পঞ্চম এ বার সত্যিই বুঝতে শুরু করেন, আশার প্রতি তাঁর বিশেষ অনুভূতির কথাটি। নিজের কাছে এ বার যেন পরিষ্কার হতে শুরু করে তাঁর মনে জন্ম নেওয়া আশার প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা।

পঞ্চম এ বার সত্যিই বুঝতে শুরু করেন, আশার প্রতি তাঁর বিশেষ অনুভূতির কথাটি। নিজের কাছে এ বার যেন পরিষ্কার হতে শুরু করে তাঁর মনে জন্ম নেওয়া আশার প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা।
পঞ্চম সুরারোপিত এবং লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ‘আমার মালতীলতা ওগো কি আবেশে দোলে’ গানটি নিশ্চই শুনেছেন। সেই একই সুর পঞ্চম ব্যবহার করেন ‘হামারে তুমারে ছবিতে’।
‘বারা বাজে কি সুরিয়া জেয়সে’ গানটি অত্যন্ত সহজ সরল একটি মেলোডি। মিষ্টি নায়িকা নীতু সিং এবং প্রাণোচ্ছল নায়ক ঋষি কাপুরকে নিজস্ব ভঙ্গিমায় কণ্ঠদান করে আশা এবং কিশোর গানটিকে আরও শ্রুতিমধুর করে তুলেছেন।
বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পরবর্তীকালে বাবাকে হারানো—এই দুটি ঘটনাই পঞ্চমকে চূড়ান্ত ভাবে ব্যথিত করেছিল। একের পর এক কাজ করে চলেছিলেন ঠিকই, তবু এক নিদারুণ একাকিত্ব তাঁকে গ্রাস করেছিল।
‘চোর হো তো অ্যায়সা’ ছবির ‘গুসসে মে তানকে চল’ গানটির ক্ষেত্রে সেই আশা। কারণ দুটি। প্রথমত গানটির প্রবাহ এবং দ্বিতীয়ত হল নায়িকার খুনসুটি। তাই পঞ্চমের আশাকেই চাই।
‘করম’ ছবির ‘পল পল সময় তু ধীরে ধীরে চল’ গানটির সার্বিক উপস্থাপনা গানটিকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। রাজেশ খান্না ও বিদ্যা সিনহার লিপে কিশোর এবং আশার কণ্ঠ মিলেমিশে যা সৃষ্টি হয়েছিল তা অভাবনীয়।
‘বড়ি সুনি সুনি হ্যায়’ গানের রেকর্ডিং যখন হয়, তখন শচীনকর্তা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার কিছুদিনের মধ্যেই চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে শচীনদেব বর্মন পাড়ি দেন আনন্দলোকে।
শোলে ছবির একটি দৃশ্যে যখন ডাকাত সর্দার গব্বর সিং আবির্ভূত হচ্ছেন, তখন আমরা শিউরে উঠেছি সেই হাড়হিম করা শব্দে। জানেন কি, সেই শব্দের উৎস কোথায়?
অস্ত যায় ১৯৭৪ সালের সূর্য। আসে ১৯৭৫। নতুন বছর। তাই নতুন উদ্যম নিয়ে সুরে করেন পঞ্চম। পরের দিকে এই বছরটিও পঞ্চমকে এনে দেয় অভাবনীয় কিছু সুযোগ এবং সাফল্য।
‘উজালা হি উজালা’ ছবির ‘সভেরে সভেরে তেরে পেয়ার মে’ গানে কিশোর কণ্ঠে আবার খুজে পাওয়া যায় তাঁর সেই অভিনয় ক্ষমতা। তাই-ই হয়তো গানটির দায়িত্ব কিশোরকে সঁপেছিলেন পঞ্চম।
‘পাঁচ দুশমন’ ছবির ‘জিনা তো হ্যায় পর এ দিল কাঁহা’ গানটিতে মেজর এবং মাইনর স্কেল একই সঙ্গে ব্যবহারের এক অসাধারণ নিদর্শন আমাদের কানে ধরা পড়ে। গানটির সুর এবং প্যাথস দুটিই যেন একটু অন্যরকম।
পঞ্চম খুব খুঁতখুঁতে ছিলেন। শুধু ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা মাথায় রেখে চটকদার সুর রচনা করে প্রযোজক পরিচালকদের খুশি রাখার ব্যাপারটিকে তিনি সেইভাবে কোনওদিনই গুরুত্ব দেননি।
শচীন কর্তা মীরা দেব বর্মণকে বলেন, সেদিন যখন তিনি রাস্তায় হাঁটছিলেন, জনা কয়েক লোক নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন এই বলে যে ‘ওই দেখ, রাহুল দেব বর্মনের বাবা হেঁটে যাচ্ছেন’।
‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ গানটি সেই যুগে যে আদেও তৈরি হতে পারে সেটি পঞ্চম প্রমাণ করেছেন। গানের মুখরা একটি স্কেলে আরম্ভ হয়। কিন্তু দুটি অন্তরাই আরম্ভ হয় অন্য আরেকটি স্কেলে।
১৯৭১ সালেই মুক্তি পায় দেবানন্দ পরিচালিত ছবি ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’। একটি নেপালি ধুনকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা ‘কানছি রে কনছি রে’ (কিশোর-লতা ডুয়েট) আজও বিশেষভাবে আমাদের মন কাড়ে।