![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/02/Temple-Bangladesh.jpg)
শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।
ফিরে আসি সুজয় সিংহ মজুমদারের প্রসঙ্গে৷ রবীন্দ্রনাথ যে দিন তাঁদের বাড়িতে এলেন সেই দিনটি ছিল ১৯১৯ সালের ৬ নভেম্বর৷ সুজয়বাবুর ঠাকুর্দা গোবিন্দনারায়ণ সিংহ মজুমদার ব্রিটিশ সরকারের সিলেটের খাজাঞ্চি ছিলেন৷ এ বাড়িতেই বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামও এসেছিলেন ১৯২৬ সালে৷ সুজয়বাবু দারুণ গল্প করেন৷ তাঁর স্ত্রী শ্রীমতী পল্লবী সিংহ মজুমদারও গল্প করতে ভালোবাসেন৷
পল্লবীদেবী বললেন, ‘চায়ের দেশে আসছেন৷ চা খাবেন না? সিলেটের মিষ্টিও কিন্তু বিখ্যাত৷’
বললাম, ‘চা চলতেই পারে৷ চা পানের নির্দিষ্ট সময় বলে তো কিছু হয় না৷ সিলেটে ভালো ভালো চা বাগানও নাকি আছে?’
—সবই তো আছে৷ তবে সব চা বাগান হিন্দুদের হাত থেকে চলে গেছে৷ বললেন পল্লবীদেবী৷
একটা ট্রেতে বড় কয়েক কাপ রং চা বানিয়ে আনলেন পল্লবীদেবী৷ আলাদা ট্রেতে কয়েকটা সুদৃশ্য প্লেটে রসগোল্লা আর নানা রকমের সন্দেশ৷ সুনির্মল গুপ্তের সুগার৷ সন্দেশ, রসগোল্লা থেকে একশো হাত দূরে৷ বিজয়কৃষ্ণ বিশ্বাসই সুজয়বাবুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন৷ বিজয়কৃষ্ণ অনেক খবরাখবর রাখেন৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলেও ভালো লাগে৷
পল্লবীদেবী বললেন, ‘চায়ের দেশে আসছেন৷ চা খাবেন না? সিলেটের মিষ্টিও কিন্তু বিখ্যাত৷’
বললাম, ‘চা চলতেই পারে৷ চা পানের নির্দিষ্ট সময় বলে তো কিছু হয় না৷ সিলেটে ভালো ভালো চা বাগানও নাকি আছে?’
—সবই তো আছে৷ তবে সব চা বাগান হিন্দুদের হাত থেকে চলে গেছে৷ বললেন পল্লবীদেবী৷
একটা ট্রেতে বড় কয়েক কাপ রং চা বানিয়ে আনলেন পল্লবীদেবী৷ আলাদা ট্রেতে কয়েকটা সুদৃশ্য প্লেটে রসগোল্লা আর নানা রকমের সন্দেশ৷ সুনির্মল গুপ্তের সুগার৷ সন্দেশ, রসগোল্লা থেকে একশো হাত দূরে৷ বিজয়কৃষ্ণ বিশ্বাসই সুজয়বাবুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন৷ বিজয়কৃষ্ণ অনেক খবরাখবর রাখেন৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলেও ভালো লাগে৷
যে কদিন সিলেটে ছিলাম বিজয়কৃষ্ণবাবু বেশিরভাগ সময়ই আমার সঙ্গে থাকতেন৷ সিলেটের দেবীপুরে ‘সারদা সংঘ’ নামে মহিলাদের একটি সংগঠন রয়েছে৷ এরা নানারকম ধর্মীয় ও সমাজসেবামূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত৷ পল্লবীদেবী ‘সারদা সংঘ’-এর সঙ্গে যুক্ত৷ মাসের প্রথম ও তৃতীয় সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এখানে গীতাপাঠ, চণ্ডীপাঠ, শ্রীশ্রীমায়ের জীবনীপাঠ ও কথামৃত পাঠ হয়৷
পল্লবীদেবী বললেন, ‘সারদা সংঘ’-এ যেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে৷ মা সারদার কথা শুনতে কার না ভালো লাগে!’ শুনলাম, সিলেট শহরে ১৫০টির মতো সরস্বতীপুজো হয়৷ দুর্গাপুজোও অনেক৷ মুসলমান মেয়েরা বোরখা পরে ঠাকুর দেখেন৷ প্রসাদ খান৷
সিলেটে হিন্দু মহিলারা কেমন আছেন?
কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে পল্লবীদেবী বললেন, ‘এখানকার অনেক মহিলাই ব্যাংকিং সেক্টরে ও টিচিং লাইনে আছেন৷ তবে অফিস-কাছারিতে কাজ করলেও বিশেষ করে হিন্দু মেয়েরা রাত নটার পর বাড়ির বাইরে আর থাকতে চান না৷ রাস্তায় কখন কী ঘটে বলা তো যায় না!’
সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর সুজয়বাবুদের এই বাড়ি৷ বি এন পি সরকারের আমলে বাড়ির কিছুটা অংশ দখল করে সেখানে একটা লেডিস হস্টেল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়৷ সুজয়বাবু হাইকোর্টে পিটিশন করে আপাতত সেটা আটকেছেন৷
সিলেটে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো বলে মন্তব্য করেন সুজয়বাবু৷ তিনি গোটা বাড়িটা আমাকে ঘুরিয়েও দেখালেন৷ কবিগুরু যে বাংলো প্যাটার্নের ঘরটিতে ছিলেন সেটি ভালোভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন সিংহ মজুমদার পরিবার৷
পল্লবীদেবী বললেন, ‘সারদা সংঘ’-এ যেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে৷ মা সারদার কথা শুনতে কার না ভালো লাগে!’ শুনলাম, সিলেট শহরে ১৫০টির মতো সরস্বতীপুজো হয়৷ দুর্গাপুজোও অনেক৷ মুসলমান মেয়েরা বোরখা পরে ঠাকুর দেখেন৷ প্রসাদ খান৷
সিলেটে হিন্দু মহিলারা কেমন আছেন?
কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে পল্লবীদেবী বললেন, ‘এখানকার অনেক মহিলাই ব্যাংকিং সেক্টরে ও টিচিং লাইনে আছেন৷ তবে অফিস-কাছারিতে কাজ করলেও বিশেষ করে হিন্দু মেয়েরা রাত নটার পর বাড়ির বাইরে আর থাকতে চান না৷ রাস্তায় কখন কী ঘটে বলা তো যায় না!’
সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর সুজয়বাবুদের এই বাড়ি৷ বি এন পি সরকারের আমলে বাড়ির কিছুটা অংশ দখল করে সেখানে একটা লেডিস হস্টেল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়৷ সুজয়বাবু হাইকোর্টে পিটিশন করে আপাতত সেটা আটকেছেন৷
সিলেটে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো বলে মন্তব্য করেন সুজয়বাবু৷ তিনি গোটা বাড়িটা আমাকে ঘুরিয়েও দেখালেন৷ কবিগুরু যে বাংলো প্যাটার্নের ঘরটিতে ছিলেন সেটি ভালোভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন সিংহ মজুমদার পরিবার৷
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/02/Bangladesh.jpg)
বাংলাদেশের জাগ্রত মন্দিরে মন্দিরে: পর্ব-৪৮: সিলেটের ঢাকা দক্ষিণ গ্রামে শ্রী জগন্নাথ মিশ্রের পৈতৃক ভিটেয় এসেছিলেন মহাপ্রভু
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/02/Bangladesh-Book-fair-2023.jpg)
