রাম চলেছেন নির্ধারিত বনবাস যাপনে। পথে গঙ্গাতীরে রাত্রি ভোর হল। সূর্যোদয় সমাগত। কোকিলের কলকাকলিপূর্ণ ভোরে, বনভূমি কেকাধ্বনিমুখর, রামচন্দ্র লক্ষ্মণকে বললেন, তরাম জাহ্নবীং সৌম্য শীঘ্রগাং সাগরঙ্গমাম্। হে সৌম্য, চল সাগরের দিকে দ্রুত ধাবমানা জাহ্নবী পার হই। জ্যেষ্ঠ রামের কথানুসারে সুমিত্রানন্দন লক্ষ্মণ গুহ ও সারথিকে ডেকে আনলেন। স্থপিতি গুহর নির্দেশে একটি শক্তপোক্ত, সুন্দর, শুভ, অনায়াসে পারাপারের উপযুক্ত, সঙ্গে একজন দক্ষ কর্ণধার, এমন নৌকা নিয়ে উপস্থিত হলেন অমাত্যরা। গুহর অনুরোধে, রাম, খড়্গ ও তূণীর যথাযথভাবে বেঁধে নিলেন।...
মহাকাব্যের কথকতা
পর্ব-৬৭: পাঞ্চালদেশে যাত্রাপথে পাণ্ডবদের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় কিসের ইঙ্গিত?
পঞ্চপাণ্ডব, মা কুন্তীর সঙ্গে একচক্রানগরীতে যে ব্রাহ্মণের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন, সেই আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণকে বকরাক্ষসের করালগ্রাস হতে দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমসেন একাই, উদ্ধার করলেন।
পর্ব-৬৬: বিগ্রহে রামের প্রাণপ্রতিষ্ঠা, আদিকবির নবীন নায়ক রামের মানবিক মুখ
অরণ্যবাসে চলেছেন রাম। রজনী অবসানান্তে, বহুদূরে এগিয়ে গেলেন। যেতে যেতে অবশেষে ভোর হল। বড় সুন্দর মঙ্গলময় সে সকাল। রাম তাঁর প্রাতঃকালীন মাঙ্গলিক সন্ধ্যা ইত্যাদি সমাপন করলেন। রাজ্যের শেষ সীমায় উপস্থিত হলেন তিনি। কুসুমিত অরণ্যভূমি দেখতে দেখতে শ্রেষ্ঠ ঘোড়ায় টানা রথে দ্রুত অতিক্রম করে গেলেন অনেকটা পথ।
পর্ব-৬৫: রাজা যযাতির উপাখ্যান—পৌরবদের বর্ণ বিপর্যয় না উত্তরণের কাহিনি?
নহুষনন্দন যযাতি রাক্ষসগুরু শুক্রাচার্যের অভিশাপে জরাগ্রস্ত হলেন। তাঁর ত্রুটি হল—তিনি আচার্য শুক্রাচার্যের আদেশ অমান্য করে শুক্রাচার্যকন্যা দেবযানীর দাসী, রাক্ষসরাজ বৃষপর্ব্বার কন্যা শর্মিষ্ঠার গর্ভে তিনটি পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন।
পর্ব-৬৪: প্রজাদের আনন্দ, স্বস্তি, আশ্রয় রাম—তাঁর কাছে প্রজাদের আনুগত্যের স্থান কোথায়?
তমসাতীরে রামচন্দ্রের বনবাসজীবনের সূচনা। ঘনায়মান রাতের অন্ধকার। রমণীয় তমসা নদী তীরেই হবে রাত্রিযাপন। রামচন্দ্র লক্ষ্মণকে আশ্বস্ত করেলেন, হে সৌমিত্রি লক্ষ্মণ, উৎকণ্ঠার কোনও কারণ নেই। তোমার কল্যাণ হোক। আজই আমাদের বনবাসের প্রথম নিশিযাপন।
পর্ব-৬৩: মহাভারতে উল্লিখিত মিথ্যাশ্রয়ের প্রাসঙ্গিকতা কী আজও আছে?
শর্মিষ্ঠার মনোবাসনা হল যযাতির ঔরসে পুত্রলাভ। অশোক বনের কাছে, নিরালায়, রাজার দর্শনের অপেক্ষায় অবস্থানরতা শর্মিষ্ঠাকে দেখতে পেলেন রাজা যযাতি। শর্মিষ্ঠা, রাজার কাছে সন্তান প্রার্থনা করলেন। শর্মিষ্ঠার বংশপরিচয়, চরিত্র ও রূপ,রাজার অজানা নয়।
পর্ব-৬২: ক্রৌঞ্চবধের বিষাদ কী ছেয়ে আছে রামায়ণের প্রেক্ষাপট?
দেবী কৌশল্যার ক্ষোভ, দুঃখ, দোলাচলচিত্ততা দূর করতে এগিয়ে এলেন লক্ষ্মণজননী দেবী সুমিত্রা। প্রকৃত অর্থে ধার্মিক রাম, সৎ ও পুরুষশ্রষ্ঠ। পিতাকে সত্যবাদীরূপে প্রমাণ করেছে সে। এই কারণে সে রাজ্য ত্যাগ করে বনবাসী হয়েছে। ধার্মিক সৎ ছেলের জন্যে শোক কেন?
