শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


ছবি প্রতীকী

কোন সকালে খেয়ে বেরিয়েছি৷ সারাদিন আর খাওয়া-দাওয়া নেই৷ আসলে খাওয়ার সময়ও পাইনি৷ সাতক্ষীরায় নেমে জয় মহারাজের সঙ্গে ভ্যানরিকশয় রামকৃষ্ণ মিশনের ওই ভক্ত ভদ্রলোক স্থানীয় আইনজীবী অরবিন্দ কর্মকারের বাড়িতে পৌঁছে খাওয়া-দাওয়া সারতেই প্রায় সন্ধ্যা৷ মাছ থেকে শুরু করে মিষ্টি—খাবারের তালিকা রীতিমতো দীর্ঘ৷ অরবিন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রীর আতিথেয়তা এখনও চোখে ভাসে৷

তাঁদের মেয়ে তিথি কলেজে পড়ে৷ সে কোচিং-এ গিয়েছিল পড়তে৷ জয় মহারাজের সঙ্গে দেখা করার জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই তিথি তাঁর প্রাইভেট টিউটরের সঙ্গে বাড়ি চলে এল৷ তিথি আসার আগে ওর মায়ের সঙ্গে কথাবার্তা হল৷ ভদ্রমহিলার মুখেই শুনলাম, এখানে প্রাইভেট টিউটরদের ভীষণ চাহিদা৷ বিশেষ করে হিন্দু টিউটর৷ ভালো ভালো সাবজেক্টের একেকজন প্রাইভেট টিউটরের মাসিক আয় লক্ষাধিক৷ এঁরা অধিকাংশই হিন্দু৷

অরবিন্দবাবুর কাছে জানতে পারলাম, এখানকার আদালতে সিভিল ও ক্রিমিন্যাল মিলিয়ে দুশো-আড়াইশো হিন্দু আইনজীবী রয়েছেন৷ স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন?

অরবিন্দবাবু বললেন, ‘যদি প্রফেশনের কথা বলেন হিন্দু আইনজীবীদের মধ্যে অবশ্যই একটা প্রতিযোগিতা আছে৷ তবে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো৷ মিলেমিশে থাকতে না পারলে একদিন ঘরবাড়ি বেচে এদেশ থেকে আমাদের পাততাড়ি গোটাতে হবে৷ অন্যান্য প্রফেশনের বহু হিন্দু এখনও এখানে মাটি কামড়ে পড়ে আছে৷ সকলের সুখে-দুঃখে সকলের এগিয়ে আসাটাই বড় কথা৷’

তিথি পড়াশুনোয় ভালো৷ ওকে ওর কলেজের কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম৷ একটু মন খারাপ করেই যেন বলল, ‘নানা গণ্ডগোলের জন্য প্রায়ই ঠিকঠাক ক্লাস হয় না৷ স্টুডেন্টস ইউনিয়নগুলোর মধ্যেও ঝগড়াঝাটি লেগে আছে৷ পড়াশুনো, ক্লাস এসব নিয়ে আজকাল এখানে বেশি লোক মাথা ঘামায় না৷’ তিথির প্রিয় বন্ধু এক গরিব মুসলমান মেয়ে৷ তিথি বলল, ‘আমাদের মেয়ে বন্ধুদের মধ্যে কিন্তু হিন্দু-মুসলমানের ভেদাভেদ নেই৷ তবুও চারপাশে যখন দেখি মনুষ্যত্বের ওপরেও ধর্ম বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, মন খারাপ হয়ে যায়৷’

কলকাতায় উচ্চ-শিক্ষালাভের ইচ্ছা তিথির৷ চোখে-মুখে বুদ্ধির ছাপ৷ আর ওর কথাগুলোও বেশ ভাবায়৷ জয় মহারাজ তিথির গলায় দু’একটা ভক্তিগীতি শুনতে চাইলেন৷ এর আগে যশোর রামকৃষ্ণ মিশনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিথি গান শুনিয়ে এসেছে৷ ও দুটো ভক্তিগীতি গাইলও চমৎকার৷

