ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা ছিলেন রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী। ঠিক এমনটাই ছিলেন প্রতিভা দেবী, রবীন্দ্রনাথের সেজদাদা হেমেন্দ্রনাথ আর নীপময়ীর বড় মেয়ে। বেথুন স্কুলে পড়াশুনা, গুণী সঙ্গীতজ্ঞদের কাছে গান এবং সেতার শিখেছিলেন প্রতিভা। ভাই হিতেন্দ্রনাথের সঙ্গে ‘বিদ্বজ্জন সভা’য় সেতারও বাজিয়েছেন। কিন্তু প্রতিভার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ‘বাল্মীকি প্রতিভা’র সংযোগটাই অমরতা পেল।
দশভুজা
শক্তিরূপেন সংস্থিতা: স্বয়ংসিদ্ধা
দুপুরের নিস্তব্ধতা ভেঙে আওয়াজ আসে, সব্জি নেবে গো সব্জি। ভ্যান ঠেলে ঠেলে নিয়ে চলে এক শীর্ন দেহি মহিলা। ক্লান্ত দুটি চোখ। মাথায় একটা টুপি। ভ্যান ভরা মরসুমি সব্জি। নাম দীপা বিশ্বাস। কোভিডের সময় থেকে বাজার উঠে এসেছিল বাড়ি বাড়ি। পুরুষদেরই সব্জি ফেরি করতে দেখেছি এতদিন কল্যাণীতে।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৭: মৃণালিনীর চিঠি
মৃণালিনী দেবীর জীবনের সময় তো খুব বেশিদিন ছিল না, পরিচিতি বলতে প্রতিভাবান কবির স্ত্রী। জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিসরে স্বামী সন্তান আর ঘরের দেখভাল করতে থাকা মৃণালিনীর গল্প সকলের জানা। আমি বরং আজ মৃণালিনীর চিঠির দেরাজ খুলে বসি আর অক্ষরের উপর অক্ষর সাজিয়ে এক নতুন মৃণালিনীকে খুঁজতে থাকি। যদি বলি, যে কয়টি চিঠি পড়তে পেরেছি, আর তাঁর প্রত্যুত্তরগুলি থেকে যেটুকু আভাস পেয়েছি আমার মনে হয়েছে একটু সুযোগ আর সময় পেলে মৃণালিনী দিব্যি রম্যরচনা লিখতে পারতেন।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৬: ঠাকুরবাড়ির লক্ষ্মী মেয়ে
কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে বাঙালির ঘরে ঘরে যে লক্ষ্মীর আরাধনা হয়, সেই সব লক্ষ্মী মেয়ে তো পরিবারের মধ্যেই থাকে। ঠাকুর পরিবারেও ছিল। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে সৌদামিনী দেবী। সারদা দেবীর মৃত্যুর পর বড় মেয়ে সৌদামিনীর হাতেই সংসারের সব ভার দিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ। সৌদামিনীও জড়িয়ে পড়েছিলেন ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৫: ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা এবং চলচ্চিত্র
ধীরেন্দ্রনাথ অনুভব করলেন, অভিজাত পরিবারের মেয়েরা চলচ্চিত্রে এলে আরও উন্নতি হবে এই শিল্পের। তাঁর এই কথা শুনে সকলে তাজ্জব হয়েছিলেন। কারণ এ এক অসম্ভব প্রস্তাব ছিল। ধীরেন্দ্রনাথকে তামাশা করে এক বন্ধু বলেছিলেন, ধীরেন্দ্রনাথের স্ত্রী প্রেমিকাদেবীই তো যোগ্য অভিনেত্রী। ধীরেন্দ্রনাথ এই কথাটার উপর গুরুত্ব দিলেন।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৪: আনন্দী—এক লড়াইয়ের নাম
সরস্বতীর লীলাকমল বিভাগ মহিলা লেখকদের গল্প বলে। লেখা মানে আবেগ, অভিব্যক্তি। আজ মনে হল মহিলা চিকিৎসকদের শুরুর লড়াইটাও জানা দরকার। আমি বলি আনন্দীকে নিয়ে। চিকিৎসক আনন্দী গোপাল!
