সময়ের কি অলঙ্ঘ্য বাঁধুনি, যে মাসে ‘হারানো সুর’ রিলিজ করল সেই মাসেই মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে অভয়ের বিয়ে রিলিজ করল ‘অভয়ের বিয়ে’। পরিচালক এক এবং অদ্বিতীয় সুকুমার দাশগুপ্ত।

সময়ের কি অলঙ্ঘ্য বাঁধুনি, যে মাসে ‘হারানো সুর’ রিলিজ করল সেই মাসেই মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে অভয়ের বিয়ে রিলিজ করল ‘অভয়ের বিয়ে’। পরিচালক এক এবং অদ্বিতীয় সুকুমার দাশগুপ্ত।
যে ছবি কথার পিঠে কথা দিয়ে, সুরের পরে সুর দিয়ে দর্শকসমাজে নিবেদিত হয়েছে, তার বিশ্লেষণ ইতিহাসের এক একটি সোপান বটে। তার কথা কয়েক প্রজন্ম একই মেধায় একই মননে সঞ্চিত রাখবে। ছবির নাম ‘হারানো সুর’।
উত্তম কুমার কোনও নির্দিষ্ট ফর্মুলা মেনে চলতেন না কখনও। অভিনেতার মূল কর্তব্যই তো চরিত্র অনুযায়ী নিজেকে বদলে বদলে নেওয়া। সেটাই কাঙ্খিত।
উত্তমবাবুরও ক্যারিশমা বলিহারি! প্রত্যেক ছবিতেই নতুন নতুন কিছু সংযোজন করবেন, যা মানুষকে মশা মারতে ভুলিয়ে রাখবে। প্রতিটা ছবিতে চরিত্র অনুযায়ী তার চিত্রায়ণ অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রীদের থেকে উত্তমবাবুকে অনেক কদম এগিয়ে দিয়েছিল।
‘তাসের ঘর’ ছবিটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সংগীত পরিচালনায় গানের দিক দিয়ে খুব এগিয়ে ছিল। বিশেষত ‘শূন্যে ডানা মেলে, পাখিরা উড়ে গেলে’ গানটি বাংলার মুখে মুখে ফিরত।
আমরা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ দেখে উত্তমবাবুর জীবন আলেখ্য ভাবার চেষ্টা করি। কিন্তু ‘শাপমোচন’, ‘পৃথিবী আমারে চায়’, ‘দেয়া নেয়া’ এবং ‘সোনার খাঁচা’ উত্তম কুমারের চারটি বয়সে চারটি ছবি।
উত্তমকুমার সুচিত্রা সেন দু’জনেই বাংলা সিনেমায় ‘অগ্নিপরীক্ষা’ উত্তর যে ১০টি বছর সোনার ফসলে ভরে রেখেছিলেন সত্যজিৎ বাবুর ‘পথের পাঁচালী’-র পর ৩৫ টা বছর লেগেছিল সেই সোনার ফসল তৈরি করতে।
এই সেই ছবি যা ১৯৫৭ সালের প্রেক্ষিতে সুপার ফ্লপ হয়েছিল। আসলে মানুষ ভাবে এক আর হয় আর এক। ৫৭ সালের সমগ্র ফিল্মি কেরিয়ার বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাব, একটি ছবি উত্তমকুমার আশাহত করেছিল তার মধ্যে ‘বড়দিদি’ অন্যতম।
উত্তমবাবুর কেরিয়ারে শেষ দিকে এমন হয়েছিল যে, ছবির প্লেয়ার কাস্টিং কী রকম হবে, পরিচালক প্রযোজকরা উত্তমবাবুকে জিজ্ঞাসা করতেন বা পরামর্শ নিতেন।
তিনি মহানায়ক হবেন বলে অভিনয় শুরু করেছিলেন তা কিন্তু নয়। যেটা করেছেন সেটাকে শ্রেষ্ঠত্বের জায়গায় নিয়ে গেছেন এ ধরনের একটা আত্ম প্রস্তুতি প্রত্যেক বছর নিয়ে নামতেন বলেই তাঁর ছবিগুলো মানুষের মনে দাগ কাটতো।
‘অগ্রগামী’ পরিচালক গোষ্ঠী একেবারে না হলেও অনেকটা সংযত প্রেমের দৃশ্য রূপায়ণে সফল হয়েছেন। প্রেমের দৃশ্যগুলোকেই মূলধন করা হয়েছে যদিও এ ছবিতে তবুও তার রূপটা আগেকার মতো উগ্র নেই।
ইতিহাস প্রমাণ করেছে, বম্বে থেকে মালা সিনহা যতই জাতীয় মুকুট মাথায় দিয়ে টলিউডের উত্তমকুমারের নায়িকা হোন না কেন, সুচিত্রা সেনের জায়গা আগের মতোই একই থাকবে।
১৯৫৬ সালে অনুভা-র আবেদন বাংলা ছবির বুকে অন্যরকম। তখন ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ছবিতে অনুভাকে উত্তমের সহ-নায়িকা হিসাবে মেনে নেওয়া দর্শকদের কাছে বেশ অসন্তোষের কারণ ছিল।
এ এমন এক ছবি নিয়ে আলোচনা, যার পরতে পরতে ইতিহাসের হাতছানি। উত্তম কুমার যে খড়কুটো ধরে মানুষের কাছে হালে পানি পেয়েছিলেন এ ছবির কাহিনি সে দিক দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার।
কয়েরিয়ারের একদম শেষ দিকে, ‘সূর্যসাক্ষী’ নামে একটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন যেটা ছিল তার বয়স এবং ভাবমূর্তির একেবারে বিপরীত মেরুতে।