যশোরে ফেরার পথে ঢাকাগামী নাইট সার্ভিস বাসে উঠেছিলাম৷ বাস কেশবপুর হয়ে যাবে৷ জয় মহারাজ গল্প করতে ভালোবাসেন৷ শুনছিলাম, যশোরেশ্বরী মন্দির থেকে সুন্দরবন মাত্র ৭ কিমি৷ ওখানে ভালো ভালো পিকনিক স্পট আছে৷

যশোর আশ্রমের ছেলেরা নিলয় মহারাজের সঙ্গে গত জানুয়ারিতে এরকমই একটা পিকনিক স্পটে গিয়েছিল৷ খুলনার ডাকোপ উপজেলার অন্তর্গত কৈলাসগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন থেকে দেড় কিমি দূরে সুন্দরবন৷ ওখানে প্রচুর হরিণ শিকার হয়৷ রাখী পূর্ণিমায় সুন্দরবন সন্নিহিত ওই অঞ্চলে মেলা বসে৷ হাজার হাজার হিন্দু ভক্ত পূর্ণিমায় সমুদ্র স্নান করেন৷ মুসলমানরাও উৎসব দেখতে যায়৷ মেলায় কেনাকাটা করে৷ যশোরে পৌঁছলাম রাত সাড়ে ন’টায়৷ ইজিট্যাক্সি নিয়ে আশ্রম৷

ডাইনিং হলে খাওয়ার টেবিলে সুদেব মহারাজ জানতে চাইলেন যশোরেশ্বরী দেবীর মন্দিরে কেমন ঘুরে এলাম? বললাম, ‘মাতৃদর্শনের যে আশা নিয়ে গিয়েছিলাম তা পরিপূর্ণ হয়েছে ঠিকই, মন্দিরের সার্বিক অবস্থা দেখে মন ভেঙে গিয়েছে৷’

সুদেব মহারাজ দুঃখ করে বললেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি একমত৷ যশোরেশ্বরী দেবীর মন্দিরের উন্নতিকল্পে আমাদের সত্যিই কিছু করা দরকার৷’

নানা কথাবার্তায় জানতে পারলাম, যশোর রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপুজোর সময় মহাষ্টমী ও মহানবমীর দিন গড়ে চার-পাঁচ হাজার লোক হয়৷ বিজয়া দশমীর মণ্ডপে দেবীবরণ ও ঘটা করে সিঁদুরখেলা পুজোর অন্যতম অঙ্গ৷

পরদিন বিকেলের বাসে ফরিদপুর হয়ে বরিশালে যাব৷ বরিশালে ৫১ পীঠের অন্যতম একটি পীঠ রয়েছে৷ পীঠদেবী সুগন্ধা৷ তিনি সুনন্দা নামেও পরিচিতা৷ সোন্ধা নদীর তীরে শিকারপুর-তারাবাড়ি গ্রামে এই মহাপীঠ৷ যা উগ্রতারা মন্দির নামে প্রসিদ্ধ৷

যশোর শহরের কয়েকটি মন্দির দেখতে সকালে ইজিট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম৷ সঙ্গে আশ্রমেরই ভক্ত শ্রীমান জয়দেব বিশ্বাস৷ জয়দেব আবার এই আশ্রমের হোমিওপ্যাথ ডাক্তার৷ যশোর হোমিও কলেজ থেকে পাশ করা ডাক্তার৷ প্রতিদিন সকালে আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্ব তাঁর৷ পাশাপাশি যশোর শহরেই এক চিনা কোম্পানি ‘তাইপে ইন্টারন্যাশনাল’-এ চাকরি করেন জয়দেব৷ মাসে ২০/২৫ হাজার বাংলাদেশি টাকা আয় তাঁর৷ প্রতি মাসে তাঁকে কম করেও ২০ লক্ষ টাকার ব্যাবসা দিতে হয় কোম্পানিকে৷ মা ও ভাই বাড়িতে৷ অবশ্য এদিন আউটডোরে রোগীর তেমন ভিড় ছিল না বলেই জয়দেবের পক্ষে বেরনো সম্ভব হয়েছে৷ ইজিট্যাক্সিতে ওঠার আগে চালকের সঙ্গে ভাড়া ঠিক করে নিলাম৷ কোথায় কোথায় যাব মোটামুটি জানিয়ে রাখলাম৷ কারণ, ভাড়া নিয়ে বিদেশ-বিভুঁইয়ে অহেতুক ঝঞ্ঝাট-ঝামেলা ভালো লাগে না৷

