‘মমতা’ ছবির পরই অসিত সেন অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়ে যান বম্বের হিন্দি ছবির বাজারে। তখন একটি পর একটি ছবি তাঁর জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনীকে জুটি করে ছবি করলেন ‘শরাফৎ’। সেটি সুপারহিট ছবি হয়। ‘মা অউর মমতা’ জনপ্রিয়তা পায়। ‘দীপ জ্বেলে যাই’ ছবির হিন্দি তিনি করলেন ‘খামোশি’। সেটিও জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এছাড়া ‘চলাচলে’র হিন্দি করলেন ‘সফর’।
এইরকম যখন পরিচালক অসিত সেনের জনপ্রিয়তা তখন একদিন দক্ষিণ ভারতের উত্তম কুমার যিনি সেই শিবাজি গনেশন অসিত সেনকে তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে এলেন। প্রাসাদোপম বাড়ি এবং বাড়ির ভেতরে রয়েছে প্রোজেকশন থিয়েটার হল। শিবাজি গণেশন অসিত সেনকে জানালেন, তিনি অসিত সেনকে এখন দেখাবেন তাঁর ফেভারিট গীতাকে। প্রতিদিন সন্ধেবেলা শিবাজি গনেশন এই থিয়েটার হলে বসে গীতা দেখেন। তারপর অন্য কাজ করেন।
আরও পড়ুন:
পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩৭: মহানায়কের সেই ভুবন ভুলানো হাসি আর সস্নেহ চাহনির কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে
অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-১: একটু শুরুর কথা হলে ক্ষতি কী…
ফলে অসিত সেনের খানিকটা কৌতূহল বাড়ল যে শিবাজি গনেশণের গীতাটা কে? প্রোজেকশন রুমে শুরু হলে একটি ছবির শেষ দৃশ্য। তখন পর্দায় ভেসে উঠেছে নার্স রাধা মিত্রের মুখ। রাধা ক্রমশ কান্নায় ভেঙে পড়ে বলছেন, “আমি অভিনয় করতে জানি না। আমি অভিনয় করতে শিখিনি ডাক্তারবাবু।” তখন অসিত সেন মন্ত্রমুগ্ধ।
আরও পড়ুন:
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-১০: আমাদের কোনও শাখা নেই
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩১: বিড়াল ঘাঁটলেই কি ডিপথেরিয়া হতে পারে?
‘দীপ জ্বেলে যাই’ ছবিটি তো বাংলায় তোলা। সেই বাংলা ছবি শিবাজি গণেশনকে এতটা আপ্লুত করেছিল! যখন শেষ হল তখন শিবাজি গণেশন জানালেন, এই হল তাঁর গীতা। তখন অসিত সেন অভিভূত। কারণ ওই ছবির পরিচালক তো তিনিই।
পরিচালক অসিত সেন।
এই অভিজ্ঞতার কথা অসিত সেন এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন যখন তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল দূরদর্শনের ‘ক্লোজআপ’ অনুষ্ঠানে। তখন তিনি বলেছিলেন, এই ঘটনার কথা। অসিত সেনের জন্মশতবর্ষ চলছে। এই বিবরণের মধ্য দিয়ে শতবর্ষের অসিত সেনকে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম।
* পর্দার আড়ালে (Behind the scenes) : ড. শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh) বিশিষ্ট অধ্যাপক ও অভিনেতা।