সুবল অবাক হল, বিরক্তও। কে তাকে ডাকে এমন অসময়ে? কর্মচারীদের এখানে সাড়ে ছটার মধ্যে উঠে রেডি হয়ে যেতে হয়। আর এখন তো পাঁচটা বাজে মাত্র।

সুবল অবাক হল, বিরক্তও। কে তাকে ডাকে এমন অসময়ে? কর্মচারীদের এখানে সাড়ে ছটার মধ্যে উঠে রেডি হয়ে যেতে হয়। আর এখন তো পাঁচটা বাজে মাত্র।
ঘড়ির কাঁটা দেখল শাক্য। বেশিক্ষণ হয়নি। আশা করি ফাইলগুলি পড়ে ফেলতে পারবে আজকের মধ্যেই। সে আর সময় নষ্ট না করে আবার ফাইলে ডুবে যায়।
নুনিয়া কুল খাচ্ছিল। কাঁচা কুল। অনেকখানি নুন সে চার্চের রসুই থেকে চেয়ে এনেছে। রসুইয়ের ধীরাজ স্যামুয়েল মহাপাত্র তাকে খুব ভালোবাসে।
সাম্প্রতিককালে কালাদেওর কীর্তি বলে যা পরিচিত, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, মৃতদেহর মুখের প্রতিই তাঁর আক্রোশ বেশি। অনেক ক্ষেত্রে বডিতে অন্যান্য চিহ্ন দেখে সে কারণেই মৃতদেহ সনাক্ত করতে হচ্ছে।
অরণ্যের আফসোস হচ্ছিল যে, তাদের টিমে একজন দক্ষ ক্যামেরাম্যান থাকা উচিত ছিল। তাহলে নিজেকে এক্সপোজ করতে সুবিধা হত। এ ভাবে ফ্রন্ট মোডে যতই ভিডিও শুট করা হোক না কেন, তা যে তেমন মানের হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
অস্থির লাগছিল সত্যব্রতর। যে পারত এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে, সেই গোবিন্দই তো থেকেও নেই। তাহলে? কার কাছে যাবেন তিনি?
শাক্য আর কী করে? আর বেশি দেরি না করে সে টেনে নিল সাপ্তাহিক জাগরণের কাটিং—কালাদেওর ইতিহাস!
রিমিতার চোখ বন্ধ, মাথার চুল ছড়িয়ে আছে, কিছু মুখের উপর এসে পড়েছে। গায়ে একটা সাদা রাতপোষাক। পূষণ জানে তার নীচে কিছু নেই, কোনও অন্তর্বাস কিংবা আর কিছু।
পুত্রশোক খুব বড় শোক। কিন্তু সত্যব্রত যখন বলল, এক সপ্তাহ আগেই বুধনের মৃত্যু হয়েছে, তখন যে প্রশ্নটা সকলকে হতবাক করে দিল, তাহলে এতদিন বুধন হিসাবে যে মারুতির ঘরে ফিরে এসেছিল সে কে? কী তার উদ্দেশ্য?
একেজি বললেন, “আমার অনুমান-শক্তি বলছে, কেসটা সাধারণ নয়। অনেক জট আছে, তার জন্য ইতিহাস-ভূগোলও ঘাঁটতে হতে পারে!”
গোবিন্দ বলল, “আমি স্যার এক্ষুনি হরিপদকে নিয়ে যাচ্ছি খোঁজ করতে। তবে স্যার বুধনের বাড়ি তো আমি চিনি না। মাস্টারবাবুর বাড়ি চিনি।
উঠে পড়েছিল শাক্য। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। শাক্য ধরেই নিয়েছিল, দিদি। সে ফোন তুলে বলতে যাবে, “আসছি”, তার আগেই স্ক্রিনে দেখল ভেসে উঠেছি একেজি-র নাম।
হেলথ সেন্টার থেকে চার্চের দূরত্ব কম নয়। মিনিট পঁচিশেক তো বঠেই। এই ভরা সাঁঝের বেলা নুনিয়া সেখানে ফিরে যাবেই বা কীভাবে? সে চেঁচিয়ে ডাকল, “নুনিয়া? তুই এখানে?”
অরণ্য আর তৃধাও কৌতূহলী হয়ে সেদিকে তাকিয়েছিল। রিসর্টে পুলিশ? কোনও অপরাধীর খোঁজে, না কি মধ্যারাতে ফুর্তিফার্তার উদ্দেশ্যে, সেটাই বুঝতে চেষ্টা করল তারা।
মাস্টারবাবু বললেন, “সপ্তাহদুয়েক আগে বুধন একবার রাতের বেলা বেরিয়ে দু’দিন ফেরেনি। বাড়ির লোক পাগলের মতো খোঁজাখুঁজি করছিল। কিন্তু কোথাও তার দেখা পাওয়া যায়নি।