প্রথমে গেলাম চাঁচড়া দশমহাবিদ্যা মন্দিরে৷ ১৭২৯ খ্রিস্টাব্দে তৈরি মূল মন্দির এখন ধ্বংসস্তূপ৷ মন্দিরের তোরণ ও প্রাচীরের কিছু কিছু ভাঙা অংশ এখানে সেখানে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আছে৷ ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের পাশেই আরেকটি পাকা মন্দির তৈরি করে দশমহাবিদ্যার অন্যতম রূপ কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷ একপাশে শীতলা মন্দির৷

ধ্বংস হয়ে যাওয়া মন্দিরের পিছনে ঘোষ পরিবারের বসবাস৷ বাড়ির কর্তা নারায়ণচন্দ্র ঘোষ৷ তাঁর দুধের ব্যাবসা৷ ঘি-ও তৈরি করেন৷ শুনলাম, বছরখানেক আগে মন্দিরের জরাজীর্ণ দেওয়াল চাপা পড়ে নারায়ণবাবুর দু’ভাই হঠাৎ মারা যান৷ দুই ভাইয়ের পরিবারের সমস্ত দায়দায়িত্ব তিনিই কাঁধে তুলে নিয়েছেন৷
ঘোষ পরিবারের মাঝবয়সী দুই ভদ্রমহিলা রতনবালা ঘোষ ও হেমবালা ঘোষ যখন জানতে পারলেন আমি কলকাতা থেকে এসেছি কত গল্প! কলকাতার গল্প শুনতে চান৷ বলতে চান নিজেদের কথাও৷ এখনও মন্দিরে তাঁরা পুজো করতে পারছেন বলে জানালেন হেমবালা৷ তিনি নারায়ণবাবুর বোন৷ কোথা থেকে ছুটে এল মুক্তা৷ এ বাড়িরই মেয়ে৷ বছর কুড়ি বয়স৷ সিঁথিতে চওড়া করে সিঁদুর৷ নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের বউ৷ স্বামী মোটামুটি একটা কাজ করে৷ মুক্তার সব আশা হয়তো পূরণও হয় না৷ কিন্তু ওর মিষ্টি হাসিতে কোনো অভিযোগের ছবি ধরা পড়েনি৷ কলকাতার মেয়েদের কথা জানতে চায়৷ কত বড় শহর কলকাতা আগ্রহ নিয়ে শুনতে চায়৷

মুক্তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কলকাতায় যেতে ইচ্ছা করে?’ একগাল হেসে বলল, ‘খু-উ-ব!’ মুক্তা অল্প অল্প করে পয়সা জমাচ্ছে৷ পাসপোর্ট-ভিসা করে স্বামীকে নিয়ে একদিন কলকাতায় যাবেই৷ মুক্তার চোখে কলকাতার স্বপ্ণ ভাসে!

