দমনকের যুক্তিগুলো শুনে পিঙ্গলক চঞ্চল হয়ে উঠল। দমনককে সে বললে, সঞ্জীবক আমার প্রাণাধিক প্রিয় একজন সেবক। আমার সঙ্গে কখনও কোনও বিষয়ে মতবৈপরিত্য হয়নি তার। তাহলে কেনই বা সে আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে বা আমার প্রতি দ্রোহপূর্ণ মনোভাব পোষণ করবে?

দমনকের যুক্তিগুলো শুনে পিঙ্গলক চঞ্চল হয়ে উঠল। দমনককে সে বললে, সঞ্জীবক আমার প্রাণাধিক প্রিয় একজন সেবক। আমার সঙ্গে কখনও কোনও বিষয়ে মতবৈপরিত্য হয়নি তার। তাহলে কেনই বা সে আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে বা আমার প্রতি দ্রোহপূর্ণ মনোভাব পোষণ করবে?
মানুষ নিজের এবং তার শত্রুর ক্ষমতাকে বিচার বিশ্লেষণ না করেই আবেগের বশবর্তী হয়ে শত্রুর সম্মুখে বিরোধীতা করতে চলে যায় সে অগ্নিতে ঝাঁপিয়ে পড়া পতঙ্গের মতো সমূলে বিনষ্ট হয়ে যায়।
ভারতভূমিতে অতি প্রাচীনকাল থেকেই রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা প্রজাকে গাভীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। গাভীকে যেমন দীর্ঘকাল ধরে পালনপোষণ করবার পর, সঠিক সময় হলে তবেই তাকে দোহন করতে হয়।
একদিন সেই কাঁকড়াটি বকবাবাজিকে বললে, মামা গো! আমার সঙ্গেই তো প্রথম আপনার স্নেহসম্ভাষণ হয়েছিল। অথচ সেই আমাকেই বাদ দিয়ে আপনি প্রতিদিন অন্যদেরই শুধু নিয়ে যাচ্ছেন। “তস্মাদদ্য মে প্রাণত্রাণং কুরু”—আজ আমাকে প্রাণে বাঁচতে সাহায্য করুন, আমাকেই নিয়ে চলুন আজ।
বিষ্ণুবাহন গরুড় নারায়ণের কথায় কাঠের তৈরি গরুড় যানে প্রবেশ করলে নারায়ণও তখন সেই বিষ্ণুরূপী তাঁতিটির শরীরের প্রবেশ করলেন। ফলে নর আর নারায়ণের মধ্যে যুদ্ধের পরিণাম যে কী হতে পারে সে আর নতুন করে বলবার আর কিছুই নেই।
আজকের দিনে পরিবারের কেউ নেতা-মন্ত্রী হলেসুবিধাবাদী আত্মীয়-বন্ধুরা যেমন তার নাম ভাঙিয়ে সমাজের সর্বস্তরে তাদের নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়—এখানেও ব্যাপারটা তাই।
পাঠক-পাঠিকাদেরকে বলবো, দয়া করে এই যানটিকে এরোপ্লেন ভেবে বসবেন না যেন। আগেই বলেছি যে জিনিসটা অনেকটা প্যারাগ্লাইডিং-এর মতো আর তার সঙ্গে আছে কবির কল্পনা।
দেবশর্মা লক্ষ্য করছিল এ সব কিছুই। রাজপুরুষেরা যখন সেই নাপিতকে বেঁধে বধ্যস্থানে শূলে চড়াতে নিয়ে গেল। তখন সে দেবশর্মা ধর্মাধিকরণে গিয়ে বললে, এই বেচারা নাপিত কোনও অন্যায় করেনি।
পাঠক-পাঠিকাদেরকে বলব, এই গল্পকে আশ্রয় করে প্রাচীন ভারতের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে একটা সাধারণ ধারণা করে বসবেন না যেন। অপরাধীর মনস্তত্ত্ব বোঝবার জন্য উপরের নিয়মটি একটা অতি সাধারণ পর্যবেক্ষণ মাত্র।
বরুণ হলেন জলের দেবতা; আর মদ জিনিষটির মূলেও সেই জল আছে বলে, মদের আরেক নাম হল বারুণী। সূর্যের মতো তেজদীপ্ত দেবতাও পশ্চিমাকাশে বরুণদেবের অধীনে যখন আসেন, তিনিও যেন মদমত্তই হয়ে যান।
সজ্জন মানুষদের জরা প্রথমে আসে চিত্তে; বিষয়ের ভোগের প্রতি বিতৃষ্ণা তাঁদের মন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় অল্প বয়সেই। এই জগৎ-সংসারের অসারতা তাঁরা জেনে যান তখন থেকেই। তাই চিত্তের জড়তা আসে তাঁদের যৌবনকালেই।
আমাদের বিচিত্র এই জগৎ-সংসারে সকল মানুষই নিজেদের খাওয়া-পরা জোগার করতে ভিন্ন ভিন্ন পেশার আশ্রয়ে পরস্পর পরস্পরের উপর বিভিন্ন উপায় প্রয়োগ করতে থাকে। এ জগৎ চলেই শুধু একে অন্যকে শোষণ করে।
রাজবাড়ির “সম্মার্জন কর্তা” হলেও ঝাড়ুদার গোরম্ভ কিন্তু রাজার লোক। তাই গোরম্ভকে কী করে প্রসন্ন করা যায় সেই নিয়ে সাত-পাঁচ ভাবতে শুরু করলেন দন্তিল।
নারীদের কাছে অগম্য বলে কেউ নেই, তারা কে সুপুরুষ বা কে কুপুরুষ সে-সব কিছুই দেখে না। তাদের একটা পুরুষ পেলেই হল। তাই স্ত্রীদের বিশ্বাস করা যায় না।
যিনি রাজার ভালো চান জনগণ সাধারণত তাঁকে পছন্দ করেন না মোটেই। কারণ রাজা শুধু ছলে বলে আর কৌশলে বিভিন্ন রকম কর বসিয়ে প্রজার ধন হরণ করতে চায় মাত্র।