শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

নবজাতকের ত্বক এমনিতেই খুব সংবেদনশীল। রোজ স্নান করালে শিশুর ত্বকে থাকা তেল ধুয়ে যায়। ফলে ত্বক শুষ্ক ও আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। তাই নবজাতককে প্রতিদিন স্নান করানো ঠিক নয়। জন্মের পরে একমাস একদম স্নান না করালেই ভালো। একমাস পর থেকে একদিন অন্তর হালকা গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দিতে হবে। একটু অসাবধান হলেই ত্বকের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে।
 

শিশুকে পরিষ্কার ও পরিছন্ন রাখার টিপিস

ভার্নিক্স ক্যাজিওসা- মোমের মতো সাদা উপাদান দিয়ে ঢাকা থাকে নবজাতকের শরীর। ভার্নিক্স খোসা ওঠার মতো ধীরে ধীরে উঠে যায়। এর জন্য ত্বক ঘষার কোনও প্রয়োজন হয় না। তবে জন্মের পরে প্রথম এক মাস শিশুদের পরিষ্কার রাখার জন্য আলতো করে স্পঞ্জ করাতে পারেন, শুধু মুখমণ্ডল ও ডায়াপারের জায়গায়।
 

শিশুর স্নান

অতিরিক্ত স্নান করালে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হতে পারে। এর ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই একদিন অন্তর স্নান করানোই যথেষ্ট। ‘মাইল্ড’ সাবান ও ঈষদুষ্ণ জল ব্যবহার করতে হবে। শুকনো ধুতি বা নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে গা মুছিয়ে দিন। স্নানের পরে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকা দরকার, যাতে শিশুর ঠান্ডা না লেগে যায়।
 

পাউডারের ব্যবহার

ছোট শিশুদের জন্য পাউডারের প্রয়োজন নেই। লাগাতে হলে বেবি টেলকম পাউডার লাগাতে পারেন। পাউডার মাখানোর সময় খেয়াল রাখুন, শিশুর চোখে, মুখে যেন কোনওভাবে না লাগে। সুগন্ধিযুক্ত পাউডার লাগানো নিষেধ। কারণ এতে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল থাকে, যা শিশুর ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর।
 

ময়শ্চারাইজার

স্নানের পরে যেকোনও একটি ভালো ময়শ্চারাইজার লাগানো যেতে পারে। এর ফলে ত্বক আর্দ্র, মোলায়েম ও আর্দ্র থাকে। ভালো কোনও বেবি লোশনও ব্যবহার করা যেতে পারে।
 

ডায়াপার

সময় মতো ডায়াপার পরিবর্তন করতে হবে। আঁটোসাঁটো ডায়াপার পরানো উচিত নয়। এতে অ্যালার্জি, ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জল শোষণকারী এবং নরম ডায়াপার শিশুদের জন্য খুবই উপযোগী। শিশুকে সবসময় ডায়াপার না পরিয়ে হাওয়া বাতাস লাগাতে দিতে হবে।

 

মাসাজ

ত্বক, পেশী ও হাড়ের যত্নে মাসাজ খুব উপকারী। এতে ত্বক পুষ্ট হয় ও আর্দ্রতা বজায় থাকে। প্রাকৃতিক তেল দিয়ে মাসাজ করা উচিত। বাজারের রাসায়নিক যুক্ত তেল না ব্যবহার করাই ভালো।
 

সুতির কাপড়

শিশুর ত্বক এমনিতেই খুব সংবেদনশীল। অনেক সময় ঘামের কারণে ঘামাচি বা RAS হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সিনথেটিক কাপড় একদম ব্যবহার করা নিষেধ। সুতির ঢিলে ঢালা নরম কাপড় ব্যবহার করুন।
 

টিয়ার ফ্রি শ্যাম্পু

শিশুদের জন্য ‘টিয়ার ফ্রি শ্যাম্পু’ ব্যবহার করা ভালো। সংক্রমণ এড়াতে ভালো তোষকের উপর সোয়াতে হবে। নবজাতককে সরাসরি রোদে রাখা উচিত নয়। এতে ত্বক পুড়ে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। শিশুর জামাকাপড় আলাদা করে ধুতে হবে। এতে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
 

জন্মগত দাগ

নবজাতকের জন্মগত কতগুলো ত্বকের দাগ থাকে, যেগুলো কোনও চিকিৎসা ছাড়াই ঠিক হয়ে যায়।
 

মিলিয়া

কারও কারও নাকের উপর এবং মুখমণ্ডলে সাদা ফুসকুড়ির মতো হয়, যেগুলি এমনিতেই সেরে যায়।

 

এরিথেমা টক্সিকাম

জন্মের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে মুখমণ্ডলে বা পিঠে শিরদাড়ার নিচের দিকে লাল দাগ দেখা যায়। জন্মের এক থেকে তিন দিনের মধ্যে কোনও চিকিৎসা ছাড়াই এই দাগ মিলিয়ে যায়।
 

মঙ্গোলিয়ান দাগ

নীল রঙের দাগ পিঠে এবং পশ্চাৎ দেশে জন্মের পরপরই দেখা যায়। এই দাগও প্রথম জন্মবার্ষিকীর আগেই মিলিয়ে যায়।
 

স্টর্ক বাইট

এগুলো লাল ছাই রংয়ের চামড়ার উপর সুক্ষ রক্তনালী ফুলে গিয়ে এমন হয়। ঘাড়ে, চোখের উপরের পাতায় বা নাকে এগুলো দেখা যায়। কয়েক মাসের মধেই এগুলো চলে যায়, কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
 

ত্বক খসে পড়া (পিলিং স্কিন)

যে সমস্ত নবজাতক ৪০ সপ্তাহ বা তার পরে জন্মায়, তাদের এগুলো দেখা যায়। কোনও চিকিৎসা ছাড়াই ঠিক হয়ে যায়।
 

এপস্টাইন পার্ল

মুখের ভিতরে উপরের তালুতে মুক্তোর মতো সাদা ছোট দানাদানা হয়, এর জন্যও চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।

ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

যোগাযোগ: ৯৮৩০২৯৪৯৩২


Skip to content