বরকর্তা হিসেবে একটা নিটোল বিয়ের সুচারু ব্যবস্থাপনার পর সবাই নিশ্চিন্ত হয়ে বিয়ের আসর ছেড়ে ভুরিভোজের ঠিকানায় পা বাড়িয়েছি, তখন কন্যাপক্ষের এক যুবক এসে বললেন—কাকু ট্রলিব্যাগটা দিয়ে দিন। গাড়িটা যাচ্ছে ব্যাগটা বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
গল্পের ঝুলি
দীপাবলির গল্প, থ্রেট /২
শব্দবাজির কম্পাঙ্ক কমানোর জন্য আইনকানুন আলোচনা সবই হচ্ছে কিন্তু আখেরে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। কানফাটানো শব্দের কোন বিরাম নেই। আর পাড়ার ভেতরে এতো কড়া আইনকানুন বলে কিছু নেই। মানা করতে গেলে বেশিরভাগ লোকই নাক কান চুলকে বলবেন——কালী পুজোর সময় বাজি পুড়বে না? এ কি হয় নাকি মশাই? কানে তুলে দিয়ে রাখুন, জোরসে মিউজিক চালিয়ে দিন।
দীপাবলির গল্প, থ্রেট /১
আজকাল শিরদাঁড়া নিয়ে খুব আলোচনা চলছে। মাইতিবাবু নিশ্চিত তাঁর শিরদাঁড়া আর সোজা নেই। বাড়ি করা ছেলেমেয়ে মানুষ করা তাদের বিয়ে-থা এ সব সামলে সোজা শিরদাঁড়া বেঁকে গিয়েছে। এখন শোবার সময় পিঠের চালাটা একটু টিপে দেবার জন্য বৌকে সাধ্যসাধনা করতে হয়। তাই বোধহয় আজকাল সামান্য একটু ঝুঁকেও চলতে হয়।
শারদীয়ার গল্প: গৌরী এল দেখে যা লো /২
শরৎ আলোর আঁচল টুটে কীসের ঝলক নেচে ওঠে কে জানে, ওই চরণমূলে মরণের নাচের তালে তালে হাহারবে নিখিল অশ্রুসাগরের কূলে পূজা সাঙ্গ হয়, প্রতিবার।
শারদীয়ার গল্প: তখন বিকেল/৫
ঘরে সুবিনয় আর কবিতা। কারো মুখে কথা নেই। শুধু বারেবারে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে চারটি চোখ। এতদিন মনে মনে দু’জন দু’জনাকে কত কথাই বলেছে। কত অভিমান… কত ভালোবাসা… কিন্তু এখন সামনাসামনি একটা কথাও সরছে না কারো মুখ থেকে। মন চাইছে আঁকড়ে ধরে এতদিনের সব যন্ত্রণাকে বাঁধভাঙা মুক্তি দিতে। কিন্তু পা দুটোকে কে যেন শক্ত করে মাটির সঙ্গে চেপে ধরে রেখেছে। কিছুতেই এগোতে পারছে না।
শারদীয়ার গল্প: গৌরী এল দেখে যা লো /১
পুজো মানে দুর্গাপুজো। মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গতিহারিণীর অকালবোধন। আর পুজো পুজো ভাব মানে, পুজো আসার কিছুদিন আগে থেকে আকাশে বাতাসে একটা চোখে পড়ার মতো বদল আসা। হঠাত্ করে রোদ ঝলমলে আকাশ, আকাশের রঙে নীল নীল ভাব, বাতাসেও একটা ঝলমলে আনন্দ, কলকাতার আশেপাশেই কিংবা দূরে দূরে কাশফুল, এছাড়াও পাড়ার শিউলি ফুলের গাছটা হঠাৎ করেই শরতের চিঠি রেখে যেত।
শারদীয়ার গল্প: তখন বিকেল/৪
আজ আবার মনে পড়ে গেল প্রিয়ার সেসব কথা। বাবার ডায়রির ভিতরে ছবিটা পেয়েছিল বলেই না সিদ্ধার্থদের বাড়ি গিয়ে ওর মায়ের পুরনো ছবিটা দেখে চমকে উঠেছিল। সব পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ওর চোখে। পরের দিন সিদ্ধার্থকে সব বলেছে। সিদ্ধার্থও আবাক হয়েছে। ওরা দু’জনেই চায় এই হারিয়ে যাওয়া মানুষ দু’জন আবার কাছে আসুক।