এরপর আমাদের অটো ছুটল ভাঙাচোরা উঁচু-নিচু রাস্তায়৷ রাস্তার কাজ চলছে৷ নতুন নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে আশেপাশে৷ রামকৃষ্ণ মিশনের সামনের রাস্তায় পিচ পড়েছে৷ আট-দশ বছর আগেও এই অঞ্চল একরকম শুনশান ছিল৷ যশোরের এক বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধার মুখে শুনেছিলাম, পাকিস্তানি সেনারা এখানে ইচ্ছামতো নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করে ফেলে রেখে যেত৷ সে ছিল এক নরকের মতো অবস্থা৷

এসে পৌঁছলাম চাঁচড়া-শংকরপুর কালীতলায়৷ জয়দেবের কাছেই জায়গাটার নাম জানতে পারলাম৷ চারপাশে রেলিং দিয়ে ঘেরা এক নির্জন স্থান৷ রেলিং-এর উলটোদিকে খানকয়েক টিনের চালের বাড়ি৷ দাড়িওয়ালা, লুঙ্গিপড়া, গেঞ্জি গায়ে একজনকে আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে তাকে আমার মুসলমান সম্প্রদায়েরই বলে মনে হল৷ রেলিং-এর ভেতরে বিরাট এক বটগাছ৷ বটগাছের গোড়ায় একটি ছোট মাটির লক্ষ্মীমূর্তি৷ পিছনদিকে ঝোপঝাড়৷ ক্যামেরা বের করে ছবি তুলছিলাম৷ ইতিমধ্যে দাড়িওয়ালা লোকটি আমার পাশে এসে নিঃশব্দে দাঁড়িয়েছে৷ আমিও তার উপস্থিতি টের পেলাম৷

কিছু বলতে যাব, তার আগেই লোকটি আমাকে বলল, ‘আপনি বুঝি বেড়াইতে আইছেন?’ আমার তো কলকাতার বাবু বাংলা ভাষা৷ বললাম, ‘বেড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের কথা লিখতেও এসেছি৷ এ কথা শুনে হাসিমুখে মাথাটা বারকয়েক আন্দোলিত করে সে খুশির ভাব প্রকাশ করল৷ তার নাম জিজ্ঞাসা করতেই গেঞ্জির ভেতর থেকে পৈতেখানা বের করে বলল, ‘বাবু, আমি ব্রাহ্মণ৷ আমার নাম নিরঞ্জন সাধু৷ এই বটতলায় পূজা করি৷’

নিরঞ্জন সাধুর কাছেই শুনলাম, বটগাছতলায় রক্ষাকালীর পুজো, শীতলাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, অগ্ণিপুজো হয়৷ এ কথাও শুনলাম, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এ জায়গায় অনেক মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করেছে৷ হিন্দু-মুসলমান কেউ বাদ যায়নি৷ তাই এ জায়গার স্থানীয় নাম ‘বধ্যভূমি’৷ নিরঞ্জন সাধু বলল, ‘এ পাড়ায় আমরা হিন্দু-মুসলমান মিলমিশ কইরাই আছি৷ উভয়ে উভয়ের সুখে-দুঃখে আউগাই৷’

জয়দেব বলল, ‘চলুন একটা ভালো জায়গায় আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি, চাঁচড়া শিবমন্দির৷ ইজিট্যাক্সিতে উঠতে উঠতে নিরঞ্জন সাধুকে হাতজোড় করে নমস্কার জানাতেই হাসিমুখে বললেন, ‘দুগ্গা…দুগ্গা… ভালোভাবে যাইবেন৷’

চাঁচড়া শিবমন্দির সত্যিই দর্শনীয়৷ বাংলাদেশ সরকার এই শিবমন্দিরকে ‘হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে৷ মন্দিরের বাইরের বাগানে একটা ফলকে এই মর্মে নোটিসও রয়েছে৷ মন্দিরের গায়ে ফুল-লতাপাতার নানা ধরনের সূক্ষ্ম কারুকাজের তারিফ করতেই হয়৷ তবে এই শিবমন্দিরে এখন আর পুজো হয় না৷ কোনো শিবলিঙ্গ চোখে পড়ল না৷

