শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

দুই বাংলার উপন্যাস: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-৬: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-৬: বসুন্ধরা এবং…

ক্লাইভ রো মনে একরাশ আশঙ্কা নিয়ে পরদিন সকালে ক্লাইভ রো-র নির্দিষ্ট ঠিকানায় সিঁড়ি ভেঙে একতলা দোতলা টপকে তিনতলায় পিটারসন টি কোম্পানির অফিসে পৌঁছল বিনয়কান্তি। একতলা দোতলায় বড় বড় হলঘরের বাইরে দেওয়াল জুড়ে অনেক অফিসের সাইনবোর্ড। ঘরের ভেতরে লোক গিজগিজ করছে। এক-একটা ঘরে অনেকগুলো করে টেবিল। তিনতলায় পৌঁছে দেখল ঘরের বাইরে একটা সাইনবোর্ড 'পিটারসন টি কোম্পানি'—প্রোপ্রাইটর উইলিয়াম পিটারসন। পাশে একটা ছোট সাইনবোর্ড 'পিটারসন জুট ট্রেডারস'। দরজা টপকে ভেতরে ঢুকতেই খাকি পোশাকের একজন লোক বসেছিল। বিনয়কান্তি ইতস্তত করছে...

read more
পর্ব-৫: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-৫: বসুন্ধরা এবং…

ফড়েপুকুর গুহদের ব্যবসা আরও বাড়ল—কলকাতায় তারা গুদাম নিল। এর ফলে কলকাতায় পাকাপাকিভাবে বসবাসের দরকার পড়ল। কাজেকর্মে সুবিধের জন্যে কলকাতার ফড়েপুকুরে একটা পুরোনো দোতলা বাড়ি কেনা ছিল। কলকাতায় এলে তাঁরা সেখানেই উঠতেন। এদিকে বড়কর্তার খাওয়া-দাওয়ার নানারকম ধরাকাট—তাই কত্তামা ঠিক করলেন বাখুন্ডা থেকে তিনিও কর্তাবাবুর সঙ্গে কলকাতার ফড়েপুকুরের বাড়িতে গিয়ে থাকবেন। রান্নাবান্নার জন্য বসুন্ধরা এবং সঙ্গে বিনয়কান্তিকেও কোটালীপাড়ার গাছগাছালি আর টলটলে পুকুরঘেরা সোঁদামাটির গ্রাম্যজীবন ছেড়ে ইট-কাঠ-পাথরে ভরা কলকাতায় আসতে হল।...

read more
পর্ব-৪: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-৪: বসুন্ধরা এবং…

বসুন্ধরা এভাবে ছ’মাস কেটে গেল। কোনও অঘটন ঘটেনি এটা বুঝে শ্যামসুন্দর একটু নিশ্চিত হলেন। কৃষ্ণসুন্দর বায়না ধরল ভাইপোর অন্নপ্রাশনের। দাদা রাজি হয়ে গেলেন। অন্নপ্রাশনের জোগাড়যন্ত্র নিমন্ত্রণ সব একা কৃষ্ণসুন্দর সামলাতে লাগলেন। অন্নপ্রাশনের ঠিক দু'দিন আগে কৃষ্ণসুন্দরের খেয়াল হল সে তার পালাগানের গুরু রাখাল গোঁসাইকেই আমন্ত্রণ জানাতে ভুলে গেছে। তিনি থাকেন মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জ যেতে গেলে মাঝে পদ্মা নদী। নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে আচমকা ঝড় উঠল। নৌকাডুবিতে মারা গেলেন কৃষ্ণসুন্দর। যেদিন অন্নপ্রাশন হবার কথা ছিল সেদিন ভাইকে...

read more
পর্ব-৩: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-৩: বসুন্ধরা এবং…

দেখা জানা শোনা আমরা যারা ষাটের আনাচেকানাচে তারা অনেক কিছু দেখেছি। পাকানো কালো বা সাদা তারের বিনুনি ঝোলানো কালো ঝনঝন করে বাজা গম্ভীর টেলিফোন থেকে হাল আমলের লাল-নীল-সবুজ পাতলা ঝকঝকে মোবাইল ফোন। হিটার থেকে মাইক্রোওভেন কুকিংরেঞ্জ। ঘরের কোণজোড়া চারপেয়ে ঢাউস টেলিভিশনের ঢাকনা-বন্ধ বাক্স থেকে দেওয়াল জোড়া পাতলা ফিনফিনে স্মার্ট টিভি। ছাতে একসঙ্গে ডাবল অ্যান্টেনা। নীচে একটু মোটাসোটা কাক-বসা পাইপের আমাদের দূরদর্শন অ্যান্টেনা আর তার ওপরে কোনাকুনি কাতলা মাছের কাঁটার মতো বাংলাদেশের অ্যান্টেনা। সেই থেকে আজ তারে তারে ছয়লাপ কেবল্...

read more
পর্ব-২: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-২: বসুন্ধরা এবং…

নতুন অফিস ক্লাইভ রো-এর পুরোনো অফিস থেকে লোয়ার রডন স্ট্রিটের ঝকঝকে বাড়িতে উঠে এল বসুন্ধরা গ্রুপের নতুন অফিস৷ আর সকলকে চমকে দিয়ে বিনয়কান্তি দত্ত কোম্পানির বহু সুখদুঃখের সঙ্গী সবচেয়ে প্রবীণ কর্মী তারক নিয়োগীর হাতে কাঁচি ধরিয়ে উদ্বোধনের লাল ফিতে কাটতে দিলেন৷ বোতাম টিপে পর্দা সরানো নয়—দাদু ছিলেন ট্র্যাডিশন্যাল ফিতেকাটা উদ্বোধনে বিশ্বাসী৷ অবাক বিস্ময় আর দুরন্ত আবেগে তারকবাবুর চশমা ছাপিয়ে দুচোখ জলে ভরে গিয়েছিল সেদিন৷ বিনয়কান্তি বিব্রত তারকবাবুকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে এগিয়ে দিয়েছিলেন লাল ফিতে বাঁধা নতুন অফিসের...

read more
পর্ব-১: বসুন্ধরা এবং…

পর্ব-১: বসুন্ধরা এবং…

সুবর্ণকান্তি লকডাউন না হলে এ বাড়ির লাইব্রেরি ঘরটা খোলা হত না!! না, এটা করোনার ভালো দিক নয়, কিন্তু এরকম নিশ্ছিদ্র অবকাশ মিলত কি?? আমি সুবর্ণকান্তি দত্ত। আমি প্রথম ব্যাচ মাধ্যমিক। প্রথম ব্যাচ উচ্চমাধ্যমিক। এখন আমি ষাট পেরিয়ে গেছি। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল-যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তারপর ইউকে-র গ্লাসগোতে মাস্টার্স করিয়ে আনেন দাদু বিনয়কান্তি দত্ত। পরে আইআইএম কলকাতার ম্যানেজমেন্টের ছাপ। সরকারি অফিস হলে এখন তো রিটায়ারমেন্ট হয়ে যেত, নিজেদের ব্যবসা তাই রিটায়ারমেন্ট নেই, কিন্তু করোনার প্রকোপ...

read more

 

 

Skip to content