শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


ছবি প্রতীকী

ঋতু অনুযায়ী এখন বর্ষাকাল হলেও, তাপমাত্রার তেমন হেরফের হয়নি। এই রোদ তো, এই ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এমন আবহাওয়ায় সবথেকে বেশি সমস্যা দেখা দেয় শিশুদের। তাই ওদের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা। প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে শিশুদের খাবারদাবারে। খেয়াল রাখতে হবে ওদের খাদ্যাভাসের মধ্যে যেন সময়োপযোগী মৌসুমি ফল থাকে। শিশুদের নীরোগ ও তরতাজা রাখতে কী কী ফল রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখা যায়, তা নিয়েই আজ বিস্তারিত আলোচনা করব।
 

তাজা মুসাম্বি

তাজা মুসাম্বি ফল গরমে শিশুদের তরলের চাহিদা, ভিটামিন ও মিনারেলের দৈনিক চাহিদা পূরণে দারুণ উপকারী। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও এই ফল খুব কার্যকরী। ভিটামিন-সি প্রচুর পরিমাণে থাকায় এই ফল শিশুদের রোগ প্রতিরোধ করে এবং সর্দি কাশি কমায়। তবে শুধু মুসাম্বি নয় এ সময় শিশুদের জন্য তরমুজ, ফুটি বা বাঙ্গি, আম, লিচু ইত্যাদি ফলও বিশেষ উপকারী।
 

ফলের রস

ছোট শিশুদের এই সময় বিভিন্ন ধরনের ফলের রসও দেওয়া যেতে পারে। তবে তা বাড়িতেই তৈরি করতে হবে। বাজারের প্যাকেটজাত ফলের রস শিশুদের দাঁতের খুব ক্ষতি করে। এছাড়াও এগুলোতে দেওয়া প্রিজারভেটিভ শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই বাইরের যে কোনও প্রকার পানীয় ও ফলের রস থেকে আপনার শিশুকে দূরে রাখাই শ্রেয়। সকালে বানিয়ে রাখা ফলের রস শিশুকে কখনও বিকেলে দেওয়া যাবে না।
 

কাটা ফল খাওয়ানো যাবে না

এই প্রচন্ড গরমে ফল অনেক সময় নষ্ট হয়ে বা পচে যায়। তাই শিশুকে দেওয়ার আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে যে ফল ঠিক আছে কিনা। বাইরের কাটা ফলও কখনো শিশুদের দেওয়া যাবে না।

 

বাড়ির তৈরি বেলের শরবত খুব উপকারী

গরমের ক্লান্তি দূর করতে আর গরমে স্বস্তি দিতে শিশুদের জন্য বেলের শরবত খুব উপকারী। দেশি কাঁচা আম, আনারস, কলা ও দেশীয় হলুদ রঙা পাকা আম শিশুদের জন্য খুব উপকারী। এই দিনগুলিতে আপনার শিশুর সুস্থতা অনেকটাই নির্ভর করে ফলের রসের উপর।

 

শশা হজমে খুব সাহায্য করে

কম ক্যালরির এই ফলে প্রচুর জলীয় পদার্থ থাকে বলে এটি গরমে শিশুদের ডিহাইড্রেশন দূর করে। জল পিপাসা নিবারণে ২০০ মিলি জল ও ৫০ গ্রাম ওজনের একটা শশার ভূমিকা সমান। খুব ছোট শিশুরা অবশ্য শশা খেতে পারে না। শসাতে ভিটামিন-এ, বি, সি থাকায় এটি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়। পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সিলিকন থাকার জন্য শশা ত্বক রঞ্জক হিসাবে কাজ করে। শশা শিশুদের হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শশাতে সিলিকা থাকায় ইহা শিশুদের চুল নখ সতেজ রাখে এবং কার্টিলেজ ও লিগামেন্টের টিসু গড়তে সাহায্য করে।
 

পেঁপে সর্দি কাশিতে ভীষণ উপকারী

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ফলে প্রচুর ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি থাকায় শিশুদের চোখের সমস্যা এবং সর্দি কাশিতে ভীষণ উপকারী। পাকা পেঁপে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
 

রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে জামরুল

হালকা মিষ্টি রসালো এই ফল গরমকালে জল পিপাসা মেটায়। জামরুলে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন থাকে। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শিশুদের হাড় গঠনে সাহায্য করে। আর আয়রন রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে।
 

পেয়ারা মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে

পেয়ারার পুষ্টিগুণ কমলালেবুর থেকে চার গুণ ও আপেলের থেকে তিনগুণ বেশি। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, বি১, বি২ ,বি৩ এবং মূল্যবান ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম থাকে। হাই ক্যালোরি ও প্রোটিন যুক্ত এই ফল শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে।
 

আপেল হাড়কে শক্ত রাখে

আপেলে প্রচুর পরিমাণ বোরন থাকে যা শিশুদের হাড়কে শক্ত রাখে। এটি গরমকালে শিশুদের জলশূন্যতা দূর করে, তৃষ্ণা মেটায় ও শরীর ঠান্ডা রাখে। আপেল শিশুদের জ্বর কমাতে সাহায্য করে (এন্টিপাইরেটিক)।
 

কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

পাকা কলা শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে কিন্তু কাঁচকলা কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায়। কলায় প্রচুর ভিটামিন, আয়রন ও ক্যালরি থাকে।

ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

যোগাযোগ: ৯৮৩০২৯৪৯৩২


Skip to content