সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দেবী চৌধুরানী’ উপন্যাস অবলম্বনে দীনেন গুপ্ত নির্মাণ করেছিলেন ‘দেবী চৌধুরানী’ ১৯৭৪ সালে। নাম ভূমিকায় সেখানে ছিলেন সুচিত্রা সেন। বিপরীতে ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। সেটি অত্যন্ত ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করেছিল। সেই ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে আবার একটি ছবি করতে দীনেন গুপ্ত উদ্যোগী হলেন বঙ্কিমচন্দ্রের কাহিনিকে অবলম্বন করে। সেই সময় তিনি প্রথমে বেছেছিলেন যে উপন্যাস সেটি হল ‘চন্দ্রশেখর’। সে চিত্রনাট্য সুচিত্রা সেনের পছন্দ না হওয়ায় দীনেন গুপ্ত তখন আরেকটি উপন্যাস নিয়ে ছবি তৈরি করতে শুরু করলেন। এ বারে তিনি বেছে নিলেন বঙ্কিমচন্দ্রের ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ উপন্যাসটিকে। সেই উপন্যাস অবলম্বনে ‘রোহিনী’ ছবিটি নির্মাণ পর্বের কাজ শুরু হল।
কয়েকদিনের শ্যুটিং করলেন। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন। গোবিন্দলালের ভূমিকাতে নির্বাচিত শিল্পী ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। কৃষ্ণকান্তের ভূমিকাতে বসন্ত চৌধুরী। ভ্রমরের ভূমিকাতে সোনালি গুপ্ত। এই সমস্ত শিল্পীরা নির্বাচিত হলেন। নাম ভূমিকার শিল্পী সুচিত্রা সেনকে নিয়ে কয়েক দিনের কাজ করলেন। ইতিমধ্যে একটি দৃশ্যের দরকার ছিল রোহিনীর সঙ্গে হরলালের। সেইখানে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কাজ করতে এসে হরলাল চরিত্রের শিল্পী অসীম চক্রবর্তী খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
মেকআপ রুমে তিনি বমি পর্যন্ত করে ফেললেন। অসীম চক্রবর্তী পারলেন না বলে সেই অবস্থায় সুচিত্রা সেনের ডেট তো নষ্ট করা যায় না। তখন শিল্পী পরিবর্তন করতে হল। অসীম চক্রবর্তীর জায়গায় সেখানে নিয়ে আসা হল দিলীপ উপপাধ্যায়কে। দিলীপ মুখোপাধ্যায় তখন হরলাল চরিত্রের শিল্পী হলেন। ইতিপূর্বে দিলীপ মুখোপাধ্যায় বেশ কয়েকটি ছবিতে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। সে তালিকায় আছে উত্তর ফাল্গুনী, সন্ধ্যাদীপের শিখা, প্রিয় বান্ধবী প্রভৃতি।
সবকিছু হওয়া সত্ত্বেও নানান কারণে সেই ছবিটি কিন্তু সম্পূর্ণ হয়নি। অধরা সুচিত্রা সেনের অসম্পূর্ণ একটি ছবি হয়ে রয়ে গেল এই ‘রোহিনী’। যদি এটি সম্পূর্ণ হতো, তাহলে একটু অন্য ধরনের চরিত্রে আমরা সুচিত্রা সেনকে পেতে পারতাম এই রোহিনী ছবির মধ্য দিয়ে।