু ‘কলা’
অমরনাথের পথে, পর্ব-৩: চন্দনবাড়ি থেকে শুরু হল যাত্রা
ওজন ও এনার্জি
ঘিতে থাকা মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড খুব এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। সেকারণে অধিকাংশ অ্যাথলিট দৌড় শুরুর আগে ঘি খান। এর ওজনও কমে।
পজিটিভ ফুড
পজিটিভ ফুড হিসেবে প্রাচীন কাল থেকেই ঘি পরিচিত। আধুনিক গবেষণাও বলছে, নিয়ম মেনে ঘি খেলে পজিটিভিটি বাড়ে। উন্নত হয় কনশাসনেস।
রান্নাঘরে যে কয়েকটি সুপার ফুড আছে তার মধ্যে অন্যতম হল ঘি। বিভিন্ন মিষ্টি ও নোনতা খাবারে ঘিয়ের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে তা সঠিক তাপমাত্রা ও সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করাই বাঞ্চনীয়।
যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২