কাপাডিয়া বললেন, “দেখুন, আমি নানা ঘাটের জল খেয়ে এখানে এসে ভিড়েছি। এই জায়গাতেও যে বেশি দিন স্টে করব, তা কিন্তু নয়। সিল না লাগলে অন্য কোথাও ভালো অফার পেলে নির্দ্বিধায় চলে যাব। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, মালিক আমাকে বেওসার তিরিশ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার করেছেন।”

কাপাডিয়া বললেন, “দেখুন, আমি নানা ঘাটের জল খেয়ে এখানে এসে ভিড়েছি। এই জায়গাতেও যে বেশি দিন স্টে করব, তা কিন্তু নয়। সিল না লাগলে অন্য কোথাও ভালো অফার পেলে নির্দ্বিধায় চলে যাব। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, মালিক আমাকে বেওসার তিরিশ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার করেছেন।”
হরিপদ বলল, ‘আমি ফোনের দিকেই চোখ পেতে বসেছিলাম। আমার মন বলছিল, আপনি ফোন করবেন। তারপর দেখি মিসড কল করলেন। আমি আর এক মিনিটও দেরি করিনি! যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাড়ি নিয়ে ছুটে এসেছি।”
রিমিতা বলল, “কাল পূষণ একটা গল্প শোনাচ্ছিল বটে। সেই কালাদেওই না কি বাস রাস্তায় সেই লোকটিকে মেরেছে। সে না কি উপড় হয়ে শুয়ে শুয়ে লোকটির মাথা চিবুচ্ছিল, এই অবস্থায় বাসটি গিয়ে পড়ে।
পূষণ বলল, “আমি কিন্তু অনিল বা সুবল কাউকেই চিনি না, আগেই বলে দিলাম। তবে চেনা-অচেনা যে-ই হোক না কেন, এমন ভয়াবহ মৃত্যু সত্যিই অনভিপ্রেত!”
কোনওদিন ভাবেনি অনিলদের সঙ্গে আর সে কথা বলবে। কিন্তু…! নাহ্, এখন সে এসব আর ভাবতেও চায় না। এখন তাকে নিজেকে সামলে চলতে হবে। উঠে পড়েছিল সে। চোখে মুখে জল দেবে কিংবা শাওয়ারের তলায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। পাপ-পুণ্য সব জলে ধুয়ে যায়— সে বিশ্বাস করে।
সত্যব্রত ফিরে আসছেন। এমন সময় মনে হল, কেউ অতি সন্তর্পণে শুকনো পাতা মাড়িয়ে পা টিপে টিপে তাঁকে অনুসরণ করছে। তবে রাস্তা দিয়ে নয়। সে যাচ্ছে রাস্তার সমান্তরালে জঙ্গলের মধ্যে গাছপালার আড়ালে আড়ালে।
সুদীপ্ত শাক্যর দিকে তাকাল। শাক্য তাকিয়ে আছে উন্মেষার দিকে। একসময় নিজেই নীরবতা ভঙ্গ করে বলল, “উন্মেষা, আপনি কি কোনও কারণে আপসেট? কাঁদছিলেন?”
মঙ্গল মাহাতোর দিকে তাকালেন সত্যব্রত। লোকটার বয়স হয়েছে। পাকানো দড়ির মতো চেহারা। দেখেই মনে হয় গাঁজা-মদে সুযোগ পেলেই চুর হয়ে পড়ে থাকে। চেহারা অমার্জিত, গুটকা খাচ্ছে।
পাতি গোয়েন্দার স্পর্ধা দেখে অবাক হয়ে গেল অঞ্জন। নাহ্, এখান থেকে বেরিয়েই তার ল-ইয়ারকে ফোন করতে হবে। এখন সেই চেষ্টাই করছিল অঞ্জন।
অচেনা লোকটি কিছুক্ষণ আগে বলে গেছে, সে অপেক্ষা করবে। এখানে চারিদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো। চার্চে এত সুরক্ষার ব্যবথা কেন, তা সত্যব্রত বুঝলেন না।
অরণ্যের অবস্থা দেখে তৃধা নিজেই দরজা বন্ধ করেছিল। তারপর অরণ্যের কাছে এসে তার থরথর করে কাঁপতে থাকা দেহকে নিজের আলিঙ্গনে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে থাকার পরে জিজ্ঞাসা করেছিল, “কী বলছিলে? কী হয়েছে অনিলের?”
ফাদার আন্তোনিওর মুখ গম্ভীর দেখাচ্ছিল। একটু আগেও কিন্তু তিনি বেশ হাসিখুশিই ছিলেন। বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা করেছিলেন সত্যব্রতকে।
সুদীপ্ত ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখল, শাক্য সিংহ নামের অফিসারটি একমনে তাঁর নোটপ্যাডে কিছু লিখছেন। সে দ্বিধাগ্রস্ত পায়ে তার জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে গিয়ে বসলো।
অনিলের বডিটা উপুড় হয়ে পড়েছে। পিছন থেকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে বডির যেমন পজিশন হওয়ার কথা তেমন কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে যে স্পাজম্ হবে, তার দরুণ বডির পজিশন যেমনটি হওয়ার কথা তেমন নয়।
রিমিতা তাড়াতাড়ি একটা চাদর জড়িয়ে নিয়েছিল। ব্রা-প্যান্টিতে সে বসে বসে সৌন্দর্যচর্চা করছে, এটা সবাইকে দেখানোর বিষয় নয়। পূষণ দরজা খুলে দিল তারপর। ততক্ষণে রিমিতা নিজেকে ঢেকে নিয়েছে মোটের উপর।