মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহুপঠিত একটি ছোটগল্পের নাম ‘দীপার প্রেম’। সেই গল্প নিয়ে অরুন্ধতী দেবী একটি ছবি পরিচালনা শুরু করেছিলেন। অভিনেত্রী অরুন্ধতী দেবী ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ছবি পরিচালনা করেছেন। যার মধ্যে ছিল ছুটি, পদিপিসির বর্মীবাক্স, মেঘ ও রৌদ্র প্রভৃতি। দীপার প্রেম ছবির প্রযোজক হলেন প্রখ্যাত প্রযোজক আর ডি বানশালের ছেলে কমল বানশাল। নাম ভূমিকায় অর্থাৎ দীপার চরিত্রে মুনমুন সেন৷ তিনি ব্রাহ্মণ পরিবারের শিক্ষিত সুন্দরীর চরিত্রে। তিনি যাকে ভালোবাসেন সেই দেবপ্রিয় নিচুজাতের যুগী সম্প্রদায়ের। সেই চরিত্রে তাপস পাল। দীপার ঠাকুরদা ভবনের চরিত্রে বসন্ত চৌধুরি। ঠাকুরমার চরিত্রে ছায়া দেবী। দীপার মা সোনার চরিত্রে অরুন্ধতী দেবী স্বয়ং। জাতপাত নিয়ে দারুণ নাটক ছবির মধ্যে।

নির্মাণ পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল ছবির দৈর্ঘ্য এক ঘণ্টা ৫০ মিনিটের এদিক-ওদিক। প্রযোজক অত্যন্ত দুশ্চিন্তায় পড়লেন। কারণ দু’ঘণ্টার থেকে ছোট ছবি দেখতে দর্শক আগ্রহ বোধ করবেন কেন? এ আজকের কথা নয়। এটি ১৯৮৪ সালের কথা। তখন এক একটি ছবি আড়াই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টার হত। ফলে প্রযোজক পরিচালককে অনুরোধ করলেন ছবির দৈর্ঘ্য বাড়ানোর জন্য। কিন্তু অরুন্ধতী দেবী তাতে সম্মত হলেন না। বারংবার অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আইন আদালতের পথে যাওয়ার জন্য যখন ব্যাপারটি গড়াচ্ছে তখন অরুন্ধতী দেবী প্রযোজককে জানালেন, প্রযোজকেরা যেমন খুশি ছবিটির দৈর্ঘ্যে বাড়াতে পারেন তবে টাইটেল কার্ডে তার নাম ব্যবহার করা যাবে না পরিচালক হিসেবে। অগত্যা কমল বানসাল তাঁদের ঘরের বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবির গান নিয়ে একটি চিত্রহার তৈরি করে ছবির শুরুতে ব্যবহার করলেন। যার মধ্যে ছিল অতল জলের আহ্বান, বিভাস, ওগো বধূ সুন্দরী প্রভৃতি ছবির গান। চিত্রহার শেষ হওয়ার পর শুরু হল দীপার প্রেম ছবি। তাতে মোটামুটি আড়াই ঘণ্টা দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে থাকতে পেরেছিলেন। সম্ভবত এটিই একমাত্র বাংলা ছবি যেখানে টাইটেল কার্ডে পরিচালকের নাম ছিল না। ছবিটি ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি। তখনকার সময়ের পরিচালকেরা তাপস পাল ও মুনমুন সেনকে নায়ক-নায়িকা করে ছবি বানাচ্ছিলেন উত্তমকুমার সুচিত্রা সেনের কথা মাথায় রেখে৷ সেটিও কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি।

Skip to content