ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে গ্রিকরা নাকি যুদ্ধে যাওয়ার আগে নোনা শাকের আগা তুলে খেত। সেক্সপিয়ার তাঁর ‘কিং লিয়ার’ নাটকে এই শাকের উল্লেখ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের নাকি অন্যতম প্রিয় খাদ্য ছিল এই নোনা শাকের পদ।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে গ্রিকরা নাকি যুদ্ধে যাওয়ার আগে নোনা শাকের আগা তুলে খেত। সেক্সপিয়ার তাঁর ‘কিং লিয়ার’ নাটকে এই শাকের উল্লেখ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের নাকি অন্যতম প্রিয় খাদ্য ছিল এই নোনা শাকের পদ।
ত্রিপুরার রাজা এবং রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যেও সাহিত্য চর্চার ধারা ছিল। সে যুগের একজন সুবিখ্যাত বৈষ্ণব কবি রাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যের কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর পরবর্তী রাজা এবং রাজপরিবারের সদস্যরাও কাব্য চর্চা করেছেন।
গিরা শাক নামটার সঙ্গে পরিচয় শৈশব থেকে। আমাদের গ্রামের গরিব মানুষজনকে দেখতাম প্রায়শই নদীর ধারে যেত গোরুর জন্য ধানি ঘাস আর নিজেদের খাওয়ার জন্য গিরা শাক আনতে। খাদ্য হিসেবে গিরা শাকের সঙ্গে খুব ছোটবেলায় পরিচয় না হলেও ১৩-১৪ বছর বয়সে সুযোগ আসে গিরা শাকের রান্না করা পদ খাওয়ার।
ব্রহ্মপুত্রের পাড়েই রয়েছে আরও একটি উল্লেখযোগ্য জায়গা ধুবরি। এর সঙ্গে পৌরাণিক গল্পের এক যোগ সূত্র রয়েছে। ধুবরী শব্দটি এসেছে ধুবি বা ধোপা শব্দ থেকে, অর্থাৎ যাঁদের পেশা কাপড়চোপড় ধোয়া। বলা হয় পদ্মপুরাণ আখ্যানের লখিন্দর -বেহুলার কাহিনির সঙ্গে এই জায়গার নাম জড়িয়ে রয়েছে।
অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে ত্রিপুরার ইতিহাসের এক বর্ণাঢ্য চরিত্র শামসের গাজির বীরত্ব, সাধারণ প্রজা থেকে তাঁর ত্রিপুরার সিংহাসন লাভ ইত্যাদি নিয়ে রচিত হয়েছিল ‘গাজিনামা’।
সুন্দরবন অঞ্চলে এই উদ্ভিদটি পোড়া ঘা ও ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করার প্রচলন রয়েছে। এই উদ্ভিদের কন্দ বেটে প্রস্তুত ক্বাথ পোড়া ঘা ও ফোঁড়ার ওপর দিনে দু’বার করে লাগালে উপকার হয়। তবে এই লৌকিক চিকিৎসার রীতি বর্তমানে অতি বিরল।
শিবসাগর জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে, ফেলে আসা দিনের অনেক চিহ্ন। এমনই এক ঐতিহাসিক জায়গার নাম গড়গাঁও। জায়গাটি শিবসাগর শহর থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলমিটার দূরে অবস্থিত। দীর্ঘদিন অহোম রাজাদের রাজধানী ছিল এই গড়গাঁও। এখানে রাজা শুক্লেনমুং রাজধানী স্থাপিত করেন এবং কারেংঘর নামের একটি রাজভবন নির্মাণ করেন।
রাজ আমলে রচিত অপর একটি কাব্যগ্ৰন্হ হলো ‘শ্রেণীমালা’। কাশীচন্দ্র মাণিক্যের রাজত্বকালে (১৮২৬-২৯) এটি রচিত হয়েছিল। রচনা করেছিলেন দুর্গামণি উজির। চারখণ্ডে বিভক্ত এই গ্ৰন্হে ত্রিপুরার রাজবংশের বিবরণ লিপিবদ্ধ রয়েছে।
ছোটবেলা বেশ কয়েক জায়গায় দেখতাম রজনীগন্ধা গাছের পাতার মতো। কিন্তু বেশ বড় আকারের গাছের ঝোপ থেকে রজনীগন্ধার মতই লম্বা স্টিক উঠে আসত আর তার মাথায় সাদা রঙের ফুল ফুটত। ফুলগুলোর অসাধারণ সুগন্ধ। তবে ফুলের কাছাকাছি গেলে গন্ধটা এত তীব্র হয় যে সহ্য করা মুশকিল।
অসমের জাতিঙ্গা এমনই একটি রহস্যময় গ্রামের নাম। ডিমা হাসাও জেলার হাফলং শহরের কাছে একটি ছোট গ্রাম জাতিঙ্গা। মাচরাঙা, বক, ব্লাক, বিটার্ন, টাইগার বিটার্ন ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পাখি আসে এখানে এবং মৃত্যু বরণ করে। তবে পরিযায়ী পাখি মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। হাফলং অসমের শৈল স্টেশন। প্রকৃতি নিজের হাতে যেন সাজিয়ে দুলেছে এই পার্বত্য অঞ্চলকে।
ত্রিপুরার রাজপরিবারে হোলি উৎসবের এক বিশেষ ঐতিহ্য ছিল। এক সময় রাজপুরির হোলি উৎসবে ইংরেজ সাহেবরাও অংশ গ্রহণ করেছেন। বীরচন্দ্রের রাজত্বকালে হোলি উৎসব আরও মাধুর্যময় হয়ে উঠেছিল।
প্রাচীন সুন্দরবনের মানুষ এই গাছটিকে কোন লৌকিক চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করত কিনা তেমন তথ্য পাওয়া যায় না। যদিও অন্যান্য দেশে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই গাছটির বিভিন্ন অংশ নানা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এমনই কিছু ব্যবহার প্রাচীন সুন্দরবন অঞ্চলেও প্রচলিত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
অসমকে নিয়ে এমন অনেক গল্প শোনা যায়, যা আদৌ কখনও ঘটে ছিল কি না, কে বলতে পারে। অসমের এক বার কোনও এক রাজা যুদ্ধ করার জন্য সৈন্য সামন্ত নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কোনও এক পাহাড়ে নাকি চড়াই করতে গিয়ে নাকি সমস্ত সেনাবাহিনী অদৃশ্য হয়ে যায়। তাদের কোনও চিহ্ন মাত্র আর কেউ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ত্রিপুরার মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৃপতি ছিলেন ধন্য মাণিক্যের আমলে রাজ্যের সীমা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিল। বঙ্গাধিপতি হুসেন শাহকেও তিনি যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন। পার্শ্ববর্তী এলাকা সমূহ জয় করে সেসব ত্রিপুরার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন তিনি। উদয়পুরে মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির প্রতিষ্ঠা তাঁর অক্ষয় কীর্তি হয়ে আছে। ধন্য মাণিক্য বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
নদী ও খালের ধারে ঝোপে ঝাড়ে কিংবা কোনও বড় গাছের গায়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকতে দেখেছি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ লতানে উদ্ভিদ দুধিলতাকে। এ কিন্তু প্রকৃত ম্যানগ্রোভ নয়। এ হল ম্যানগ্রোভ-সহযোগী উদ্ভিদ। এর পাতা বা শাখা ভাঙলে সাদা দুধের মতো আঠা অর্থাৎ তরুক্ষীর নিঃসৃত হয় বলে মনে হয় এর নাম দুধিলতা।