পর্ব-৬১: মহাভারতের রাক্ষসরা কী আজও বর্তমান? প্রসঙ্গ— বকরাক্ষসবধ
প্রবল আত্মবিশ্বাসী দেবী কুন্তী। তাঁর মহাবলশালী পুত্র ভীম কখনও ব্যর্থ হবে না। বকরাক্ষসের কাছে ভোজ্য পৌঁছে দেবে সে এবং নিজেও বিপদমুক্ত হবে। দ্বিতীয় পাণ্ডব রাক্ষসের মোকাবিলায় প্রস্তুত।
পর্ব-৬০: আধুনিক ভারতীয় রাজনীতির চালচিত্রে কি দশরথ ও কৈকেয়ীর ছায়া?
রাম পিছুটান উপেক্ষা করে চলেছেন বনবাসে।রামের নির্দেশে সারথি সুমন্ত্র রথ ছোটালেন চরম অশ্বগতিতে। তাঁর রথের পিছনে ধাবমান জনস্রোত, স্বজন, স্নেহশীল বৃদ্ধ পিতা। অন্তঃপুরিকাদের আর্ত চিৎকার, অনাথ, দুর্বল, সহায়হীন মানুষের আশ্রয় যিনি, তিনি আজ কোথায় চলেছেন?
পর্ব-৫৯: মহাভারতের বিচিত্র কাহিনিগুলিতে আছে মৃত্যুজয়ের অভয়বাণী
একচক্রা নগরীতে পাণ্ডবদের আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণের পরিবার, এক ঘোর সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। কোনও এক রাক্ষসের কবলে পরেছে ব্রাহ্মণ পরিবারটি। পরিবারের মধ্যমণি ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রী রাক্ষসের মুখোমুখি হতে ইচ্ছুক। কন্যাটি পিতামাতার আত্মত্যাগের উদ্যোগ ও পরিণাম শুনে, সেও তার নিজ বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তিজাল বিস্তার করল।
পর্ব-৫৮: যুগান্তরেও রামচন্দ্র, পুরুষোত্তমরূপে প্রসিদ্ধ কেন?
রাজা দশরথ এমন বলতে বলতেই কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হল তাঁর। অস্ফুট উচ্চারণে তিনি বলে উঠলেন, “রাম”। আর কোন কথা বলতে পারলেন না। পর মুহূর্তে সচেতন হয়ে, সাশ্রু নয়নে সুমন্ত্রকে বললেন, শ্রেষ্ঠ অশ্ব যোজনা করে রথ প্রস্তুত করা হোক, সেই রথে রাম যাবেন জনপদের সীমানা ছেড়ে গহন অরণ্যে।
পর্ব-৫৭: সাধারণের প্রতি পাণ্ডবদের কৃতজ্ঞতার প্রকাশ কোন মহাভারতীয় শিক্ষা?
পঞ্চপাণ্ডবদের উত্তরসূরী ঘটোৎকচের জন্মের পরে শর্ত অনুযায়ী বিদায় নিলেন ভীমসেনের স্ত্রী হিড়িম্বা। পাণ্ডবরা মা কুন্তীকে নিয়ে এগিয়ে চললেন বনান্তরে। এখন তাঁদের অঙ্গে তপস্বীর ছদ্মবেশ। জটা, বল্কল এবং মৃগচর্ম। যাত্রাপথে মৎস্য, ত্রিগর্ত্ত, পাঞ্চাল ও কীচকদেশ অতিক্রম করে এগিয়ে চললেন তাঁরা। পথে অধ্যয়নের বিরাম নেই।
পর্ব-৫৬: রামায়ণে রামচন্দ্রের যাত্রাপথ সুগম হওয়ার কারণেই কি সীতার উপস্থিতি?
রামের বনগমনে মানসিক প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। তিনি এই ভোগসর্বস্ব জীবন পরিত্যাগ করে চলেছেন বনবাসে। অনাসক্তি তাঁর মনে, কি প্রয়োজন চতুরঙ্গ সেনার? শ্রেষ্ঠ হাতিটিকে দান করে তার বন্ধনরজ্জুর প্রতি মায়া কেন?
পর্ব-৫৫: ধর্ম, অর্থ, কাম—এই ত্রিবর্গের সাধন, ভীমসেনের আচরণে কী প্রতিফলিত হয়েছে?
বারণাবতে কুন্তীসহ পঞ্চপান্ডবকে জতুগৃহে দগ্ধ করতে চেয়েছিলেন কৌরবদের দুষ্ট চক্র। কুরুরাজ ধৃতরাষ্ট্রের পূর্ণ সম্মতি নিয়ে দুর্যোধন, দুঃশাসন, শকুনি, কর্ণ এই চক্রান্তে অংশ নিয়েছিলেন। চক্রান্ত ব্যর্থ হল। বিদুরের সহায়তায় রক্ষা পেলেন পাণ্ডবরা।
পর্ব-৫৪: রাজনীতিতে, যুগান্তরেও স্বার্থচিন্তার আবহমান প্রভাব
রানি কৈকেয়ী মোহবশত নিজের অসৎপথে চালিত করছেন রাজাকে। সুমন্ত্রের বিবেচনায়, প্রচলিত প্রবাদানুসারে ছেলেরা পিতার এবং মেয়েরা মায়ের স্বভাব অনুসরণ করে থাকে। এই প্রবাদ, সত্যে পরিণত হল আজ।