‘১৯৪২ এ লাভ স্টরি’র কাজ তো সম্পন্ন হল। এ যেন নতুন করে তাঁর জীবনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। তাঁর সতীর্থদের এবং ঘনিষ্ঠ মহলের উচ্ছসিত প্রশংসা অর্জন করলেন তো বটেই। নিজেও কোথাও যেন নিজেকে প্রশংসিত করার কারণ খুঁজে পেলেন। বেশ বুঝতে পারলেন যে দ্বিতীয় ইনিংস আরম্ভ হয়ে গিয়েছে। সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পরার পালা এ বার। ‘উপেক্ষিত’ পঞ্চম এ বার যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবু স্বাস্থ্য খুব একটি ভালো যাচ্ছিল না। কিছু বছর আগে, অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের শেষ দিকে সুদূর লন্ডনে পাড়ি দিতে হয়েছিল বাইপাস সার্জারির জন্য। অপারেশন...
পঞ্চমে মেলোডি
পর্ব-৬৯: এক লড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লগা
কুমার শানু রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত পঞ্চম এবং তাঁর সতীর্থরা। শানুর কথায়, সেদিন নিজের আবরণ সম্পর্কে খুব একটি যত্নবান হয়ে রেকর্ডিং করতে যাননি। গাল ভর্তি দাঁড়ি। মাথার চুল উস্কোখুস্কো। পোশাকও খুবই নৈমিত্তিক। পঞ্চম লক্ষ্য করেন সেটি। শানুকে আরডি বলেন, সেদিন রেকর্ডিং হবে না।
পর্ব-৬৮: কুছ না কহো, কুছ ভি না কহো…
হঠাৎ একদিন বিধু বিনোদ চোপড়া দেখা করতে এলেন পঞ্চমের সঙ্গে। পরিচারক পঞ্চমের অনুমতি নিয়ে তাঁকে নিয়ে গেলেন মিউজিক রুমে। পঞ্চম এর দু’চোখে তখন কিছুটা বিস্ময়, আর বাকিটা জিজ্ঞাসা। কেন এসেছেন বিধু? এটি কি নিছকই সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ? নাকি তিনি অন্য কোনও বার্তা নিয়ে এসেছেন?
পর্ব-৬৭: দিল লেনা খেল হ্যায় দিলদার কা…
‘জয় শিবশঙ্কর’ ছবির আনন্দ বকশির লেখা ‘তু অন্দর ক্যায়সে আয়া চোর দরওয়াজে সে’ গানটি শুনেছেন কখনও? একবার শুনে দেখতে পারেন। অসাধারণ অ্যারেঞ্জমেন্ট! এ যেন ঠিক সেই পুরোনো দিনের পঞ্চম।
পর্ব-৬৬: সিলি হাওয়া ছুঁ গয়ি, সিলা বদন…
এতদিন ধরে সংগীতের আঙিনায় শতসহস্র সুগন্ধি ফুল ফোটাবার পরেও তাঁকে কি আবার নতুন করে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে? এই প্রশ্নই যেন পঞ্চমকে কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে। তিনি তো যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে চেয়েছেন। বহুক্ষেত্রে তাঁর রচিত সুর সময়ের থেকে এগিয়ে থেকেছে।
পর্ব-৬৫: নদীর পাড়ে উঠছে ধোঁয়া, মনে হয় কিছু হয়েছে…
আশারই গাওয়া ‘ঝুম ঝুম ঝুম রাত নিঝুম’ গানটিও অসাধারণ। মন মাতানো ছন্দ। এই ছন্দের তালে শরীর দোলাতে ইচ্ছে করবেই। প্রেলুড, ইন্টারলুড এবং ফিলারগুলি এতটাই উপযোগী যে এই গানটিকে কোনও অজুহাতেই উপেক্ষা করা একরকম অসাধ্য।
পর্ব-৬৪: এক দিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে…
‘মধুমাস যায় মধুমাস নাই যে বধূ’ গানটির আবেদন কি সত্যি ভোলা যায়? এটি রাহুল দেব বর্মনের গবেষণার আরও একটি নিদর্শন। অত্যন্ত ধীর গতির একটি ছন্দ। কিন্তু সার্বিকভাবে গানটিতে যে আবেগের সঞ্চার হয়েছে তার মূলে রয়েছে জায়গা বিশেষে সারেঙ্গী, ভায়োলিন, অ্যাকর্ডিয়ান, বাঁশি এবং সন্তুরের সুরস্রোত।
