শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক দৃঢ় করার দিন।

 

অভিভাবকরা শুনুন

অভিভাবক-অভিভাবিকাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিক থেকে অভিনন্দন জানাই। আপনারাই সন্তানের প্রথম এবং প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা। আপনাদেরই শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্নেহ, মমতা, মূল্যবোধ, আচার-আচরণ, উপদেশ ও জীবনের নানান অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত উপলব্ধি ছাত্র-ছাত্রীদের সবচেয়ে মূল্যবান অবলম্বন।

আপনাদের অবদান যেন সাংসারিক জীবনের নানান জীবন সংগ্রামের মধ্যে কখনও কম না হয়। আমরা বিষয় শেখাই। সেই সঙ্গে জীবন গড়ার জন্য কিছু পরামর্শ দিই। শেখাই কীভাবে পাঠ গ্রহণ করতে হয়। ওদের কাছে বসুন। শুনুন ওদের কাছে ক্লাসে কী নতুন কথা শুনেছে, সেটা আপনারা মনে রাখুন। প্রয়োজনীয় অনেক কথা ওরা মনে রাখতে পারে না। মাঝে মাঝে ওদের মনে করিয়ে দিন।

‘নতুন বানান সিলেবল-এ ভেঙে উচ্চারণ করবে। পাঁচবার বাড়িতে লিখবে। অর্থ শিখবে। বাংলা অর্থ শিখবে। সমার্থক শব্দ শিখবে। ইংরেজির মানে শিখবে। শব্দটি বাক্যে ব্যবহার করবে।’— এই কথা ইংরাজির শিক্ষকরা বলেন। বাড়িতে যদি একটু মনে করিয়ে দেওয়া হয় ওদের জন্য খুব ভালো হয়। অনুশীলন করা, প্রতিটি অধ্যায় পড়ে ক্লাসে যাওয়া, মডেল কোশ্চেন পেপার অনুশীলন করা ইত্যাদি ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত শোনে।
আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১৩: মালিকা পরিলে গলে/ প্রতি ফুলে কে-বা মনে রাখে?…

যত মত, তত পথ, পর্ব-৪: শ্রীরামকৃষ্ণের কথা রবীন্দ্রনাথের গান

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯: ঠাকুরের ঘরণী সারদার গার্হস্থ্য জীবন

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৩৪: কবি যখন শিক্ষক

ওদের সঙ্গে থাকুন। সময় দিন যতটুকু সম্ভব। মনে করিয়ে দিন। ওদের বলি, কঠোর পরিশ্রম করতে। আত্মবিশ্বাসী হতে। এই দুটো গুণ ওদের সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যাবে। বিদ্যালয় তখনই সফল হবে যখন বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রীরা মা-বাবার পরামর্শ অনুযায়ী চলার উপকারিতা বুঝে নেবে। ওরা ভুল করতে পারে। ভুল শুদ্ধের পার্থক্য করা সত্যিই কঠিন। সেই জন্যই আপনাদের দরকার। ওরা মানুষ হলে সূর্য উঠবে। আলো ওরাই আনতে পারে শুধু।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৭: সে কোন প্রভাতে হইল মোর সাধের ‘নবজন্ম’

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৫: টনিক খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো?

 

তোমাদের বলছি

আজকের দিন খুবই আনন্দের। ছাত্র-ছাত্রীরা সারাদিন যে আনন্দ করবে তার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেক আনন্দ হয়। আনন্দমুখর এই দিনটিকে বিদ্যালয়ে রাখবে। প্রতিদিন। দিনটাকে ফুরাতে দেবে না। তোমাদের উজ্জ্বল মুখগুলি বিদ্যালয়ে থাকবে।

বিদ্যালয়ের গেট থেকে ডাস্টবিন— সবকিছুই তোমার প্রিয় হোক। বিদ্যালয় তোমার বাড়ি। তোমাদের ঘর। তোমাদের খেলার মাঠ। তোমাদের শিক্ষক। তোমাদের শিক্ষিকা। এখানে বন্ধু আছে, মন খুলে কথা বলো। হাসো। মজা করো। এখানে লেখাপড়া আছে। মন প্রাণ ভরে বিদ্যার আলো নিয়ে রোজ তোমরা উজ্জ্বল হও। তোমরাই তোমাদের স্বদেশ। তোমরা কেউ বাংলা পড়াবে, কেউ চিকিৎসা করবে, কেউ বানাবে নতুন অ্যাপ, তোমাদের মধ্য থেকে ব্যাট হাতে উঠে আসবে নতুন বিরাট, কেউ হবে নার্স, চাঁদে যাবে, পৃথিবীকে দেবে জ্বালানির নতুন সন্ধান।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১২: সুন্দরবনের আর এক ব্যাঘ্রদেবতা বড় খাঁ গাজী

ক্লাসরুম: ইংরেজিতে ভালো নম্বরের জন্য Writing Skill Development-এ যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে

তোমাদের জন্যই ব্ল্যাকবোর্ড কত চকের দাগে সাদা হয় বারবার। তোমাদের জন্যই তোমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কত লেখাপড়া করেন। তোমরা ভালো থেকো। খুশি থেকো। হাসিমুখে যাই পড়বে— অঙ্ক, ভূগোল, বিজ্ঞান তাই মিষ্টি লাগবে। পাবে তার অপূর্ব স্বাদ। তোমাদের জন্য রইল অফুরন্ত শুভেচ্ছা।
* ক্লাসরুম (Classroom): উৎপল ভৌমিক (Utpal Bhaumik), ইংরেজির শিক্ষক, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

Skip to content