শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

গল্পের ঝুলি

ছোটদের গল্প: দায়িত্ব

ছোটদের গল্প: দায়িত্ব

একদিন একটা বুলবুলি পাখি বহু দূর থেকে উড়তে উড়তে এসে আমাদের জারুল গাছে বসল। অচেনা জায়গা, সূর্য ডুবে যাওয়ায় বিকেল শেষের কালসাঁঝি নেমে আসছে। এ সময় তো আর কোথাও যাওয়া চলে না। ছোট্ট বুলবুলি তখন একটা শক্তপোক্ত আশ্রয় খুঁজতে লাগল। একটু দূরেই একটা বড় গাছের থেকে পাখিদের হইহই শুনতে পেয়ে বুঝল, ওটাই সব পাখিদের থাকার জায়গা। বুলবুলি তখন উড়ে গিয়ে ওই গাছেরই একটা মাঝারি ডালে বসল। নতুন পরিবেশে এত বন্ধুদের কিচিরমিচির বেশ লাগছিল বুলবুলির। সন্ধে আর একটু বাড়তেই পাখিরা যে যার বাসায় ঘুমিয়ে পড়ল। বেশিরভাগ পাখি তো রাতে দেখতে পায় না, তাই সূর্য...

read more
ছোটদের গল্প: রূপসীর চোখে

ছোটদের গল্প: রূপসীর চোখে

বাজারে মাছ-মাংসের দোকানও কম বসে৷ হোটেল রেস্টুরেন্ট সব বন্ধ৷ কুকুরগুলো অনেকদিন কিছু খেতে পায়নি, তাই তারা ক্ষুধার্ত হয়ে পাগলের মতো জ্যাম্ত বিড়ালের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে৷

read more
অণুগল্প: মানুষের মূল্য

অণুগল্প: মানুষের মূল্য

রোজ বিকেলে বড় ব্যালকনিতে মাসিমাকে হুইল চেয়ারে করে এনে বারান্দায় বসিয়ে দেয় লীনা। হঠাৎ স্ট্রোক হয়ে কথা অস্পষ্ট হয়ে গেছে মাসিমার । বড়মেয়ে রোজ বিকেলে ফোন করে। সামনের বাগানটা দেখতে দেখতে মাসিমা মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করতে থাকেন। এসময় চোখে মুখে কী এক আনন্দ ফুটে ওঠে। লীনা ম্যাসাজ করে দিতে দিতে কত গল্প শোনায়। যোগ সেন্টারে ম্যাডাম বলতেন, পেশেন্টের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করতে। মাসিমার দুই মেয়ে, এক ছেলে। লীনা কিছু একটা কাজ খুঁজে চলছিল স্বামী জীবেশ মারা যাবার পর। ছেলেকে পাড়ার স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে...

read more
গল্প: মৃন্ময়ী

গল্প: মৃন্ময়ী

চিত্রভাস তার ফটোগ্রাফার বন্ধু অর্পণকে নিয়ে ইটন্ডা পৌঁছায় প্রায় সকাল এগারোটায়। গত কয়েকমাস আগে বোলপুর এসে শুনেছিল ইটন্ডা গ্রামে বিষ্ণুপুরের আদলে নির্মিত টেরাকোটা মন্দিরের কথা। কলকাতায় ওদের বাংলা ম্যাগাজিন 'বাংলার ঐতিহ্য' দু' বছর হল বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। চিত্রভাস প্রথম থেকেই এই ম্যাগাজিনের সঙ্গে যুক্ত। ওরা ইটন্ডায় এসেছে টেরাকোটার মন্দিরগুলোর ইতিহাস ও ছবির প্রয়োজনে। চিত্রভাস 'এনসিয়েন্ট হিস্ট্রি'-তে এমএ করার পর 'জার্নালিজম' নিয়ে পড়েছে। লেখালেখির জন্য নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ায়, সঙ্গে বন্ধু অর্পণকেও নেয় ছবি তোলার জন্য।...

read more
ছোটদের গল্প: বন্দিমুক্তি

ছোটদের গল্প: বন্দিমুক্তি

সকাল সকাল মায়ের ডাকে টুপুরের ঘুম ভেঙে গেল, কিন্তু মায়ের স্কুল পাঠানোর তো কোনও তাড়াই নেই। বাড়ির বড়রা এত সকাল সকাল টিভি নিয়েই ব্যস্ত। অগত্যা টুপুর নিজেই স্কুলের জামাটা যেই পরতে যাবে অমনি মা চেঁচিয়ে বলে, ‘টুপুর আজ থেকে স্কুলে যাবে না৷’ থতমত টুপুর বলল, ‘কেন মা? আমি তো তোমার সব কথা শুনেছি... বন্ধুদের সাথে দেখা হবে কীভাবে?’ ‘আরে বাবা, শুনছিস না স্কুল তো বন্ধ, কোনও বন্ধুই স্কুলে যাবে না৷’ ‘আমি পার্কেও যাব না?’ ‘না মা, কোথাও যাবে না, একটা অচেনা দৈত্য আমাদেরকে আক্রমণ করেছে, তাই এখন আমাদের বাড়িতেই থাকতে হবে৷’ মন খারাপ করে...