সোনার বাংলার চিঠি, পর্ব-৯: অমর একুশে গ্রন্থমেলা: বাংলাভাষী লেখকদের আবেগ ও স্বপ্নের বইমেলা
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/04/samayupdates_Sahi-Polao.jpg)
নিরামিষ দিনে অতিথি আপ্যায়নে শিখে নিন বাদশাহি পোলাও তৈরির সহজ পদ্ধতি
একবার শ্রীহট্ট ব্রাহ্মসমাজের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে বাড়িটি পুনরায় বানিয়ে দিয়েছে৷ সিলেটের বিভিন্ন মন্দির ও আশ্রমের সংস্কারের জন্য হাসিনা সরকার প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়েছে বলে জানা গেল৷
বাংলাদেশের সতীপীঠ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে বগুড়া জেলার দেবী অপর্ণা ও ভৈরব বামেশ বা বামন-এর কাহিনি উল্লেখ করা প্রয়োজন৷ ঢাকা থেকে বগুড়া নাইট সার্ভিস বাসে৷ বগুড়া জেলা শহর থেকে ৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে শেরপুর থানার অন্তর্গত ভবানীপুরে এই সতীপীঠ অবস্থিত৷ মন্দিরটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা৷ প্রাচীরের বাইরে শাঁখারি দিঘি৷ এই দিঘির ঘাটগুলো তীর্থযাত্রীরা স্নানের কাজে ব্যবহার করেন৷ এখন দিঘি যে জায়গায় সেখান দিয়েই একসময় করতোয়া নদী প্রবাহিত হত৷ এই নদী বর্তমানে প্রায় ২ কিমি উত্তর-পূর্ব কোনে সরে গিয়েছে৷
এই সতীপীঠ সম্বন্ধে বিভিন্ন শাস্ত্রে রয়েছে নানা কাহিনি৷ তন্ত্রচূড়ামণিতে জানা যায়—‘করতোয়া তটে কর্ণো বামে বামন ভৈরবঃ৷/অপর্ণা দেবতা তত্র ব্রহ্মরূপ করোদ্ভব৷৷’ আবার ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলে পাই—‘করতোয়াতটে পড়ে বাম কর্ণ তাঁর৷ বামেশ ভৈরব, দেবী অপর্ণা তাঁহার৷৷’ পীঠনির্ণয়তন্ত্রে বলা হয়েছে—‘করতোয়া তটে গুলফং বামে বামেশ ভৈরবঃ৷/অপর্ণা দেবতা তত্র ব্রহ্মরূপ করোদ্ভবঃ৷৷’ পুণ্য করতোয়া নদীর তীরে দেবীর গোড়ালি পতিত হয়েছে৷ দেবীর নাম অপর্ণা, দেবতা ভৈরব হলেন—বামেশ৷ এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পশ্চিমবঙ্গের তমলুকে বর্গভীমা দেবী মায়ের বর্ণনায় আছে, ওই পীঠস্থানে দেবীর গোড়ালি পতিত হয়েছে আবার করতোয়া তটেও একই অঙ্গ পতিত হয়েছে৷ সিদ্ধান্তে বলা যেতে পারে দুই পীঠে দেবীর দুই পায়ের দুটি গোড়ালি ভিন্ন ভিন্নভাবে পতিত হয়েছিল৷ তবে ডান বা বাম কোন পায়ের—তেমন কোনও নির্ণয়কারী মতামত দেওয়া সম্ভব নয়৷ (গ্রন্থসূত্র: স্বামী পরদেবানন্দের ‘তীর্থের পথে পথে’)৷
মোট ৫১ সতীপীঠের মধ্যে ভারতবর্ষে ৩৬টি, বাংলাদেশে ৮টি, নেপালে ৩টি, পাকিস্তানে ২টি, তিব্বতে ১টি ও শ্রীলঙ্কায় ১টি৷