শারদীয়ার গল্প: তখন বিকেল/৩
সুবিনয় পায়চারি করছে ছাদে। ছাদের রেলিং ঘেঁষে বেশ কয়েকটি ফুলের টব। তাতে গাঁদা-চন্দ্রমল্লিকা-ডালিয়া ফুটে রয়েছে। ওরা বাপ-বেটি যে যখন সময় পায় পরিচর্যা করে ওদের। প্রিয়া ফুল খুব ভালোবাসে। বড় দুঃখী তার মেয়েটা। জন্মের মাত্র ছ’মাস পরেই মাকে হারাল। সুমিতা না থাকলে কী করে যে প্রিয়াকে মানুষ করত, ভাবতেও ভয় করে সুবিনয়ের।
শারদীয়ার গল্প: তখন বিকেল/২
সিদ্ধার্থের যখন বয়স বারো, তখন একদিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় অ্যাক্সিডেন্টে ভীষণভাবে আহত হয় বাবা। দিন তিনেক নার্সিংহোমে শুয়ে থাকার পর মারা যায়। একটুও কষ্ট তো সিদ্ধার্থের হয়ইনি, বরং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল এই ভেবে, যে মাকে আর রোজ রোজ অপমানিত হতে হবে না। কিন্তু সিদ্ধার্থের ভাবনায় একটু ভুল ছিল।
শারদীয়ার গল্প: তখন বিকেল/ ১
ভারি মিষ্টি মেয়ে প্রিয়া। সিদ্ধার্থের যখন এমএ ফাইনাল ইয়ার, তখন ওর এক বন্ধু প্রিয়াকে পড়াবার কথা বলেছিল ওকে। প্রিয়ার তখন বিএ ফার্স্ট ইয়ার। একদিন বিকেলে ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরে সিদ্ধার্থ কবিতাকে বলেছিল, “মা, একটা টিউশনি পেয়েছি। মেয়েটি ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।
এক বাক্স চিঠি/৩
ডাক্তার চৌধুরীর অ্যাপার্টমেন্টের দরকার পড়েনি। ওষুধও আনাতে হয়নি। তবে ঘুমের ওষুধগুলো সব শেষ হয়ে গিয়েছে। লাবণ্য ঘুমের মধ্যেই চিরদিনের মতো চিরঞ্জীবের কাছে ফিরে গিয়েছে।
এক বাক্স চিঠি/২
হঠাৎ একটা শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়ায় ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। চাদরটা পায়ের কাছ থেকে নিতে গিয়েচমকে উঠল লাবণ্য টেবিলের পাশেচেয়ারে কে বসে? কে?
এক বাক্স চিঠি/১
১৯ বছরের চিরঞ্জীব মণ্ডল চিঠি দিয়েছিল ১৫ বছরের লাবণ্য মুখার্জিকে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক লাবণ্য এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি।
শারদীয়ার গল্প-৪: সীমানা ছাড়ায়ে…
আজ কুড়ি বছর পর দেখা। ঊর্মি কথা বলে যাচ্ছে—পঞ্চাশেই বুড়ো হয়ে গেছিস যে। আমিও টুকটাক উত্তর দিচ্ছি হেসে। জোর করে প্রশ্নটা করেই ফেললাম। কেন চলে গিয়েছিলি সেদিন…
শারদীয়ার গল্প-১: পুরুষোত্তম/৬
সতীর চোখে চোখ রাখল পদ্মা। সতী তাকাল তার ছোটবোন সাবিত্রীর দিকে, পদ্মা হাত রাখল দু-মেয়ের মাথায়। সতীর হাত কাঁপছে! প্রথমবারের চেষ্টায় দেশলাই জ্বলল না যে, পদ্মা তাকাল। দ্বিতীয়বারের চেষ্টাও ব্যর্থ হল।