শ্রীরামকৃষ্ণ জানতেন, এখন তাঁকে কেউ বুঝবে না। তাই বলেছেন “কালে বুঝবে। বাউলের দল এলো গেল, কত নাচলে গাইলে, কেউ চিনল না।”

শ্রীরামকৃষ্ণ জানতেন, এখন তাঁকে কেউ বুঝবে না। তাই বলেছেন “কালে বুঝবে। বাউলের দল এলো গেল, কত নাচলে গাইলে, কেউ চিনল না।”
রামকৃষ্ণ নামে এক ফেরিওয়ালা রাস্তায় ফেরি করতে বেরিয়েছে। অদ্ভুত লোক বটে! ঝুড়িতে তাঁর খাঁটি সোনার সব গহনা—জ্ঞান, ভক্তি, বিবেক, বৈরাগ্য, আনন্দ, সমাধি। সেই অমূল্য সব গহনা সে বিনা পয়সায় দিতে চায়। কিন্তু নেবার লোক নেই।
রবীন্দ্রনাথ সংসারী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মন, সব কাজের মধ্যেও সবসময়, উত্তর-মুখ কম্পাসের কাঁটার মতো, ঈশ্বরের দিকে ঘুরে আছে। একথা প্রমাণ হয় তাঁর প্রতিদিনের জীবনচর্যা অনুসরণ ও সংগীত সহ চিঠিপত্র, প্রবন্ধ ও বিবিধ রচনাবলী পড়লেই।
শ্রীরামকৃষ্ণ (কথামৃত : ১-১-৫) সব কাজ করবে কিন্তু মন ঈশ্বরেতে রাখবে। স্ত্রী, পুত্র, বাপ, মা, সকলকে নিয়ে থাকবে ও সেবা করবে। যেন কত আপনার লোক। কিন্তু মনে জানবে যে তারা তোমার কেউ নয়।
রবীন্দ্রসংগীত রবীন্দ্রনাথ সংসারে থেকেও ঈশ্বরের আনন্দ পেয়েছিলেন বলেই, যৌবনে মানুষ যখন সাংসারিক আনন্দে একেবারে মেতে থাকে, তখন তাঁর কলম থেকে বের হয়েছে এইসব কালজয়ী গান।
ভারতের দুই মহামানব—শ্রীরামকৃষ্ণ ও রবীন্দ্রনাথ। একজন নররূপী নারায়ণ, অবতাররূপে পূজিত, অন্যজন বিশ্বকবি হিসেবে বন্দিত। দু’ জনেরই অলোকসামান্য জীবন, কর্ম ও বাণী আমাদের চিন্তা ও কল্পনাকে বারবার মুগ্ধ এবং বিস্মিত করে।
শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর ভক্তদের মধ্য থেকেই উদাহরণ দিয়েছেন নিরাকার ও সাকারবাদী উপাসকের। শ্রীরামকৃষ্ণ “আশ্চর্য দর্শন সব হয়েছে। অখণ্ড সচ্চিদানন্দ দর্শন। তার ভিতর দেখছি, মাঝে বেড়া দেওয়া দুই থাক।
রবীন্দ্রনাথ দীর্ঘ চল্লিশ বছর তাঁর শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়টিকে লালন-পালন করার সময় পেয়েছিলেন, আর শ্রীরামকৃষ্ণ মাত্র বছর আটেক।
কথামৃতে আমরা দেখি কথামৃতকার শ্রীম, যাঁকে শ্রীরামকৃষ্ণ ‘মাস্টার’ বলেও সস্নেহ সম্বোধন করতেন, প্রথম প্রবেশ করছেন শ্রীরামকৃষ্ণের আনন্দ-পাঠশালায়।