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৩: প্রফুল্লময়ী— একটি বইয়ের লেখক এবং একটি জীবন ভরা ডিপ্রেশন
কাজের সূত্রে ‘মন’ নিয়ে পড়াশুনা করি। আজ এমন একটি ভেয়ের কথা লিখছি, সময় যার মনখারাপের তোয়াক্কা করেনি। এখন ‘ডিপ্রেশন’ কথাটি বেশ বহুব্যবহৃত। ‘ডিপ্রেশন’ বলতেই অনেকের মনে পড়ে যাবে শ্রীজাতর কবিতার শেষ অংশ—‘ডিপ্রেশনের বাংলা জানি— মনখারাপ।’ আমি একটু অন্য কথা বলি? ফ্যাশনেবল মনখারাপের হালকা পর্দা সরিয়ে, চলুন চোখ রাখা যাক উনিশ শতকে, ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে। এমন গল্প শোনাই, যা ডিপ্রেশনেরও, আবার তার থেকে উত্তরণেরও।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪২: যোগমায়া দেবী—এক প্রতিবাদী নারী
এখন দ্রোহকাল। বিপ্লবের সময়। আজ এক বিদ্রোহিনীর গল্প বলি। হয়তো তিনি লেখক হতে পারতেন। তিনি তাঁর জীবনযাপনের মধ্যেই উনিশ শতকে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে চিকের আড়ালে কত জ্যোতির্ময়ী আলোর শিখা যে প্রচারের আলো পাননি, ভাবলে অবাক লাগে। সময়টা মেয়েদের জন্য গহীন আঁধারের। সেই যুগে দাঁড়িয়ে দৃপ্ত ভঙ্গিতে নিজেদের ইচ্ছের মর্যাদা রাখতে পেরেছিলেন যাঁরা, তাঁরা প্রত্যেকেই আলোকবর্তিকা। এমনই একজনের কথা বলবো আজ। দ্বারকানাথ ঠাকুরের পুত্র গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী যোগমায়া দেবী।
পর্ব-৪১: ফয়জুন্নেসা— প্রথম মুসলমান মহিলা সাহিত্যিক
উনিশ শতকে প্রকাশিত হয় ‘রূপজালাল’ কাব্য। এই কাব্যের লেখক ছিলেন ফয়জুন্নেসা দেবী। এই কাব্যে রয়েছে রূপকথার মধ্য দিয়ে আত্মজীবনী রচনা করেছিলেন ফয়জুন্নেসা। রোকেয়া সাখোয়াত হোসেনের মতো তাঁকেও সমাজ মনে রেখেছ। শুধু লেখা নয়, সমাজ সংস্কার, নারী শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর।
সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪০: বিশ্বকবির তিন মেয়ে— অকালে ঝরে যাওয়া প্রতিভা
সরস্বতীর লীলাকমল যেসময়ের মেয়েদের কথা বলছে, রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা তখন সাহিত্যের আকাশের মধ্যগগনে। বিশ্বকবির তিন মেয়ে। তাঁরাও পেয়েছিলেন বাবার সাহিত্যিক বোধ। কিন্তু তিনজনের মধ্যে দু’ জনের অকাল প্রয়াণ কিছু সাহিত্যিক অনুষঙ্গস্তব্ধ করে দিল। আজ বলি রবি ঠাকুরের তিন মেয়ের কথা।
সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৯: ভারতের বিপ্লবী মেয়েরা এবং অন্তরে রবীন্দ্রনাথ
এখন ক্রান্তিকাল। সারা পৃথিবী প্রতিবাদী। অন্যায়ের স্পর্ধা যত বাড়ছে,জনসমুদ্র প্রতিবাদী তরঙ্গ হয়ে পথে নামছে। চিৎকার করে বলছে— জবাব চাই, জবাব দাও।’ নারী নিধনের হাঁড়িকাঠের ভিতর দিয়ে সভ্যতা এগোয় না। থমকে থাকে। তখন দুর্গার মতো নারীশক্তিকে এগিয়ে আসতে হয়। বিপ্লব আসে। এই বিপন্ন সময়ে দাঁড়িয়ে আজ সেই বিপ্লবী মেয়েদের কথা থাক সরস্বতীর লীলাকমলে, যারা একসময় পৃথিবী বদলে দিয়েছিল। সঙ্গে শব্দ হয়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
আমার দুর্গা
বিগত ১৪ বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কাজ, মহিলা ও শিশু কল্যাণ, বিশেষত ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, বৈবাহিক ধর্ষণ, গার্হস্থ্য হিংসা প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যাচারিত মহিলাদের জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই চালান তিনি। দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে সব ঘটনার কোনও সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখি নেই, কোর্ট চত্বরে দিনের পর দিন বিচারের আশায় চক্কর কাটে অসহায়দের, তাদের পাশে থাকেন যোগিতা ও তাঁর সংগঠন পরী
সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৮: নন্দিতা কৃপালনি— বিশ শতকের বিদুষী
নন্দিতা কৃপালনির গল্প বলি! সেই আমলে অনেকরকম কাজ করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের নাতনি বলে নয়, সেই আমলের এক আধুনিক মনের মেয়ে ছিলেন তিনি।
সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৭: লেডি রাণু— সেকালের এক শিল্পমনস্ক মানুষ
সরস্বতীর লীলাকমল সেই সব মেয়েদের কথা লিখে চলেছে যাঁরা অন্যদের থেকে আলাদা ছিলেন। নতুন কিছু করেছিলেন। আজ বলব লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়ের কথা।
সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৬: মৃণালিনী— রবি ঠাকুরের স্ত্রী-র লেখকসত্তা
রবীন্দ্রনাথের আইবুড়ো ভাত হয়েছিল অবনীন্দ্রনাথের পিসিমার ঘরে। তারপর এল সেই প্রতীক্ষিত বিয়ের দিন। জমকালো কাশ্মিরী শাল গায়ে দিয়ে নিজের বাড়ির পশ্চিমের বারান্দা ঘুরে রবি ঠাকুর বিয়ে করতে এলেন অন্দরমহলে। পিঁড়ির উপর দাঁড়ানো রবীন্দ্রনাথকে, কালো জড়িদার বেনারসি পরে বরণ করে নিয়েছিলেন কাদম্বরী দেবীর এক আত্মীয়া, সবাই যাঁকে ডাকতেন ‘বড় গাঙ্গুলির স্ত্রী’ বলে।