অরণ্যের অবস্থা দেখে তৃধা নিজেই দরজা বন্ধ করেছিল। তারপর অরণ্যের কাছে এসে তার থরথর করে কাঁপতে থাকা দেহকে নিজের আলিঙ্গনে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে থাকার পরে জিজ্ঞাসা করেছিল, “কী বলছিলে? কী হয়েছে অনিলের?”

অরণ্যের অবস্থা দেখে তৃধা নিজেই দরজা বন্ধ করেছিল। তারপর অরণ্যের কাছে এসে তার থরথর করে কাঁপতে থাকা দেহকে নিজের আলিঙ্গনে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে থাকার পরে জিজ্ঞাসা করেছিল, “কী বলছিলে? কী হয়েছে অনিলের?”
ফাদার আন্তোনিওর মুখ গম্ভীর দেখাচ্ছিল। একটু আগেও কিন্তু তিনি বেশ হাসিখুশিই ছিলেন। বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা করেছিলেন সত্যব্রতকে।
সুদীপ্ত ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখল, শাক্য সিংহ নামের অফিসারটি একমনে তাঁর নোটপ্যাডে কিছু লিখছেন। সে দ্বিধাগ্রস্ত পায়ে তার জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে গিয়ে বসলো।
অনিলের বডিটা উপুড় হয়ে পড়েছে। পিছন থেকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে বডির যেমন পজিশন হওয়ার কথা তেমন কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে যে স্পাজম্ হবে, তার দরুণ বডির পজিশন যেমনটি হওয়ার কথা তেমন নয়।
রিমিতা তাড়াতাড়ি একটা চাদর জড়িয়ে নিয়েছিল। ব্রা-প্যান্টিতে সে বসে বসে সৌন্দর্যচর্চা করছে, এটা সবাইকে দেখানোর বিষয় নয়। পূষণ দরজা খুলে দিল তারপর। ততক্ষণে রিমিতা নিজেকে ঢেকে নিয়েছে মোটের উপর।
সত্যব্রতকে চার্চের অনেকেই চেনে। হেলথ্ সেন্টারের ইনচার্জ ‘ডক্টরবাবু’ বলেই লোকে বেশি করে চেনে। কখনও কখনও কেউ চার্চে দেখাতে অপারগ হলে কিংবা চার্চের চিকিৎসায় রোগ-অসুখ না সারলে হেলথ্ সেন্টারে দেখাতে আসে।
শাক্য বিরক্ত হচ্ছিল। এই অফিসার সম্পর্কে সে খোঁজখবর নিয়েছে, একেবারে নিষ্কর্মা। বসে বসে ছাইভস্ম কবিতাচর্চা করেন। আর কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে সেকেন্ড অফিসারকেই পাঠিয়ে দেন বেশিরভাগ সময়।
অদ্ভুত এক ব্যক্তিত্ব আর মেলানকলিক এক সম্মোহিনী শক্তি তার চারদিকে একটা অদৃশ্য বলয় তৈরি করে রাখে। আগুনের মতো। মনে হয়, সেই বলয় পার হওয়া অসম্ভব।
অভিষেক অবাক হলেন। এই আজকালকার ছেলে-ছোকরারা যারা এই লাইনে আসছে, তারা সবাই নিজেদের ব্যোমকেশ বক্সী, কিরীটী রায় কিংবা ফেলুদা বলে মনে করে। কাজে বেলায় অষ্টরম্ভা।
অজয় বাবু গম্ভীর মুখে বললেন, “যদি না, কেউ আগেই ওনার স্কাল ভারি কিছুর আঘাতে চুরমার করে দিয়ে ওপর থেকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে। তবেই এভাবে স্কাল গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যাওয়া পসিবল!”
শাক্য বলল, “গণেশ দাঁ। স্থানীয় ব্যবসায়ী। মশলার আড়ত আছে। কলকাতা থেকে মাল কিনে ফিরছিলেন। সঙ্গে অনেক টাকা ছিল। প্রায় হাজার চল্লিশের মতো।
বছর দশেক আগে থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার কারণও আছে। এই অঞ্চল এবং অন্যান্য অঞ্চলের বেশ কয়েকজন ওই কুয়ায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। সবার পরিচয়ও জানা যায়নি।
পূষণ বলল, “স্নান কে করবে এই সাত-সকালে? বললাম না, আমরা সেক্স করতে যাচ্ছি! ওয়াশরুম সেক্স এখন আর ওই সব স্নান-টানের কথা ভেবো না, এখন টাইম অনলি ফর ফান-এর!”
রামদাস চলে যায় দ্রুত। সুদীপ্তের মুখ-চোখের চেহারা, উত্তেজনা দেখে সে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছে। যদিও সে জানে, পারলে এই থানার মধ্যে সুদীপ্তই পারবে রহস্যভেদ করতে।
শাক্য গম্ভীর ভাবে বলল, “জটিল তো বটেই! কেস কালাদেও এতটা সহজ কোনও মিস্ট্রি নয় যে, রাতারাতি তার সমাধান করে ফেলা যাবে।