বিষ্ণুবাহন গরুড় নারায়ণের কথায় কাঠের তৈরি গরুড় যানে প্রবেশ করলে নারায়ণও তখন সেই বিষ্ণুরূপী তাঁতিটির শরীরের প্রবেশ করলেন। ফলে নর আর নারায়ণের মধ্যে যুদ্ধের পরিণাম যে কী হতে পারে সে আর নতুন করে বলবার আর কিছুই নেই।
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি
পর্ব-২৫: পরিবারের নেতা-মন্ত্রীদের সুবিধাবাদী আত্মীয়-বন্ধুরা তাঁর নাম ভাঙিয়ে নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়
আজকের দিনে পরিবারের কেউ নেতা-মন্ত্রী হলেসুবিধাবাদী আত্মীয়-বন্ধুরা যেমন তার নাম ভাঙিয়ে সমাজের সর্বস্তরে তাদের নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়—এখানেও ব্যাপারটা তাই।
পর্ব-২৪: যন্ত্রশক্তিকে অবলম্বন করে যে আকাশে ওড়া যেতে পারে, এই চিন্তা অন্তত সেই যুগেও মানুষ করেছিল
পাঠক-পাঠিকাদেরকে বলবো, দয়া করে এই যানটিকে এরোপ্লেন ভেবে বসবেন না যেন। আগেই বলেছি যে জিনিসটা অনেকটা প্যারাগ্লাইডিং-এর মতো আর তার সঙ্গে আছে কবির কল্পনা।
পর্ব-২৩: কাপুরুষ যাঁরা, তাঁরাই শুধু ঘরের মধ্যে বসে দৈব-ভাগ্য বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন
দেবশর্মা লক্ষ্য করছিল এ সব কিছুই। রাজপুরুষেরা যখন সেই নাপিতকে বেঁধে বধ্যস্থানে শূলে চড়াতে নিয়ে গেল। তখন সে দেবশর্মা ধর্মাধিকরণে গিয়ে বললে, এই বেচারা নাপিত কোনও অন্যায় করেনি।
পর্ব-২২: কামুক পুরুষের সঙ্গ ছাড়া একজন নারীও একা কোনও দুষ্কর্মে লিপ্ত হতে পারে না
পাঠক-পাঠিকাদেরকে বলব, এই গল্পকে আশ্রয় করে প্রাচীন ভারতের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে একটা সাধারণ ধারণা করে বসবেন না যেন। অপরাধীর মনস্তত্ত্ব বোঝবার জন্য উপরের নিয়মটি একটা অতি সাধারণ পর্যবেক্ষণ মাত্র।
পর্ব-২১: এ-কালের মতো সেই পুরোনো আমল থেকেই রাজনৈতিক প্রয়োজন সিদ্ধির জন্য নিষিদ্ধ প্রণয়-ফাঁদ পাতা হত
বরুণ হলেন জলের দেবতা; আর মদ জিনিষটির মূলেও সেই জল আছে বলে, মদের আরেক নাম হল বারুণী। সূর্যের মতো তেজদীপ্ত দেবতাও পশ্চিমাকাশে বরুণদেবের অধীনে যখন আসেন, তিনিও যেন মদমত্তই হয়ে যান।
পর্ব-২০: দু’জন সন্ন্যাসী এক জায়গায় হলেই সাধন-ভজন ভুলে তাঁরা জগৎ-সংসারের কথায় মগ্ন হয়ে যান
সজ্জন মানুষদের জরা প্রথমে আসে চিত্তে; বিষয়ের ভোগের প্রতি বিতৃষ্ণা তাঁদের মন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় অল্প বয়সেই। এই জগৎ-সংসারের অসারতা তাঁরা জেনে যান তখন থেকেই। তাই চিত্তের জড়তা আসে তাঁদের যৌবনকালেই।
পর্ব-১৯: উন্নতি করতে গেলে অপেক্ষায় বসে থাকলে চলবে না, তৈরি করে নিতে হয় সুযোগ
