শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবির নায়ক অসিতবরণ, নায়িকা অরুন্ধতী দেবী, পরিচালক অসিত সেন ও লেখক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

একটি দৃশ্যের শর্ট নেওয়া হবে ক্রেনে চড়ে। ক্রেনে উঠেছেন ছবির চারজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন শিল্পী ছবির নায়িকা অরুন্ধতী দেবী এবং সহনায়ক প্রশান্ত কুমার আর রয়েছেন পরিচালক অসিত সেন ও ক্যামেরাম্যান। সবাই ক্রেনে ওঠার পরিচালক ক্রেন উঁচুতে তোলার নির্দেশ দিলেন। ক্রেনটা যতই উঁচুতে উঠছে প্রশান্তকুমার ততই ভয় পেয়ে বসে পড়ছেন। কিছুতেই অসিত সেন শটটা নিতে পারছিলেন না। প্রত্যেকটা শট এন জি হয়ে যাচ্ছে। শেষে অসিত সেন নিজেকে সামলাতে না পেরে প্রশান্তকে একটা থাপ্পর মেরে বসলেন গালে। প্রশান্তকুমার হকচকিয়ে গেলেন এই ঘটনায়। অরুন্ধতী দেবী প্রশান্তকুমারকে সাহস যুগিয়ে বললেন, ‘তুমি ভয় পাচ্ছ কেন? আমিও তো রয়েছি ওই ক্রেনের মধ্যে।’ পরে অবশ্য প্রশান্তকুমার দুর্দান্ত শট দিলেন।

প্রশান্ত কুমার শট ‘ওকে’ হয়ে যাওয়ার পর ক্রেন থেকে নেমেই ‘আমি বাড়ি চলে যাব’ বললেন। অসিত সেন তখন একটা শট নেওয়ার তোড়জোড় করছেন। তিনি ঠিক করে রেখেছিলেন শ্যুটিং শেষ হলে প্রশান্ত কুমারকে সব বুঝিয়ে বলবেন। প্রশান্ত কুমার যখন বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, তখন অরুন্ধতী দেবী প্রশান্ত কুমারকে বললেন, ‘মানিক যে তোমায় মেরেছে এটা ভুলে যাও। তুমি জেনে রাখো এই শটটা জীবনে থেকে যাবে। যাও মানিকের কাছে ক্ষমা চাও।’ প্রসঙ্গত বলে রাখি মানিক হল, অসিত সেন এর ডাক নাম। অরুন্ধতী দেবীর কথামতো প্রশান্ত কুমার অসিত সেন এর কাছে গিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘দাদা আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।’ সেখানেই এই ভুল বোঝাবুঝির শেষ হয়েছে। যে ছবিটির ঘটনার কথা বললাম সে ছবির নাম ‘পঞ্চতপা’।

ছবির পোস্টার

দর্শক ও সমালোচক মহলে খুবই প্রশংসিত হয়েছিল ছবিটি। এটি হল পরিচালকের দ্বিতীয় ছবি। কাহিনীকার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। পরিচালক নিজেই এই ছবির চিত্রনাট্যকার। ‘পঞ্চতপা’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৭ সালে বসুশ্রী, বীণা প্রেক্ষাগৃহে। ছবির নায়ক হলেন অসিতবরণ। অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চন্দ্রাবতী দেবী, পাহাড়ী সান্যাল, কমল মিত্র, পদ্মা দেবী প্রমুখ শিল্পী।

Skip to content