অবনীন্দ্রনাথের বেশিরভাগ বই-ই শিশুসাহিত্যের পর্যায়ভুক্ত। ছোটদের নিতান্ত ছোট ভেবে অবজ্ঞায়, অবহেলায় লেখা নয়, রীতি মতো দরদ দিয়ে, আন্তরিকতার সঙ্গে লেখা।

অবনীন্দ্রনাথের বেশিরভাগ বই-ই শিশুসাহিত্যের পর্যায়ভুক্ত। ছোটদের নিতান্ত ছোট ভেবে অবজ্ঞায়, অবহেলায় লেখা নয়, রীতি মতো দরদ দিয়ে, আন্তরিকতার সঙ্গে লেখা।
আজ আমরা ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের এমন দু’জন নক্ষত্রকে নিয়ে আলোচনা করব যা, সারস্বত সমাজে ব্যতিক্রম পদবীভূক্ত। স্বর্গীয় দ্যুতিভরা মুখের হাসিতে দু’জন গন্ধর্বের একসঙ্গে একটা ছবিও পাওয়া যায় না।
‘নায়ক’ ছবির সারস্বত সম্পদের প্রতি শতকরা একশো ভাগ শ্রদ্ধা রেখেই বলা যায়, প্রভাত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘বিচারক’ ছবিটিও উত্তম কুমারের জাত চেনানোর জন্য যথেষ্ঠ।
অ্যালিয়াস উইট বলেছিলেন, ‘অভিনয় জিনিসটা আসলেই যাদুর মতো। বেশভূষা এবং আচরণ পরিবর্তন করেই আপনি পুরোপুরি নতুন একজনে পরিবর্তন হয়ে যেতে পারেন।’
সম্পাদকীয়র পাতায় পাতায় আত্মকথনে মগ্ন হয়েছেন ঋতুপর্ণ কখনও অত্যন্ত সচেতনে আবার কখনও অসচেতনে। প্রান্তিক একাকী এক মানুষের নিঃসঙ্গতার উদযাপন ধরা পড়েছে তাঁর দিনলিপির পাতায়, সাহিত্যগুণে যা কোনও অংশে কম নয়।
কাজী নজরুল ইসলাম যে কয়েকটি নারী জাগরণের গান বেঁধেছেন, বাংলা সাহিত্যে ও সংগীতে তা অমূল্য সম্পদ হয়ে রয়ে যাবে।
‘কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে, সে তো আজকে নয়, সে আজকে নয়!...’ আজ রবীন্দ্রজয়ন্তী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে চারদিকে সাজো সাজো রব। আপামর বাঙালির বড় প্রাণের উৎসবে আজ। এবছর আরও আনন্দের কারণ দু’বছর পর সকলে আবার আনন্দ উৎসবে শামিল হতে পেরেছে। দ্বারকানাথ ঠাকুর লেন যেখানে রবীন্দ্র সরণীতে মিশেছে, সে পথটার সকালবেলার ছবি আজ অন্যরকম। ‘অশনি’ সংকেত উপেক্ষা করেই ভোরবেলা থেকে দলে দলে রবীন্দ্রানুরাগী মানুষের ঢল নেমেছে এ পথে। বেল জুঁইয়ের গন্ধে ম ম করছে এ পথ। সাদা শাড়ি, পাঞ্জাবির সাজ চলতে চলতে থমকে...
নিজের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ যত গান রেকর্ড করেছিলেন, তার তালিকা দেখলে বোঝা যায়, সেইসব গানের অধিকাংশই আজ বিলুপ্ত। ফলে, যে রবীন্দ্রনাথকে আমরা রেকর্ডে শুনেছি, তার বাইরেও…
ছিন্নপত্রাবলীতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন— 'ইচ্ছে করে জীবনের প্রত্যেক সূর্যোদয়কে সজ্ঞানভাবে অভিবাদন করি এবং প্রত্যেক সূর্যাস্তকে পরিচিত বন্ধুর মতো বিদায় দিই।' তাঁর জন্মদিন কাছাকাছি এলেই কবিকথিত এই আপাতসরল আকাঙ্ক্ষার কথাটি মনে পড়ে যায়। তাঁর বহুতর জীবনকথায় এতদিনে আমরা সকলেই জানি, আশি বৎসরের সেই অতুল্যপ্রভ রবিকিরণের দিনগুলির প্রতিটিই শুরু হত সূর্য জাগানিয়া হয়ে। রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলেছেন সূর্য উঠে গিয়েছে অথচ তিনি ওঠেননি এমনটা কখনও হয়নি। শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণ প্রাঙ্গণে বিচিত্র নান্দনিকতায় নির্মিত তাঁর বাসভবনগুলির...
