এখন চাকুরিরতা গৃহিণীরা সন্তান এবং বাড়ির অসুস্থ বয়স্কদের দেখার জন্য ‘আয়া’ নামের গৃহ-সহায়িকা রাখেন। কিন্তু রোজ দিন ঝামেলা, অবিশ্বাস, ঝগড়াও চলতেই থাকে।

এখন চাকুরিরতা গৃহিণীরা সন্তান এবং বাড়ির অসুস্থ বয়স্কদের দেখার জন্য ‘আয়া’ নামের গৃহ-সহায়িকা রাখেন। কিন্তু রোজ দিন ঝামেলা, অবিশ্বাস, ঝগড়াও চলতেই থাকে।
একটি সমীক্ষা তে দেখা গিয়েছে, একজন নারী যেখানে সারাদিনে ২৯৩ মিনিট সময় ব্যয় করতে বাধ্য থাকেন বাড়ির কাজ করার জন্য, সেখানে একজন পুরুষ ৯৩ মিনিট ব্যয় করেন।
রান্নাঘর এখনও অবধি আমাদের সমাজে মেয়েদের কাছে এমন একটি জায়গা, যার সঙ্গে আবেগ এবং রুটিন রান্না বা একই কাজ করার জায়গা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে।
নারীদের যে অসুখ হতে পারে আর তা সারিয়ে তোলার জন্য পথ্য এবং যত্নের যে নিবিড় যোগাযোগ আছে, তা আমরা খুব বিস্তারিত ভাবে আলোচনা বা ভাবতে পারি না।
সতীদাহ প্রথার পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা এখনও নারীদের বয়ে চলতে হচ্ছে। সেই যন্ত্রণা যা সীতা থেকে শুরু হয়েছে তার থেকে কি ভাবে মুক্ত হবে মেয়েরা? না না রকম পন্থার সন্ধানে থাকতে হবে আমাদের।
ভারতীয় সমাজে একসঙ্গে দুটি দর্শন যেন পাশাপাশি অবস্থান করে। একদিকে পিতৃতান্ত্রিক দর্শন, অন্যদিকে সীতা ও সূর্পণখাদের দর্শন। পিতৃতান্ত্রিক দর্শন আমাদের সব সময় মনে করায়, আমরা আছি পিতার দেশে।
শ্বশুরবাড়ির বাধ্য বধূ হতে গিয়ে পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়া মেয়েদের সংখ্যা অনেক। এই ছেড়ে যাওয়া মেয়েদের নিজেদের ইচ্ছের কথা জিজ্ঞেস করলে কোনও উত্তরও পাওয়া যায় না।
নারীরা যেহেতু বাড়ির মধ্যে পরিবারের দেখভালের কাজ করে থাকেন যা মূলত ধরা হয় আবেগপূর্ণ, স্বাভাবিক কাজ, তাই আমাদের সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থা এই কাজকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি।
এখনও বহু নারী প্রতি শ্রমিক দিনে খুবই অল্প মজুরিতে কাজ করে থাকেন। শহরাঞ্চলে যদিও বা একটু মজুরি বেশি পেতে পারেন। তবে সেখানে পুরুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বেশি।
আমরা সবাই পুরাণ বর্ণিত এই মুনির কথা শুনেছি। মুনির জন্মবৃত্তান্ত থেকেই শুরু করছি কারণ রহস্য সেখানেই লুকিয়ে আছে। মুনির পিতাও মুনি ছিলেন।
লক্ষ্মীর পাঁচালির কথা মনে করুন, সেখানে বলা আছে নারী জোরে কথা বলবে না কিংবা জোরে হাসবেও না। এর উলটটা মানে পুরুষের জন্য কিন্তু এরকম কোনও নির্দেশিকা নেই।
ভালোবাসার রকমফের আছে অনেক। সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের ভালোবাসা, ভাই বোনের মধ্যেকার, ভাষার প্রতি, দেশের প্রতি, গয়নার প্রতি, টাকার প্রতি এরকম অনেক কিছুর প্রতি মানুষের ভালোবাসা প্রকাশ পায়। আবার এই ভালবাসা বদলে যায় ঘৃণাতে।
মনসা বনবাসী হয়েও নিজের বাড়ি নির্মাণ করতে সমর্থ হন। এই বিষয়টিও ভাবার আছে যে, মনসা কোনও ভাবেই ভেঙ্গে পড়েনি। নিজেকে কখনই কারও অধীন বা দুর্বল ভাবার অবকাশ রাখেনি। প্রতিটি অবমাননার জবাব তিনি দিয়েছেন।
সরলা দেবী চৌধুরাণীর লেখা অনন্য জীবনী ‘জীবনের ঝরাপাতা’তে স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নারীরা সেই সময় নিজেদের কীভাবে তৈরি করেছিলেন তার এক উৎসাহ বর্ধক বর্ণনা পাওয়া যায়।
পিতৃতান্ত্রিক সমাজ গণতান্ত্রিক নয়। সেই জন্য যখন নারী প্রতিবাদী হয়, পুরুষ এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজ অস্থির হয়ে ওঠে। তারা তখন যৌথ ভাবে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়।