আমাদের বিচিত্র এই জগৎ-সংসারে সকল মানুষই নিজেদের খাওয়া-পরা জোগার করতে ভিন্ন ভিন্ন পেশার আশ্রয়ে পরস্পর পরস্পরের উপর বিভিন্ন উপায় প্রয়োগ করতে থাকে। এ জগৎ চলেই শুধু একে অন্যকে শোষণ করে।
পর্ব-১৮: রাজকার্য ভুলে রাজা ধর্মের বাণী প্রচারে ব্যস্ত হলে তাঁর রাজ্যপাট আর কিছুই থাকে না
রাজবাড়ির “সম্মার্জন কর্তা” হলেও ঝাড়ুদার গোরম্ভ কিন্তু রাজার লোক। তাই গোরম্ভকে কী করে প্রসন্ন করা যায় সেই নিয়ে সাত-পাঁচ ভাবতে শুরু করলেন দন্তিল।
পর্ব-১৭: অশিক্ষিত বা মূর্খ-ব্যক্তি রাজসেবক হলে সর্বত্রই সবার আগে তাকে সম্মান করতে হয়
নারীদের কাছে অগম্য বলে কেউ নেই, তারা কে সুপুরুষ বা কে কুপুরুষ সে-সব কিছুই দেখে না। তাদের একটা পুরুষ পেলেই হল। তাই স্ত্রীদের বিশ্বাস করা যায় না।
পর্ব-১৬: কাউকে অপদস্ত করতে হলে তাঁকে নারীঘটিত বিষয়ে জড়িয়ে দিতে হয়
যিনি রাজার ভালো চান জনগণ সাধারণত তাঁকে পছন্দ করেন না মোটেই। কারণ রাজা শুধু ছলে বলে আর কৌশলে বিভিন্ন রকম কর বসিয়ে প্রজার ধন হরণ করতে চায় মাত্র।
পর্ব-১৫: রাজা যে কখন, কার উপর, কী কারণে সদয় হন সেটা জানা সত্যিই দুষ্কর
দমনকের এইসব কথায় পিঙ্গলক বিশেষ একটা পাত্তা না দিয়ে আবার জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি সত্যিই তবে তাঁকে দেখেছেন?
পর্ব-১৪: রাজনীতিতে নিজের উন্নতি করতে গেলে দেবগুরু বৃহস্পতির মতো মানুষের উপরেও বিশ্বাস করা অনুচিত
যেকোনও বিপরীত পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে আবেগ বা ক্রোধের বশে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিয়ে, কিছু সময় নিজেকে সামলে নিয়ে, বুঝে-শুনে যিনি প্রতিক্রিয়া দেন তিনি নিজে কখনও অপদস্ত হন না বা বিপরীত পরিস্থিতির স্বীকার হয় না।
পর্ব-১৩: স্ত্রী-পুত্র-আত্মীয়-বন্ধু সকলের কাছে সব কথা না বললেই শান্তি ও সুস্থিতি বজায় থাকে সংসারে
দমনক বলে, যে রকম ভৃত্যকে দ্বায়িত্ব দিলে শুক্লপক্ষের চন্দ্রের মতো রাজ্যের সীমাবৃদ্ধি হয় সেই ভৃত্যই শ্রেষ্ঠ। রাজ্যসীমা বৃদ্ধি মানেই কর বৃদ্ধি হওয়া, আর কর বৃদ্ধিমানেই রাজকোষের বৃদ্ধি, যা রাজার যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের মূল আশ্রয়।
পর্ব-১২: প্রজাদের কাছে রাজার নিজের ভাবমূর্তি সঠিক রাখতে গেলেও সুযোগ্য রাজকর্মচারীর প্রয়োজন
সিংহ পিঙ্গলককে এই জন্যেও সাধুবাদ জানানো উচিত, সে এতটা সময় ধরে মনোযোগ দিয়ে মন্ত্রীপুত্র দমনকের তিরষ্কার শুনে চলেছে। দমনকের মতে, সূর্য যেমন সারা আকাশে তাঁর কিরণদ্যুতি বিস্তার করে শোভা পায়, লোকের অনুগ্রহকারী রাজাও তেমনই।