দমনক বলে, যে রকম ভৃত্যকে দ্বায়িত্ব দিলে শুক্লপক্ষের চন্দ্রের মতো রাজ্যের সীমাবৃদ্ধি হয় সেই ভৃত্যই শ্রেষ্ঠ। রাজ্যসীমা বৃদ্ধি মানেই কর বৃদ্ধি হওয়া, আর কর বৃদ্ধিমানেই রাজকোষের বৃদ্ধি, যা রাজার যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের মূল আশ্রয়।

দমনক বলে, যে রকম ভৃত্যকে দ্বায়িত্ব দিলে শুক্লপক্ষের চন্দ্রের মতো রাজ্যের সীমাবৃদ্ধি হয় সেই ভৃত্যই শ্রেষ্ঠ। রাজ্যসীমা বৃদ্ধি মানেই কর বৃদ্ধি হওয়া, আর কর বৃদ্ধিমানেই রাজকোষের বৃদ্ধি, যা রাজার যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের মূল আশ্রয়।
সিংহ পিঙ্গলককে এই জন্যেও সাধুবাদ জানানো উচিত, সে এতটা সময় ধরে মনোযোগ দিয়ে মন্ত্রীপুত্র দমনকের তিরষ্কার শুনে চলেছে। দমনকের মতে, সূর্য যেমন সারা আকাশে তাঁর কিরণদ্যুতি বিস্তার করে শোভা পায়, লোকের অনুগ্রহকারী রাজাও তেমনই।
আমাদের পূর্বপুরুষ বংশ পরম্পরায় রাজপদের অধিষ্ঠিত থেকে আপনার পূর্বপুরুষদের সদা সর্বদা সুমন্ত্রণা দিয়েই এসেছেন। তাঁদের মন্ত্রীত্বপদ অলঙ্করণ করেছেন।
রাজা অন্যের দোষ অন্বেষণ করে তাকে শাস্তি দিয়ে তাঁর অনিষ্ট সাধন করে। এমনকি রাজার উপকার করলেও তিনি সবসময় তা মনে রাখে না। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে রাজাও তাঁকে ভুলে যান।
সোজাকথায় রাজার ভালোলাগা বা মন্দলাগা রাজ সেবকদের একেবারে নখদর্পণে থাকা দরকার। সেই মতোই রাজার সঙ্গেও ব্যবহার করা দরকার।
দমনক শান্ত মাথায় রাজনীতির প্রথম পাঠটি দেয় করটককে। বলে, আমরা কী কেবল খাবার খেতেই জন্মেছি নাকি? খাবার-দাবার তো কাকেরও মতো তুচ্ছ প্রাণীরও ভাগ্যে জুটে যায়।
বংশপরম্পরায় মন্ত্রীপুত্র মন্ত্রী হলে যে কতরকম গোলমালের সম্ভাবনা থাকে শ্রীকৃষ্ণের মন্ত্রী উদ্ধব, মানে রাজনীতিশাস্ত্রে যিনি বাতব্যাধি নামে পরিচিত, তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রাচীন কালে উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথ ধরে বণিকরা যখন দেশ-বিদেশে বাণিজ্য করতে যেতেন, তখন সেই পথের দুর্গমতা অনুসারেই সে পথকে নির্দিষ্ট কতগুলি ‘কান্তার’-এ ভাগ করতেন তাঁরা।
কোনও বুদ্ধিমান মানুষই অল্পের জন্য বড় সম্ভাবনাকে নষ্ট হতে দেয় না। আপনি তো বুদ্ধিমান ব্যবসায়ী। পণ্ডিতব্যক্তিরা সামান্য কিছু ক্ষতি সাধন করে হলেও বেশিটাকে রক্ষা করেন, সবটা নষ্ট হতে দেন না।
কৃষি প্রধান দেশ ভারতে চাষবাস করা যে নিঃসন্দেহে অর্থকরী ছিল এ নিয়ে দ্বিমতের জায়গা নেই। কিন্তু “কৃষিঃ ক্লিষ্টা”—খুবই কষ্ট করতে হয় কৃষি থেকে লাভ পেতে গেলে। কৃষিতে লাভ হবে কিন্তু সেক্ষেত্রে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে।
রাজপুত্রদের রাজনীতিতে পারদর্শী করতেই বিষ্ণুশর্মা যে ‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থটি লিখলেন, তার ‘প্রথম তন্ত্র’ বা ‘প্রথম অধ্যায়’টির নাম হল “মিত্রভেদ”।
প্রথমেই আপনাকে স্মরণ করতে বলবো প্রাচীন কালের ভারতীয় শিক্ষা-ব্যবস্থার ধারাটিকে। সে আমলে জ্ঞানের চর্চা হতো গুরুশিষ্য পরম্পরায়। গুরু তাঁর অন্তেবাসী শিষ্যকে প্রত্যক্ষ ভাবে বুঝিয়ে দিতেন যে কোনও পাঠ্যগ্রন্থের গূঢ়তত্ত্বগুলিকে।
‘পঞ্চতন্ত্র’। অতি পরিচিত ছোটবেলার সেই বইটি, শিশুকাল থেকেই যার সঙ্গে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত। আজকে থেকে প্রতি সোমবার ‘সময় আপডেটস’-এর এই পাতায় আমরা কথা বলবো পঞ্চতন্ত্রের রাজনীতি-কূটনীতি নিয়েই।