‘…সংসার গহনে নির্ভয় নির্ভর নির্জনসজনে সঙ্গে রহো চিরসখা হে, ছেড়ো না মোরে ছেড়ো না…’ ‘চিরসখা’ তো আর সহজে সকলকে বলা যায় না। তাকেই বলতে পারি, যে একাত্ম করে দিতে পারে…
রামায়ণ ও মহাভারত–এই দুটি প্রাচীন মহাকাব্যের নৃত্যনাট্যরূপে উপস্থাপন ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার শিল্পকলাকে এক সূত্রে গ্রথিত করেছে।
মনে পড়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে প্রবেশ পর্বের কথা। বিভাগে অনেক অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, সকলেই খুব ভালো। সুন্দর পরিবেশ, সঙ্গে শেখার আনন্দ। এগিয়ে চলল দিন। তারপর এল দ্বিতীয় ষাণ্মাসিকের প্রথম ক্লাসের সেই দিনটি—২ জানুয়ারি। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলেন এক অধ্যাপিকা, আগে তাঁর ক্লাস পাইনি, আমার কাছে একদম নতুন। ব্যক্তিত্বপূর্ণ, গম্ভীর অথচ সাবলীল ভঙ্গিতে সুন্দর পড়ানোর সঙ্গে মিশে থাকা মিষ্টি হাসি। সেইদিনই সম্ভবত আমার কাঁচা মনে একটি দাগ কাটলেন তিনি। যত দিন যায় সেই দাগ একটু একটু করে গাঢ় হতে থাকে। আস্তে আস্তে আমারও সেই কম কথা...
বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। পৃথিবীর যেখানে যত বাঙালি আছেন, তারা সবাই উৎসবমুখর হয়ে বাংলা নববর্ষ পালন করেন। এই দিনটি যেমন আনন্দ উল্লাসের তেমনি পরস্পর কুশল বিনিময় ও কল্যাণ কামনার দিন। সারা বছরের সমস্ত গ্লানি মুছে দিয়ে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব চুকিয়ে প্রতি বছর আসে পয়লা বৈশাখ। নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখ মাসের প্রথম দিনেই গ্রামে-গঞ্জে শহরে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে। মেলা চলে বৈশাখ জুড়ে। এই মেলা বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য। পয়লা বৈশাখ ব্যবসায়ী মহলে হালখাতার দিন। 'হাল' শব্দটি সংস্কৃত এবং ফরাসি দু' ভাষাতেই পাওয়া যায়।...
এই তো মেরেকেটে বছর চল্লিশের ওপারেই এমন হাঁসফাঁসানো সময়কালে কমলাখামে লালচে 'পহেলা বৈশাখ' লেখা নেমন্তন্ন পত্তরগুলো যেন নতুন করে আশা জাগানিয়া হয়ে দেখা দিত। তাবৎ বাঙালিমন—'হে নূতন দ্যাখা দিক আরবার'— রকমে সানাইয়ের পোঁ ধরত নিজ নিজ সাধ্যমতো। সে নেমন্তন্ন পত্তরের বকলমে আসলেই হাতেগরম যা পাওয়া যেত তা হল হালখাতার নামে সান্ধ্য বিনোদনের ছুতো। পয়লা বোশেখের সকালবেলা লুচি ছোলার ডালের পরে পরেই 'পড়তে বোস'—জাতীয় তালকাটানো দুঃখটা হজম করা তো একমাত্র সন্ধেবেলা ওই দোকানে দোকানে ঘুরতে পাব ভেবেই। নতুন ছিটের ফ্রকের কড়কড়ানি অগ্রাহ্য করে...
'নিশি অবসানপ্রায়, ওই পুরাতন বর্ষ হয় গত। আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন করিলাম নত।' সৌর বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বছরের প্রথম মাস হিসেবে গণ্য করা হয় বৈশাখকে। চক্রাকারে আমাদের ঋতুসমূহের পরিবর্তন হয়। বছরের শেষদিন চড়ক নামই সেই বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের ইঙ্গিত দেয়। বৈশাখ আসে নতুনের ডাক নিয়ে। নতুনকে বরণ করার জন্য আমরা সকলেই উদগ্রীব হয়ে থাকি। অনেকেই মনে করেন বাঙালিদের কাছে নববর্ষ মানে শুধুই নতুন আর্থিক বছরের সূচনা, ব্যবসায়িক লেনদেন ও খাওয়াদাওয়া। কিন্তু শুধু কি তাই? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় 'সত্য আলোক ও...