আমি এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। হঠাৎ একটা জায়গায় গিয়ে রাস্তার ধারেই থরে থরে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করানো আছে ছোট থেকে মাঝারি মাপের অনেক বিমান। আমি আর কালক্ষেপ না করে সেখানেই গাড়ি ঢোকাতে গেলাম। ওমা, গাড়িটা দাঁড় করতে গিয়ে দেখি সে আরও মজার ব্যাপার। সেখানে গাড়ি আর বিমান পাশাপাশিই দাঁড় করানো আছে।
রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা
পর্ব-৪৬: আলাস্কার আকাশে অহরহ ব্যক্তিগত বিমান ওঠানামা করে
এখন দেশের অটো-টোটো বা গাড়ির প্রাচুর্যের সঙ্গে তুলনা করলেই বোঝা যাবে এখানে বিমান বা হেলিকপ্টারের প্রাচুর্য ঠিক কতটা। এই কথাটা আমি আগেই শুনেছিলাম, কিন্তু ওই ইন্টারভিউয়ের দিন চাক্ষুষ করার আগে ব্যাপারটা ঠিক উপলব্ধি করতে পারিনি। প্রথমত ইন্টারভিউয়ের সময় যখনই ওই ডিন মহাশয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় পরিভ্রমণে বেরিয়েছিলাম তখনই আকাশে দেখেছি ওই ব্যক্তিগত বিমানগুলো উড়ছে মুহুর্মুহু।
পর্ব-৪৫: বহু আলাস্কাবাসীর ব্যক্তিগত বিমান বা হেলিকপ্টার রয়েছে!
দু’ পাশের সারি সারি বরফ ঢাকা গাছ। তার মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা বরফে ঢাকা নদী। আর ওপর দিয়ে আমি চলে যাচ্ছি স্লেজে চেপে। মাথার ওপরে খেলা করছে মেরুজ্যোতি। যেন আমাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে স্বর্গের কাছাকাছি, যেখানে সান্তাক্লজ এখুনি আমার জন্য স্বর্গের দরজাটা খুলে দেবে।
পর্ব-৪৪: আলাস্কার স্যামন মাছ জগদ্বিখ্যাত
চেনা নদীর ওপরে অনেক রকম বিনোদন মূলক কার্যকলাপ হয়। তারমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল ‘রিভারবোট ডিসকভারি ক্রুজ’। গ্রীষ্মকালে একটা চারতলা বিশাল নৌকায় চাপিয়ে ফেয়ারব্যাঙ্কস থেকে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হয় চেনা নদীর মোহনায় যেখানে সেটা ট্যানানা নদীর সঙ্গে মিশেছে।
পর্ব-৪৩: ফেয়ারব্যাঙ্কস শহরকে ঘিরে রেখেছে ছোট্ট একটি নদী
এই সফেদ পর্বতমালা থেকেই উৎপন্ন হয়েছে চেনা নদী যাকে ঘিরে আমার আদিখ্যেতার সবটুকু। এখন উত্তরে সফেদ পর্বতমালা আর দক্ষিণে আলাস্কা পর্বতমালা পেরিয়ে দু’ দিক থেকেই ফেয়ারব্যাঙ্কস শহরের একদম কাছাকাছি চলে এলে দেখা যাবে যে এই শহর কয়েকটা ছোট ছোট পাহাড় দিয়ে ঘেরা।
পর্ব-৪২: মেরুজ্যোতির শহর ফেয়ারব্যাঙ্কস
অ্যাঙ্করেজ আর ফেয়ারব্যাঙ্কস তুলনা করতে গেলে সেই ছোটবেলায় শহর ও গ্রামের তুলনা করে রচনা লেখার কথা মনে পড়ে যায়। অ্যাঙ্করেজে সুযোগ সুবিধা অনেকটাই বেশি ফেয়ারব্যাঙ্কসের তুলনায়। আমাদের ভারতীয়দের দৈনন্দিনের দিক থেকে দেখতে গেলে সেখানকার সুবিধাগুলো আরও বেশি করে চোখে পড়ে।
পর্ব-৪১: আলাস্কার মূল বাণিজ্য কেন্দ্র অ্যাঙ্করেজ
অ্যাঙ্করেজ আর ফেয়ারব্যাঙ্কস তুলনা করতে গেলে সেই ছোটবেলায় শহর ও গ্রামের তুলনা করে রচনা লেখার কথা মনে পড়ে যায়। অ্যাঙ্করেজে সুযোগ সুবিধা অনেকটাই বেশি ফেয়ারব্যাঙ্কসের তুলনায়। আমাদের ভারতীয়দের দৈনন্দিনের দিক থেকে দেখতে গেলে সেখানকার সুবিধাগুলো আরও বেশি করে চোখে পড়ে।
পর্ব-৪০: আমার আলাস্কা ভ্রমণের কথা গোপনই রাখতে চেয়েছিলাম