read more
অণুগল্প: দানব

অণুগল্প: দানব

সরকারি আধিকারিক হিসাবে দিন সাতেক হল জঙ্গলের কাছাকাছি নদীর ধারের বাংলোতে উঠেছি। হাতে জম্পেশ একটা কেস। মারাত্মক গোলমাল ছাড়া খামোখা কেনই বা এমন জংলি জায়গায় থাকতে আসব..! মাঘের সন্ধে কাঠের রেলিং ঘেরা ঝুল বারান্দায় কিছুক্ষণ হল বসে আছি। সামনে কুয়াশার চাদর মোড়া অমাবস্যার জঙ্গল। বলে রাখি আমি অতটা শীতকাতুরে নই, কানে আসছে নদীর জলের আওয়াজ, উত্তুরে হাওয়ার দাপটে, শুকনো পাতার খসখস। এসব জায়গায় মন-মেজাজ বেশ ফুরফুরে থাকলেও, মাথার ওপর খাঁড়ার মতো ঝুলছিল সরকারি দায়িত্ব। ক'দিন আগেই বহমান এই জংলি নদীটির স্রোতে এক যুবকের ফুলে ফেঁপে ওঠা,...

read more
গল্প: রিমোট

গল্প: রিমোট

অফিস থেকে ফিরে চা আর দুটি মুড়ি গালে ফেলে নাড়াচাড়া করতে করতে মাঝ গঙ্গায় কলার খোলের মতো অতীতে ভাসছিল নিঃসঙ্গ শরদিন্দু। সেই দিনটা— সাদা পা-জামা আর কালচে লাল পাঞ্জাবি পরিহিত শরদিন্দু খাটে আধশোয়া হয়ে তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে টিভির রিমোট হাতে নিয়েছিল। সংসারের রিমোট অনেকদিনই হাতছাড়া। স্ত্রী অরু এবং মেয়ে অন্বেষার উপর ওর কোনও কন্ট্রোল নেই। ওরা নিজেদের মতো চলে। চলছে ২৪ ঘণ্টা চ্যানেল। রিমোট কাজ করছে না। অসহায় হয়ে চেয়ে আছে শরদিন্দু । ইস্, যদি কোনও একটা স্পোর্ট চ্যানেলে ঠেকিয়ে রেখে রিমোটটা অকেজো হয়ে যেত! ও নিউজ চ্যানেল আর সোপ...

read more
ছোটদের গল্প: মায়ের আদর

ছোটদের গল্প: মায়ের আদর

বারান্দার ফুলের গাছ থেকে ফুল তুলতে খুবই ভালোবাসে ছোট্ট রুমি৷ কখনও কখনও মায়ের হাত থেকে জলের মগ নিয়ে গাছে জলও দেয়৷ মাকে গাছে জল দিতে দেখলেই বলে আমাকে দাও আমি টবে জল দেব৷ তুমি দেবে না জল, আমি দেব জল গাছে৷ ফুলটাও তুমি তু্লবে না, আমি তুলব৷ এইরকম ছোট ছোট নানা বায়না রুমির৷ মার পিছু পিছু ঘোরে আবার কখনও কখনও নিজের খেলনাপাতি নিয়ে একাই খেলা করে৷ সেদিন বারান্দা থেকে হঠাৎ রুমি চেঁচিয়ে ডাকল মা-কে৷ —মা মা, দেখবে এসো, বারান্দার ভাঙা টিনের বাক্সের ভিতরে দুটো ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা বিড়াল৷ ওরা ওর মার কোলে শুয়ে দুধ খাচ্ছে৷ দেখবে এসো মা,...

read more
অণুগল্প: সৎকার

অণুগল্প: সৎকার

শৈলেন একটা ছোটখাট চাকরি করে। ওর আসল মন নাটকে। শখের নাট্যদল আছে একটা। সেখানে রিহার্সাল, নাট্যপাঠ, নাট্যাভিনয় এসব নিয়েই পড়ে থাকে। না, পড়ে থাকে বললে ভুল হবে, পড়ে ছিল। করোনার দাপটে সব বন্ধ এখন। কতবার কতরকম করে লকডাউন হচ্ছে। শৈলেন এখন বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই থাকে। বাড়িতে থেকে একটাই কাজ করে, ভাইপো কুট্টুসের সঙ্গে সময় কাটায়। ওকে পড়ায়, গল্প বলে, ছবিটবি আঁকে দুজনে মিলে। কুট্টুস ওর বেশ কথা শোনে৷ ওকে বলেছিল, 'কুট্টুস তুই একটা আপেল আঁকবি তো ড্রইংখাতায়৷ এমন সুন্দর করে আঁকবি যাতে দেখলেই খেতে ইচ্ছে করবে।' আজ সকালে ঘরে ঢুকে শৈলেন...

read more

Skip to content