‘মেরা কুছ সামান তুমহারে পাস পড়া হ্যায়’ গানটি গুলজার সাহেব যখন পঞ্চমকে প্রথমবার শুনিয়ে তাতে সুর প্রদান করতে বলেন, তখন প্রবল চটে গিয়েছিলেন পঞ্চম। সেটি একটি আধুনিক কবিতা হিসেবে এক কথায় অসাধারণ। কিন্তু তাই বলে সেটিকে গানের রূপ দেওয়া?

‘মেরা কুছ সামান তুমহারে পাস পড়া হ্যায়’ গানটি গুলজার সাহেব যখন পঞ্চমকে প্রথমবার শুনিয়ে তাতে সুর প্রদান করতে বলেন, তখন প্রবল চটে গিয়েছিলেন পঞ্চম। সেটি একটি আধুনিক কবিতা হিসেবে এক কথায় অসাধারণ। কিন্তু তাই বলে সেটিকে গানের রূপ দেওয়া?
‘কাতরা কাতরা মিলতি হ্যায়’ গানটি সবাই শুনেছেন। কিন্তু গানটির অভিনবত্ব কোথায় জানেন? গানটির বেশ কিছু অংশে আশা ভোঁসলের কণ্ঠকে সুপার-ইম্পজ করিয়েছেন পঞ্চম।
বিগত বছরগুলির তুলনায় ১৯৮৬ সালে ছবির কাজ কিছুটা কমে যায়। কিন্তু তাতে কী? যাঁর ধমনীতে দিবারাত্র বয়ে চলেছে সুরের স্রোত, তিনি কি আর নিজেকে উজাড় না করে দিয়ে থাকতে পারেন? ‘অনোখা রিস্তা’ ছবিতে আশাকে দিয়ে পঞ্চম গাওয়ান ‘চল সহেলি ঝুমকে’ গানটি।
‘সাগর কিনারে, দিল ইয়ে পুকারে’ গানটি আমাদের কলেজ জীবনে তো বটেই, এমনকি আজও একইভাবে নাড়া দিয়ে যায়। কিশোর-লতার আবেগঘন কণ্ঠ, সঙ্গে পঞ্চমের সেই মেলোডি আবেগতাড়িত না হয়ে যাই কোথায়?
‘হাম দোনো’ ছবির আরও একটি গান ‘তু লাজাওয়াব বেমিসাল’ গানটি জন্ম নিয়েছে আনন্দ বকশিরই কলম থেকে। তাই গানের কথা, দৃশ্য, নায়ক রাজেশ খান্না এবং নায়িকা হেমা মালিনীর কথা মাথায় রেখে গানে সুরারোপ করেন পঞ্চম। এখানেও শুধুই মেলোডি আর মেলোডি।
‘সানি’ ছবির লতার গাওয়া ‘জানে কেয়া বাত হ্যায়’ গানটি আপনারা সবাই কখনও না কখনও নিশ্চই শুনেছেন। একই সুরে একটি বাংলা গান ‘চোখে নামে বৃষ্টি’ পঞ্চম গাইয়েছিলেন আশাকে দিয়ে। দুটি ক্ষেত্রেই একই সুর। একই সংগীত পরিচালক।
আসে ‘ঝুঠা সচ’ ছবিটি। এই ছবির ‘যাহা বিন হাওয়াকে পর্দা হিলে’ গানটি নিশ্চই শুনেছেন আপনারা। গানটির দৃশ্যায়ন এমনই ছিল যে, সেই যুগের পড়ুয়ারাও অভিভাবকদের চোখের আড়ালে গিয়ে সেটি দেখেছেন।
‘ফরিস্তা’ ছবির কিশোরের গাওয়া ‘জামানে মে কই হামারা নেহি’ গানটি শুনলে মনে একটি সুগভীর আক্ষেপ জন্ম নেয়। আক্ষেপটি এটিই, যে কেন পঞ্চম কিশোর জুটি আমাদের মধ্যে আরও অন্তত তিরিশটি বছর থেকে গেলেন না।
‘ধীরে ধীরে জারা জারা’ গানটিতে আশা ভোঁসলে যেভাবে ভাবে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করে গানটি গেয়েছেন সেটি মোটেও সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু পঞ্চম একশো ভাগ নিশ্চিত ছিলেন যে আশা পারবেনই।
মুক্তি পায় ‘পুকার’। অমিতাভ বচ্চন, রণধীর কাপুর এবং জিনাত আমন অভিনীত এই ছবির গানগুলি খুব স্বাভাবিক ভাবেই হয় ওঠে ‘সুপার হিট’। লেখক গুলশান বাওয়ার সঙ্গে এতদিনে প্রচুর কাজ করেছেন ফেলেছেন পঞ্চম।
কিশোরের গাওয়া ‘জিনা তো হ্যায় পর আয় দিল কাহা’ গানটির কথা একটিবার ভাবুন তো? মেজর এবং মাইনর মিশিয়ে কী অনবদ্য এক প্যাথস মাখানো সুরই না রচনা করেছেন পঞ্চম!
এই ছবির ‘জিনে কো তো জিতে হ্যায় সভি’ গানটি কিশোর-আশার দ্বৈতকণ্ঠে গাওয়া বহু মনমাতানো গানের মধ্যে একটি। নায়ক ঋষি কাপুর এবং নায়িকা পুনম ধিলনের কণ্ঠ হয়ে উঠে দু’ জনে মিলে কি অসাধারণ ভাবেই না পরিবেশিত করেছেন গানটি।
গুলজার যেমন ছিলেন পঞ্চমের পরম বন্ধু, আনন্দ বকশির সঙ্গেও আরডি-র সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়। মেলোডি কিংয়ের সঙ্গে দুজনেরই ‘ওয়েভ লেন্থ ম্যাচিং’-এর বিষয়টি ছিল চোখে পড়ার মতো।
শেখর কাপুর নির্দেশিত ‘মাসুম’ ছবিতে ডাক আসে পঞ্চমের। আর গীতিকার হিসেবে দায়িত্ব পান গুলজার। বুঝতেই পারছেন এর পরিণাম কি হতে পারে। ‘লাকড়ি কি কাঠি, কাঠি পে ঘোড়া’ গানটি লেখার পর পঞ্চমের সঙ্গে বসেন গুলজার।
গুলজারের নির্দেশনায় আসে ‘নমকিন’ ছবিটি। স্বাভাবিক ভাবেই ছবির গানগুলি লেখেন গুলজার স্বয়ং। বলার অপেক্ষা রাখে না, যথারীতি তাঁর লেখায় সুরারোপ করতে ডাক পড়ে পঞ্চমের।