এখান থেকে আমরা যাব বেজপাড়ায়৷ সেখানকার দুর্গামন্দির না দেখলে নাকি যশোর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থাকে৷ বেজপাড়ার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, এটা পুরোপুরি হিন্দু পাড়া৷ আনুমানিক ৪০ হাজার হিন্দুর বসবাস এখানে৷ অনেকটা জায়গা নিয়ে বেজপাড়ার দুর্গামন্দির৷ যখন পৌঁছলাম, মন্দির আঙিনায় ছোট ছেলে-মেয়েদের ক্লাস চলছে৷ ওদের মায়েরা একটু দূরে বসে অপেক্ষা করছেন৷ অবশ্য একটু পরেই ছুটি হয়ে গেল৷ প্রাট প্রাথমিক শিক্ষাক্রম৷ শিক্ষয়িত্রী শ্রীমতী সোমা সাহা৷ যশোর থেকে এম এ পাশ করে এখানে পড়াচ্ছেন৷
অল্পস্বল্প সরকারি আর্থিক সাহায্য পায় এই পাঠশালা৷ কচি-কাঁচা কয়েকজন অর্ঘ্য বিশ্বাস, সেঁজুতি সরকার, সিঁথি বিশ্বাস, রিয়া দাস, অনামিকা সরকাররা তখন ছুটি পাওয়ার আনন্দে ছোটাছুটি শুরু করেছে৷ প্রত্যেকেই স্কুল ইউনিফর্মে৷ ভারী স্কুল ব্যাগগুলো মায়েরাই যে যাঁর মতো গুছিয়ে নিয়ে রওনা হওয়ার মুখে৷

তাঁদের একটা কথাই শুধু জিজ্ঞাসা করেছিলাম—আপনারা কেমন আছেন? অবশ্য আমি যে সাংবাদিকতা করি জানালাম৷ ওঁরা প্রায় সমস্বরে বললেন, ‘বেজপাড়ার হিন্দু বাসিন্দাদের মধ্যে হগলের লগে হগলের সম্পর্ক যে ভালো এমন দাবি কখনো করুম না৷ অবস্থাপন্ন হিন্দুদের সঙ্গে কম অবস্থাপন্নদের সবসময়ই একটা ফারাক আছে৷ তবে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র কইরা তবুও কয়েকটা দিন মিলামিইশা আমাগো ভালোই কাটে৷ না, এই যশোর শহরের রাস্তাঘাটে হিন্দু মাইয়াদের অসম্মান করোনের সাহস কারও নাই৷ তবে ইন্ডিয়ায় কখনো কোনো মসজিদের উপর যদি একটুকুও হামলা হয়, বাংলাদেশের হিন্দুরা খুব চিন্তায় থাকে৷ এই বুঝি একের পর এক মন্দির ভাঙা শুরু হইল৷’

বেজপাড়ার দুর্গামন্দিরের ভেতরেই শ্রীরাধা-মাধব, কালী, শিব, শীতলা মাতা এরকম অনেক দেব-দেবীই আলাদা আলাদা প্রকোষ্ঠে পূজিত হন৷ দুর্গাপুজোর বাজেট প্রায় দেড় লক্ষ টাকা৷ স্থানীয় মানুষদের চাঁদার টাকাতেই পুজো হয়৷ হাজার দশেক টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া যায়৷ পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অজয় চৌধুরি বললেন, ‘এই দুর্গামন্দিরের সংস্কার করা খুব দরকার৷ অনেক টাকা চাই৷ এত টাকা কীভাবে উঠব জানি না৷ ইন্ডিয়ার কেউ যদি আমাগো আর্থিক সহায়তা দেন তাহইলে চিরকৃতজ্ঞ থাকুম৷’

শুনলাম, যশোর পৌরসভায় গোটা সাঁইত্রিশ বারোয়ারি দুর্গাপুজো হয়৷ কোনও কোনও পুজোর বাজেট আড়াই-তিন লক্ষ টাকা৷ বাড়ির পুজোও হয় গোটা দশেক৷ যশোর শহরে কালীপুজোও খুব ধুমধাম করে হয়৷ —চলবে

ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

সৌজন্যে দীপ প্রকাশন

Skip to content