আলাস্কা ঘুরতে এসেই আমি আমার বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ ইউনিভার্সিটি অফ আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস সম্পর্কে প্রথম জানতে পেরেছিলাম। তার আগে আমার ধারণাও ছিল না যে আলাস্কায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় আছে বলে।
পর্ব-৩৯: নির্জন প্রান্তরেই আমার মনের কথা শুনতে পাই
আমার পিএইচডি-র পড়াশোনার প্রথম দিকে, মানে যখন আমি সবে সবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি, তখনও পর্যন্ত আমি ভাবতাম যে, আমার গন্তব্য সানফ্রান্সিসকো, প্রযুক্তির পীঠস্থান। আমি কম্পিউটার সায়েন্স-এর ছাত্র। কাজেই আর পাঁচজনের মতোই আমি চাইতাম সিলিকন ভ্যালিতে কোনও একটি বড় সংস্থায় চাকরি করতে।
পর্ব-৩৮: এখান থেকেই দেখা যায় মধ্য রাতের সূর্য, আবার মেরুজ্যোতিও
প্রাগৈতিহাসিক থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক সবকিছুরই কি অদ্ভুত সংমিশ্রণ। আমার ভাবতেই বেশ ভালো লাগল যে এটাই পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যাদের নিজেদের রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র রয়েছে। আবার তারই আনাচেকানাচে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সাক্ষ্য পড়ে রয়েছে।
পর্ব-৩৭: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র রয়েছে
নাসা-সহ দেশের বিভিন্ন সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করে, যেগুলো ছোট ছোট কৃত্রিম উপগ্রহ (আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট) বয়ে নিয়ে গিয়ে মহাকাশে পৃথিবীর চারিদিকে বিশেষ কিছু কক্ষপথে তাদের বসিয়ে দেয় বিবিধ রকমের তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে।
পর্ব-৩৬: বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি পাহাড়ের ঢাল বরাবর নীচ থেকে ওপরে উঠে গিয়েছে
ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ ছাড়িয়ে পাহাড়ের ওই চূড়া থেকে পাহাড়ের উল্টো দিকে নেমে গিয়েছে বেশ কয়েকটা স্কি করার ট্রেইল। ভূ-তাত্বিক বিভাগের দিকে হাঁটতে হাঁটতে একটি ভবন বা বিল্ডিংয়ের ওপরে দেখি এক বিশাল বড় গোল মতো অ্যান্টেনা।
পর্ব-৩৫: ডিন জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঘুরতে ঘুরতেই আমার সঙ্গে ইন্টারভিউ পর্ব শেষ করবেন!
ডিন মহাশয় বেশ আমুদে লোক। খুব হইচই করতে ভালোবাসেন। নিজের একটা গানের দল বা ব্যান্ডও আছে। তার সঙ্গে সাক্ষাৎকার শুরু হতেই তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি যদি ক্লান্ত না থাকো তাহলে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়টা ঘুরতে ঘুরতেই তোমার সঙ্গে কথা হতে পারে।
পর্ব-৩৪: আমি হেঁটে চলেছি কোনও এক আলাস্কান এস্কিমো যাযাবরদের সঙ্গে
নদীর ওপাশটা বেশ ঘন বনভূমি। সেখানে চিরহরিৎ কনিফার আর পর্ণমোচী বার্চ এবং অ্যাস্পেন, সবকিছুরই সমান সমারোহ। তার সামনেটায় বড় করে পাথর কেটে সেগুলোকে ইংরেজি হরফের মতো বানিয়ে লেখা আছে ‘লাভ আলাস্কা’।
পর্ব-৩৩: আলাস্কাই আমার হাতের সামনে থাকা অন্ধের যষ্টি
আলাস্কার এই সব অসুবিধার সম্পর্কে আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম। এই সমস্ত কিছুকে চোখের সামনে দেখবো বলেই আমার আলাস্কা আসার এতো ইচ্ছা। চিরাচরিত আরামের মধ্যে বেশিদিন একটানা থেকে আমি কোনওদিনই খুব একটা শান্তি পাইনি। বারবার বেরিয়ে পড়েছি অজানার উদ্দেশ্যে।