উত্তম-সুচিত্রা যুগ চলছে। ‘সবার উপরে’ ব্লকবাস্টার হিট। এরকম একটা প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ‘সাগরিকা’ বাজারে মুক্তি পেল, যা আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলল।

উত্তম-সুচিত্রা যুগ চলছে। ‘সবার উপরে’ ব্লকবাস্টার হিট। এরকম একটা প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ‘সাগরিকা’ বাজারে মুক্তি পেল, যা আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলল।
উত্তম ছাড়া আরও যে সব সহ অভিনেতা অভিনেত্রী ছিলেন তাঁদেরও চেষ্টাও কোনও অংশে ত্রুটি ছিল না। ছবি বিশ্বাসের মুখে ‘ফিরিয়ে দাও আমার বারোটি বছর’ ডায়লগটি, অনেকাংশে ফিল্ম্মোচিত হয়নি।
উত্তম কুমারের ভাগ্য এতটাই ভালো যে এ ছবিতে একাধারে তিনি বাঘা বাঘা সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কো- আর্টিস্ট হিসাবে সঙ্গে পেয়েছেন।
একই বছরে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পাবে আর কিছুদিনের মধ্যে ঋত্বিক ঘটক তখনও তার এলোমেলো চিন্তার রূপায়ণ পূর্ণ করতে পারেননি সে সময় মৃণাল সেন হাত পাকাচ্ছেন ছবির জগতে।
‘কঙ্কাবতীর ঘাট’ উত্তমের ফিল্মি কেরিয়ারে ‘শাপমোচন’ উত্তর এবং ‘সবার উপরে’-র আগে একটি স্মরণীয় ছবি যেখানে বাণিজ্যিকভাবে উত্তম কুমার নামক ফিল্মস্টারের ভাগ্য অনেকটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল।
‘উপহার’ ছিল সে ধরনের একটি মাইলস্টোন যেখানে উত্তম আগামী দিনে পরিণত অভিনেতা হবার সব রকমের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
পরবর্তীকালে অনেক নামী চলচ্চিত্রের পরিচালক হলেও উত্তম কুমারকে নিয়ে ছবি তৈরি তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি। তার মানে এই নয় যে, এ বছরে তাঁদের তৈরি ছবিগুলো চূড়ান্তভাবে মার খেয়েছিল।
‘শাপমোচন’- এর জনপ্রিয়তা এমন অংশে পৌঁছল যে আগের এবং পরের ছবিগুলির ভাগ্যরেখা অনেকাংশে বদলে গেল। অনেক পরিচালকের-প্রযোজকের মুখের রেখা তখন কালো হয়ে গিয়েছিল।
আমরা এ ছবির নায়কের কণ্ঠের গান নিয়ে মাতামাতি করি, যার সংখ্যা ছিল মাত্র চারটি। এই গানগুলির পারস্পরিক দক্ষতা খুব একটা আলোচনার জায়গা রাখে না। কারণ সংগীত পরিচালক নিজেই এ গানগুলির কণ্ঠদানে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উত্তম কুমারের মতো একজন প্রতিশ্রুতিমান ফিল্মি অভিনয়ের উত্থান পরবর্তীকালের বাংলা ছবিকে অনেক অংশে সাবালক করে দিয়েছিল।
ধীরে ধীরে মুক্তি পেল ‘রাইকমল’ ছবি। অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের সঙ্গে পরিচালক সুবোধ মিত্রের এবং উত্তম কুমারের প্রথম ছবি।
সুচিত্রা সেন সে দিক দিয়ে ব্যতিক্রমী ছিলেন। ক্যামেরা ছাড়া অন্য কোনও মাধ্যমেই নিজেকে তিনি খরচ করেননি। তাই সেলুলয়েডে তাঁকে দেখতে দর্শক বিনা কারণে সমাগম ঘটাতেন।
‘সাঁঝের প্রদীপ’ ছবির পরিচালক ছিলেন সুধাংশু মুখোপাধ্যায়ের আগে ১৯৪৯ সালে মাত্র একটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন: ‘হের ফের’ আর এই ছবিটি ছিল তার ক্যারিয়ারের শেষ ছবি।
চিত্রনাট্যের প্রতিটি বাঁকেই ছিল মূহুর্মূহু চ্যালেঞ্জ। সুচিত্রা সেনের সঙ্গে অভিনয় করার সুবাদে উত্তমবাবু জানতেন কোন অস্ত্রে দর্শককে ঘায়েল করা যায়। কিন্তু সন্ধ্যারানির চেহারা, সে ধরনের ছিল না।
ত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন সেই সীমারেখাকে অতিক্রম করে দেখাতে পেরেছিলেন। আমরা বলি না এটা অগ্রদূত-র ছবি। এটাই চিত্র জগতের বড় প্রাপ্তি।