মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

বাঙালি উৎসব উদ্‌যাপন করছে মানেই, তার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে ভূরিভোজের আয়োজন। নতুন বছরের উৎসবের পরিকল্পনা অনেকটাই গড়ে ওঠে বাঙালি খাবারদাবারকে কেন্দ্র করে। আর সেই ভূরিভোজের মধ্যে অবশ্যই থাকে মিষ্টি। বাঙালির কাছে রসনাতৃপ্তি একটা বড় বিষয় হল সুস্বাদু মিষ্টি। নববর্ষের উৎসবে গা ভাসাতে মিষ্টির স্বাদ নিতেই হবে। তবে শুধু মিষ্টি খেলে হবে না, সেই সঙ্গে শরীরের দিকটিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই এই প্রতিবেদনে কী ধরনের মিষ্টি কতটা খাওয়া যেতে পারে এবং মিষ্টির খাওয়ার ভালো-মন্দ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলাম। যা হয়তো আপনাদের কাজে লাগতে পারে।
 

মিষ্টি আর বাঙালি

নববর্ষ মানেই মিষ্টি আর মিষ্টি মানে বাঙালি। মিষ্টি ছাড়া যেমন নববর্ষ ঠিক জমে উঠে না, তেমনি বাঙালিকে বাদ দিয়ে মিষ্টি ঠিক চলে না। দুধ কাটিয়ে ছানা তৈরি করে যে উত্তম মানের মিষ্টদ্রব্য প্রস্তুত করা সম্ভব, তা প্রমাণ করেছিল বাঙালিরাই। বঙ্গদেশের উত্তরভাগের যে অংশটিকে ‘গৌড়’ বলা হতো, সেই মালদা-মুর্শিদাবাদের গুড় ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। আর আমাদের খেজুর গুড়ের স্বাদবিচারে বসলে তো আলোচনা শেষই হবে না! তাই বাঙালিদের যে মিষ্টির প্রতি একটু বিশেষ পক্ষপাত থাকবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। বর্তমানে পাড়ার প্রায় প্রতিটা মোড়েই আছে মিষ্টির দোকান, আর তার সাথে দোসর হয়েছে কেক ও পেস্ট্রি। তাই মিষ্টি থেকে দূরে থাকা কঠিনই নয় কষ্টকর ও বটে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: দ্রুত রোগা হতে চান? ভরসা রাখুন সুপারফুড ডালিয়াতে

ফিজিওথেরাপিতে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির সমস্যা, রইল টিপস

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৫: সারদা দাদার থেকে চিল্পিঘাটি

 

কখন কী মিষ্টি খাবেন

প্রথমেই যেটা করতে হবে মিষ্টি খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় ও দিন বেছে রাখতে হবে। পেট ভরে খাবার খেতে হবে। সকাল বিকাল নিয়ম করে খাবার খেতে হবে। যে মিষ্টি খাচ্ছেন সেটা অবশ্যই জানো ভালো মানের মিষ্টি হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
 

রকমারি মিষ্টি

মিষ্টির মধ্যে সন্দেশ রসগোল্লা ছাড়াও কেক পেস্ট্রি, কুকিজ বিস্কুট জিলিপি লাড্ডু সমস্ত কিছুই পড়বে। মিষ্টি দই বা রসগোল্লার প্রধান উপাদান ছানা। যা খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। অন্যদিকে জিলিপি বা ব্যাসনের লাড্ডু তেলে ভেজে তারপরে চিনির রসে ডোবানো হয় সঙ্গে আবার সস্তার রং ব্যবহার করা হয়। যার কোনওটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। আবার কমদামি পেস্ট্রিতে মাখনের পরিবর্তে মার্জারিন কম দামের ক্রিমসস্তার রং ব্যবহার করা হয় যার কোনওটাই স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী নয়। তাই অবশ্যই আপনাকে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক

গল্প: ১৫ অগস্ট, ২২০৫

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১৫: ভালো-মন্দ সর্ব-বন্ধন বিমুক্ত হয়ে আত্মা স্বমহিমায় সর্বশক্তিমান রূপে বিরাজ করেন

 

কোন ধরনের মিষ্টি স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ

সবার আগে যেটা প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর রেসিপি খুঁজে বাড়িতে মিষ্টি তৈরি করা। বাড়িতে রান্না করলে যেটা ভালো, তা হল মিষ্টির মান এবং পরিমাণ ঠিক রাখা যায়। সাধারণ চিনির পরিবর্তে ব্রাউন সুগার, গুড়, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি দিয়ে মিষ্টি তৈরি করা ভালো। এতে যেমন স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে না, তেমনি মিষ্টিও খাওয়া হবে।
 

কেন মিষ্টি খাবেন

তবে মিষ্টির যে শুধু খারাপ দিকই আছে তা নয়, খুঁজলে মিষ্টির বেশ কিছু ভালো গুণও পাওয়া যাবে। আর বাঙালি যখন মিষ্টি ছাড়া চলতেই পারবে না, তখন আসুন আজকে আমরা বছরের প্রথম দিনে মিষ্টি কিছু ভালো দিক জেনে নিই।
 

অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে মিষ্টি

বর্তমানে অ্যাসিটি সমস্যা ভীষণ বেড়ে গিয়েছে। অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা খাবার সঙ্গে মশলাদার ঝাল তৈলাক্ত খাবার থেকে অ্যাসিডিটির সমস্যা বেড়ে চলেছে। তবে খাবার পর সামান্য মিষ্টি খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।

আরও পড়ুন:

দশভুজা: রুমা দেবী—তিরিশ হাজার মহিলার ভাগ্য পরিবর্তনের কান্ডারি তিনি

ইংলিশ টিংলিশ: ‘এক হাতে তালি বাজে না’ বা ‘গাছের খায় তলারও কুড়োয়’, এদের ইংরেজিতে কী বলে?

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় মুশকিল আসান হতে পারে টক দই

 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে

প্রতিদিন খাবারের শেষে অল্প একটু মিষ্টি ব্লাড প্রেসার কমায়। পাশাপাশি কার্ডিওভাসকিলার রোগের আশঙ্কাও কমে।
 

অস্বস্তিভাব কমাতে মিষ্টি

ভারী খাবার খাওয়ার পর শরীরে অস্বস্তি তৈরি হয় সঙ্গে রক্তচাপ ও খানিকটা কমে যায়। কিন্তু মিষ্টি খেলে এই সময় শরীরে রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় থাকে।
 

স্ট্রোকের আশঙ্কা কমাতে মিষ্টি

ডার্ক চকলেটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কোকো থাকে, যা স্ট্রোকের আশঙ্কা কমায়। তাই ডেজার্টে ডাক চকলেটের মতো কিছু খাবার রাখা যেতেই পারে।
 

সুখ ও আনন্দের অনুভূতিতে মিষ্টি

খাবার শেষে মিষ্টি খেলে শরীরে সেরিটোনিন নামের হরমোনের ক্ষরণ হয়। ফলে সুখ ও আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content