পর্ব-৬৩: আমার মালতী লতা কী আবেশে দোলে…
পুজো মণ্ডপ থেকে ভেসে আসা কিশোরকণ্ঠের উপহার ‘আকাশ কেন ডাকে মন ছুটি চায়’ গানটি কানে এলে ‘মন’ বোধহয় সত্যিই ছুটি চায়। এ যেন মনের এক ন্যায্য আবদার। সেই আবদার মেটাতে আমরা বাধ্য। যেমন গৌরীবাবুর লেখা, তেমনই পঞ্চমের মেলোডি।
পর্ব-৬২: বুক ভরা মোর কান্না দিয়ে দিলাম চিঠি লিখে…
‘শ্বেত পাথরের থালা’ ছবির সেই বিখ্যাত গান ‘যে প্রদীপ জ্বালছ তুমি’ গানটি কি আমরা আজও ভুলতে পেরেছি? মুকুল দত্তের সেই অসামান্য লেখা এবং সেটিতে পঞ্চমের উপযোগী সুর।
পর্ব-৬১: হায়রে কালা একি জ্বালা…
‘না না কাছে এসো না মায়াবী এই রাতে’ গানটি পঞ্চমের অগুন্তি অনবদ্য সৃষ্টির মধ্যে একটি। গাইয়েছেন আশা ভোঁসলে এবং এসপি বালা সুব্রহ্মণ্যমকে দিয়ে। খেয়াল করে দেখবেন, এক অদ্ভুত ধরনের আধুনিকতার ছোঁয়া আছে গানটিতে। যে আধুনিকতা হয়তো আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক।
পর্ব-৬০: একটু বসো চলে যেও না…
‘কবে যে কোথায় কী যে হল ভুল’। ভূপিন্দর সিংহের গাওয়া এই গানটিতে যে প্যাথস সঞ্চারিত হয়েছে, সেটি আপনার মনকে বেদনাতুর করে তুলবেই। ১২ স্ট্রিং গিটারে শুরু হওয়া প্রেলুড এবং তারপর তবলা, গিটার এবং রেসো-রেসোকে আশ্রয় করে ছন্দের বিস্তার আপনাকে মুগ্ধ করবেই করবে।
পর্ব-৫৯: আমার স্বপ্ন যে সত্যি হল আজ…
‘হায়রে পোড়া বাঁশি’। এই গানটির অভিনবত্ব লুকিয়ে রয়েছে গানটির ছন্দে। যে ছন্দে তবলার পাশাপাশি মাদল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গেছে পুরো গানটি জুড়ে। কেন? এই গানটির ক্ষেত্রে মাদল, ফিলার এবং ছন্দ, দুটি ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়েছে।
পর্ব-৫৮: অন্যরা যখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন তখন পঞ্চমের হাত ধরলেন শক্তি সামন্ত
শেষ হয় আশির দশক। আসে ১৯৯০ সাল। কিন্তু কোথায় সেই ব্যস্ততা? পঞ্চমের মিউজিক রুমে কোথায় সেই জনসমাগম? কোথায় গেলেন সেই প্রযোজক এবং নির্দেশকেরা, যাঁরা পঞ্চমের ডেট পাওয়ার জন্য একসময় মুখিয়ে থাকতেন? তাহলে কি মুখ ফিরিয়ে নিল বলিউড? বিলুপ্ত হয়ে গেল সেই জনপ্রিয়তা?
পর্ব-৫৭: আশির দশকের শেষ পর্বে পঞ্চমকে অনেকেই কাজ দিতে চাননি
কিশোর কুমারের অকালপ্রয়াণ দিয়ে যেন পঞ্চমের জীবনের আরও একটি অধ্যায়ের অবসান ঘটলো। ১৯৭৫ সালে তিনি বাবা শচিন দেব বর্মণকে হারিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেই সময় কিশোর তাঁর পাশে ছিলেন। বলা যেতে পারে, একটি ভরসার জায়গা। এমনিতেই শচীনকর্তাকে কিশোর অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন।
পর্ব-৫৬: আচমকা ‘বন্ধু’ কিশোরের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছিলেন পঞ্চম
বাড়িতে তখন লিনার সঙ্গে রয়েছে কিশোরের কনিষ্ঠ পুত্র ছোট্ট সুমিত। অসহায় লীনা বুঝে উঠতে পারেন না ডাক্তার না আসা অবধি তাঁর কি করা উচিত। চোখের সামনে স্বামীকে এই ভাবে ছটফট করতে তিনি আগে কখনও দেখেননি। ততক্ষণে কিশোর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে শুরু করেছেন।