রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

সামনেই একটা আলোর উৎসব—কালীপুজো, তার পরেই দীপাবলি। আলোর উৎসব তো শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোরই উৎসব। কিন্তু এই উৎসবকে ঘিরেই কিছু কিছু পরিবারে বাজি পোড়াতে বা পটকা ফাটাতে গিয়ে শিশুরা এমন সব দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, যার ফলে পুরো পরিবারেই বিষাদের সুর নেমে আসে।
 

বাজি-পটকার বিজ্ঞান রহস্য

বাজি-পটকার মধ্যে থাকে একটা দাহ্য মিশ্রণ, যা বাতাসের সাহায্য ছাড়াই জ্বলতে পারে। এর জন্য মূলত পটাশিয়াম ক্লোরেট, পটাশিয়াম নাইট্রেট বা সোডিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও দাহ্য পদার্থ হিসেবে কাঠ কয়লার গুঁড়ো, সালফার বা গন্ধক থাকে। আগুন লাগলে পটাশিয়াম ক্লোরেট থেকে প্রচুর অক্সিজেন বেরিয়ে আসে, যার সাহায্যে অন্য দাহ্য পদার্থগুলো জ্বলতে থাকে। এখন মূলত বারুদ ব্যবহার করা হয় আতশবাজি, পটকা, তুবড়ি, হাওয়াই বাজি প্রভৃতি প্রস্তুত করার জন্য।
মনে রাখতে হবে বাজি-পটকা পোড়ানোর মানে হল— আগুন নিয়ে খেলা। এই আগুন নিয়ে খেলার সময় শিশুদের এমন সাবধানে রাখতে হবে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে। এখন দেখা যাক সে জন্য কী কী সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন।

 

বাজি পোড়ানোর আগের প্রস্তুতি

ছোটরা বাজি পোড়ালে বড়দেরও ওদের কাছাকাছি থাকতে হবে তদারকি করার জন্য।

প্রয়োজনে যাতে হাতের কাছে জল পাওয়া যায়, সেদিকে বড়দেরই নজর রাখতে হবে।

জরুরি ফোন নম্বর, দমকল, অ্যাম্বুলেন্স, কাছাকাছি নার্সিংহোম বা হাসপাতালের ফোন নম্বর আগে থেকে বড়দেরই জোগাড় করে রাখতে হবে।

ছোটখাট পুড়ে যাওয়ার জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম, যেমন সিলভারেক্স বা মুপিরোসিন জাতীয় মলম রাখতে হবে। পোড়া জায়গায় কখনওই তেল বা ঘি লাগানো যাবে না।

পোশাকে সতর্কতা— শিশুদের বাজি পোড়ানোর সময় সুতির কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে। সিনথেটিক জামাকাপড় একদম পরানো যাবে না। তাছাড়া ডান্সিং ফ্রক বা ওড়না শিশুদের পরানো ঠিক নয়।

প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানোর কাছাকাছি কোনও কাপড়-চোপড় রাখা ঠিক নয়। শিশুরা যাতে প্রদীপ বা মোমবাতির কাছাকাছি না যায় সেটা বড়দেরই খেয়াল রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:

আন্দামান সাগরে ক্রমশ শক্তি বাড়িয়েই চলেছে নিম্নচাপ! ঘূর্ণিঝড় ‘সিতরাং’ মঙ্গলবারই আছড়ে পড়তে পারে

ছোটদের যত্নে: আপনার সন্তান কি প্রায়ই কাঁদে? শিশুর কান্না থামানোর সহজ উপায় বলে দিচ্ছেন ডাক্তারবাবু

ত্বকের পরিচর্যায়: শীতে কি আপনার ত্বক শুকিয়ে যায়? মেনে চলুন ত্বক বিশেষজ্ঞের এই পরামর্শগুলি

কালীপুজোয় সেজে উঠুক সাধের অন্দরমহল, রইল ৭ উপায়

বাস্তুবিজ্ঞান, পর্ব-১৮: সাধের বাড়ি জন্য কেমন জমি ভালো? জেনে নিন বাস্তুশাস্ত্র মতে আদর্শ জমির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

 

আরও জানলে ভালো

বাজি কিনলে নামকরা কোনও দোকান থেকেই বাজি কিনতে হবে। যেখানে সেখানে গজিয়ে ওঠা অথবা রাস্তার সাধারণ দোকান থেকে নিম্ন মানের বাজি কিনতে নেই। সেগুলো নিরাপদ নয়। তৈরি করার সময় মান বজায় থাকে না। ঠিক অনুপাতে মশলা থাকে না বলে যেকোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নামী দোকানের বাজি সাধারণত সঠিক মানের হয়। শিশুদের হাতে বাজি ধরানোর আগে বড়দের ভালো করে নিয়মাবলী পড়ে নেওয়া উচিত।

কোনও ভিড় বা বন্ধ জায়গায় শিশুকে কখনওই বাজি পোড়াতে অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। এতে বিপদের আশঙ্কা বেশি থাকে। শিশুকে খোলা মাঠে বা উঠোনে বাজি পোড়াতে দিন। ন্যাড়া ছাদে বাজি পোড়ানো নিষেধ। পাঁচিল ঘেরা ছাদে শিশুরা বাজি পোড়ালেও বড়দের কাছে থাকতে হবে, সব কিছুতে নজরদারী চালানোর জন্য।

অনেক বাজি একসঙ্গে ফাটানো বা পোড়ানো উচিত নয়। এতে বিপদ ডেকে আনতে পারে। শিশুকে বোঝাতে হবে যে, শরীর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে বাজি পোড়াতে হবে। সামনের দিকে ঝুঁকে বাজি পোড়ানো যাবে না।

শিশুদের জন্য ফুলঝুরি বা রং মশাল জাতীয় বাজি সব থেকে নিরাপদ।

অতিরিক্ত বাজি যেগুলো পরে পড়ানো হবে, সেগুলোকে আগুনের উৎস থেকে দূরে রাখতে হবে।

কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

 

স্পর্শকাতর কয়েকটি বিষয়

খুব হই হুল্লোড় চেঁচামেচি করে এবং দেদার শব্দবাহী বাজি পোড়ানো উচিত নয়। এতে পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে, সেটা শিশুদের বোঝাতে হবে।

শিশুদের আরও বোঝাতে হবে তাদের বাজি পোড়ানোর আনন্দের বিষয় যেন কাছাকাছি কোনও বাড়িতে থাকা রোগীর কষ্টের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২৯৪৯৩২


Skip to content