আলাস্কার এই সব অসুবিধার সম্পর্কে আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম। এই সমস্ত কিছুকে চোখের সামনে দেখবো বলেই আমার আলাস্কা আসার এতো ইচ্ছা। চিরাচরিত আরামের মধ্যে বেশিদিন একটানা থেকে আমি কোনওদিনই খুব একটা শান্তি পাইনি। বারবার বেরিয়ে পড়েছি অজানার উদ্দেশ্যে।
রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা
পর্ব-৩২: আলাস্কায় কিন্তু কলকাতার মতো এত বড় বড় শপিংমল নেই, আবার যত্রতত্র গাড়ি সারানোর ব্যবস্থাও নেই
শহর থেকে দু’ মিনিট বাইরে গেলেই সেখানে পুরোপুরি কাঁচা রাস্তা। কোথাও কোথাও বা পাথুরে রাস্তা। কাজেই ওসব রাস্তায় ট্রাক বা ওই ধরণের শক্তপোক্ত গাড়িই ভালো চলে।
পর্ব-৩১: আলাস্কায় কারও সঙ্গে খানিকক্ষণ কথা বললেই আত্মীয়তার স্পর্শ পাওয়া যায়
২০২১ সালের মে মাস নাগাদ আমার প্রথম ডাক আসে ইউনিভার্সিটি অফ আলাস্কা-ফেয়ারব্যাঙ্কসে সহ-অধ্যাপকের ইন্টারভিউর জন্য। দ্বিতীয় পর্বের ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্যই আমাকে যেতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই যাতায়াতের সমস্ত খরচ বহন করে। যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যাপনার চাকরির এটাই নিয়ম।
পর্ব-৩০: এই রাত তোমার আমার…
দাম্পত্য জীবনের শুরুতে আমাদের দু’ জনের সব রকমের অনুভূতির প্রায় সবটুকুই তাকে ঘিরে। জানলা দিয়ে তার চুইয়ে পড়া স্নিগ্ধ আলোয় সময়ের হিসেবে ছাড়াই শুরু করা যায় ক্যান্ডেল লাইট ডিনার।
পর্ব-২৯: উপত্যকার ট্রথ-ইয়েদ্ধার দিকটা বেশ অন্ধকার, ধূসর মলিন
সূর্যের আলো এখানে অনেকটা তির্যক ভাবে পড়ে। কাজেই আলোটা কাছাকাছি পাহাড়ের ঢালে যেখানে সরাসরি পরে সেই খানে বেশ খানিকটা জায়গা হয়ে যায় রোদ ঝলমলে। আর বাকি জায়গাগুলো থাকে অপেক্ষাকৃত অনেকটাই অন্ধকার।
পর্ব-২৮: আলাস্কার আকাশ জুড়ে রঙের খেলা
এ যেন সত্যিই ‘প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা। আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে নিয়ে এসেছে ভাব মাধুরীর সঞ্জীবন’, আশৈশব আকাশবাণীতে বিরূপাক্ষের কণ্ঠে শুনে আসা মহালয়ার মাতৃবন্দনার এ যেন সত্যিকারের দৃশ্যায়ণ।
পর্ব-২৭: সে বার মেরুজ্যোতি দেখার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ভাষায় ব্যক্ত করা অসম্ভব
তড়িঘড়ি গিয়ে ফোনটা তুললাম। ফোন তোলা মাত্রই সে বলতে শুরু করলো। কোনও রকম সম্ভাষণ কিছু না করেই সটান আমাকে আর আমার সহধর্মিণীকে তক্ষুনি তৈরি হয়ে নিতে বললো। তারা নাকি ইতিমধ্যেই রাস্তায়। এখনই আসছে গাড়ি নিয়ে আমাদের তুলতে।
পর্ব-২৬: কেপি ইনডেক্স ৮ ছুঁলেই আলাস্কার আকাশে সে এক স্বর্গীয় অনুভূতি
আলাস্কার আকাশে মেরুজ্যোতি দেখা যাবে কিনা সেটা বোঝা যায় ‘কেপি ইনডেক্স’ বলে একটি ধ্রুবকের সাহায্যে। এটা আসলে সৌরঝড় পরিমাপ করার একটি ধ্রুবক। এর মান ‘০’ থেকে ‘৮’ এর মধ্যে পরিবর্তিত হতে থাকে। শূন্য হওয়ার অর্থ কোনও সৌরঝড় নেই। অর্থাৎ মেরুজ্যোতি দেখারও কোনও সম্ভাবনা নেই।
পর্ব-২৫: গোপন প্রেমিকার মতোই সে রোজ কিছুক্ষণের জন্য দেখা দিয়েই চলে যায়
মেরুজ্যোতিকে দেখা যেন এক অদ্ভুত অনুভূতি। যখন সে সর্পিল গতিতে মহাকাশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যায় সমস্ত বুকের মধ্যে যেন এক শিহরণ খেলে যায়। বিধাতার ওপরে হয়তো একটু অভিমান হয় তাকে সেই মন্দিরের গহীন কোণে আটকে রাখার জন্য।
পর্ব-২৪: মেরুজ্যোতি আলাস্কাবাসীর প্রেম
সূর্য একটি বিরাট আগুনের পিণ্ড যার মধ্যে বহু গ্যাসীয় পদার্থ এবং ধাতব পদার্থ ভৌত ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে আবার গলে যাচ্ছে। একে বলা যেতে পারে সৌর কার্যপ্রণালী বা সোলার অ্যাকটিভিটি।
পর্ব-২৩: আলাস্কার অন্ধকার আকাশে যখন সবুজ মেরুজ্যোতি বেরোয়, তখন সব কষ্ট-ভয় নিমেষে দূর হয়ে যায়
আলাস্কায় চূড়ান্ত শীতের কষ্ট বা অন্ধকার রাতের সমস্ত ভয় দূরে সরে যায় যখন ওই অন্ধকারের বুক চিরে চলে যায় উজ্জ্বল সবুজ মেরুজ্যোতি। আর ঠিক তখনই মনে হয় এই যাবতীয় ভয়, কষ্ট, অসহনীয়তা সব কিছু মেনে নেওয়া যায় তার জন্য।
পর্ব-২২: সেদিন গাড়ি থেকে নেমে যে দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছিলাম, তার অনুভূতির রেশ চিরকাল মনে থাকবে!
মাত্র দুই থেকে তিনফুট মতো দেখা যাচ্ছে সামনে। পিছনের কাঁচ দিয়ে তো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কাজেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি পুরো আন্দাজে। আর সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হল সবাই ওভাবেই চালাচ্ছে। অর্থাৎ সামনে পাশে কোন গাড়ি যাচ্ছে কেউ কিছু দেখতে পাচ্ছে না।
পর্ব-২১: ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গাড়ির উপর প্রায় এক-দেড় ফুট বরফ জমে গেল
খুব স্বাভাবিক একটা সাধারণ দিনও তুষারঝড়ে খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে কোন সময় ছাড়াই। সেই রকমই একটা ঘটনা ঘটেছিল আমাদের সঙ্গেও। আমাদের বলতে, আমি আর আর সহধর্মিনী। গত দু’ তিন দিন ধরেই আবহাওয়ার খবরে বলছে যে, একটা তুষার ঝড় আসছে।
পর্ব-২০: আলাস্কার শীতের রাস্তায় লুকিয়ে থাকে মরণফাঁদ
পার্মাফ্রস্টের ঝামেলাও কম নয়। আলাস্কার বেশকিছু জায়গায় রাস্তা চলে গিয়েছে পার্মাফ্রস্টের ওপর দিয়ে। অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের তলায় স্তরে স্তরে মাটি এবং শক্ত বরফ। রেইনবো-কেক যেরকম দেখতে হয়, সেইরম অনেকটা।
পর্ব-১৯: আলাস্কায় শীতকালের রাস্তায় গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ
এই সব অঞ্চল দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় মনে হয় যেন গিরিখাতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওই বরফ এতো বেশি হয় যে স্তুপ গুলোর নিচেটা রাস্তার মধ্যেও অনেকটা দখল করে নেয়। কোনওরকমে রাস্তার দুদিক থেকে দুটো গাড়ি যেতে পারবে।