বাংলাদেশের সতীপীঠ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে বগুড়া জেলার দেবী অপর্ণা ও ভৈরব বামেশ বা বামন-এর কাহিনি উল্লেখ করা প্রয়োজন৷ ঢাকা থেকে বগুড়া নাইট সার্ভিস বাসে৷ বগুড়া জেলা শহর থেকে ৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে শেরপুর থানার অন্তর্গত ভবানীপুরে এই সতীপীঠ অবস্থিত৷ মন্দিরটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা৷ প্রাচীরের বাইরে শাঁখারি দিঘি৷ এই দিঘির ঘাটগুলো তীর্থযাত্রীরা স্নানের কাজে ব্যবহার করেন৷ এখন দিঘি যে জায়গায় সেখান দিয়েই একসময় করতোয়া নদী প্রবাহিত হত৷ এই নদী বর্তমানে প্রায় ২ কিমি উত্তর-পূর্ব কোনে সরে গিয়েছে৷
এই সতীপীঠ সম্বন্ধে বিভিন্ন শাস্ত্রে রয়েছে নানা কাহিনি৷ তন্ত্রচূড়ামণিতে জানা যায়—‘করতোয়া তটে কর্ণো বামে বামন ভৈরবঃ৷/অপর্ণা দেবতা তত্র ব্রহ্মরূপ করোদ্ভব৷৷’ আবার ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলে পাই—‘করতোয়াতটে পড়ে বাম কর্ণ তাঁর৷ বামেশ ভৈরব, দেবী অপর্ণা তাঁহার৷৷’ পীঠনির্ণয়তন্ত্রে বলা হয়েছে—‘করতোয়া তটে গুলফং বামে বামেশ ভৈরবঃ৷/অপর্ণা দেবতা তত্র ব্রহ্মরূপ করোদ্ভবঃ৷৷’ পুণ্য করতোয়া নদীর তীরে দেবীর গোড়ালি পতিত হয়েছে৷ দেবীর নাম অপর্ণা, দেবতা ভৈরব হলেন—বামেশ৷ এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পশ্চিমবঙ্গের তমলুকে বর্গভীমা দেবী মায়ের বর্ণনায় আছে, ওই পীঠস্থানে দেবীর গোড়ালি পতিত হয়েছে আবার করতোয়া তটেও একই অঙ্গ পতিত হয়েছে৷ সিদ্ধান্তে বলা যেতে পারে দুই পীঠে দেবীর দুই পায়ের দুটি গোড়ালি ভিন্ন ভিন্নভাবে পতিত হয়েছিল৷ তবে ডান বা বাম কোন পায়ের—তেমন কোনও নির্ণয়কারী মতামত দেওয়া সম্ভব নয়৷ (গ্রন্থসূত্র: স্বামী পরদেবানন্দের ‘তীর্থের পথে পথে’)৷
মোট ৫১ সতীপীঠের মধ্যে ভারতবর্ষে ৩৬টি, বাংলাদেশে ৮টি, নেপালে ৩টি, পাকিস্তানে ২টি, তিব্বতে ১টি ও শ্রীলঙ্কায় ১টি৷
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/01/offbeat-travel-2023.jpg)
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১: ছুটি ও ছোটা ছুটি
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/11/samayupdates_Uttam-Kumar_6.jpg)
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১১: ভাগ্যের ফেরে হাস্যকর ‘লাখ টাকা’
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/06/Epilepsy.jpg)
ছোটদের যত্নে: শিশুর হঠাৎ করে তরকা জনিত জ্বর হলে কী করবেন? জেনে নিন শিশু বিশেষজ্ঞের জরুরি পরামর্শ
বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার শালবাড়ি গ্রামে আরও একটি সতীপীঠের সন্ধান পাওয়া যায়৷ বগুড়া থেকে বাসে পঞ্চগড় জেলার বোদা বন্দর অভিমুখে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়৷ রংপুর, সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁও হয়ে বোদা বাসস্ট্যান্ড৷ বোদা থানার অন্তর্গত করতোয়া নদীর তীরে বদেশ্বরী বা শালবাড়ি গ্রাম৷ এখানেই সতীর একান্নপীঠের অন্যতম পীঠ বরদেশ্বরী৷ খেয়া পেরিয়ে রিকশ করে মন্দির প্রাঙ্গণে পৌঁছনো যায়৷ পীঠনির্ণয়তন্ত্রে বলা হয়েছে—‘ত্রিস্রোতায়াং বামপাদে ভ্রামরী ভৈরবেশ্বরঃ৷’ দেবীর বাম পদ পড়েছে ত্রিস্রোতায়৷ দেবীর নাম ভ্রামরী এবং ভৈরব হলেন ঈশ্বর৷
শিবচরিতের মতে দেবীর জানু ত্রিস্রোতায় পড়েছিল৷ দেবীর নাম চণ্ডিকা ও ভৈরব সদানন্দ৷ আবার কোনও কোনো স্থানে দেবীকে অমরী ও ভৈরবকে অমর বলে চিহ্ণিত করা হয়েছে৷ ভারতচন্দ্র তাঁর অন্নদামঙ্গল কাব্যে বলেছেন—‘ত্রিরোতায় পড়ে বামপাদ মনোহর/অমরী দেবতা তাহে ভৈরব অমর৷’
পীঠনির্ণয়তন্ত্রে ত্রিস্রোতা ও অন্নদামঙ্গলের ত্রিরোতা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব রয়েছে৷ ‘ত্রিস্রোতা’ কথাটি থেকে তিস্তা কথাটির উৎপত্তি৷ পীঠনির্ণয়ের বর্ণনা ঠিকই আছে বলে মনে করা যেতে পারে৷ কারণ, খেয়া পারাপারের সময় করতোয়া নদীর মাঝখানে এলে দেখা যাবে তিস্তা নদী৷ আর অন্য একটা নদীর স্রোতধারা (ত্রিস্রোতা) করতোয়া নামে প্রবাহিত হয়ে চলেছে৷ জ্ঞানার্ণব তন্ত্রের পীঠ বর্ণনায় ত্রিস্রোতার উল্লেখ পাওয়া যায়৷
হয়েছে৷ ভারতচন্দ্র তাঁর অন্নদামঙ্গল কাব্যে বলেছেন—‘ত্রিরোতায় পড়ে বামপাদ মনোহর/অমরী দেবতা তাহে ভৈরব অমর৷’
একসময় জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে বৃহত্তম থানা ছিল বোদা৷ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর জলপাইগুড়ি জেলার পরিবর্তে দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয় বোদা৷ পরে ঠাকুরগাঁও জেলার সঙ্গে যুক্ত হয় এই থানা৷
করতোয়া নদীতে স্নান করে এই পীঠে পীঠদেবীকে পুজো দেওয়ার নিয়ম৷ শ্রীশ্রীভ্রামরী মাকে প্রতিদিন দুপুরে অন্নভোগ দেওয়া হয়৷ পুষ্পাঞ্জলির পর মায়ের প্রসাদ গ্রহণ করেন ভক্তরা৷ প্রাচীন এক শালগাছের নীচে ভ্রামরী দেবীর মন্দির৷ গর্ভগৃহে রয়েছেন শ্রীশ্রীভ্রামরী দেবী৷
শিবচরিতের মতে দেবীর জানু ত্রিস্রোতায় পড়েছিল৷ দেবীর নাম চণ্ডিকা ও ভৈরব সদানন্দ৷ আবার কোনও কোনো স্থানে দেবীকে অমরী ও ভৈরবকে অমর বলে চিহ্ণিত করা হয়েছে৷ ভারতচন্দ্র তাঁর অন্নদামঙ্গল কাব্যে বলেছেন—‘ত্রিরোতায় পড়ে বামপাদ মনোহর/অমরী দেবতা তাহে ভৈরব অমর৷’
পীঠনির্ণয়তন্ত্রে ত্রিস্রোতা ও অন্নদামঙ্গলের ত্রিরোতা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব রয়েছে৷ ‘ত্রিস্রোতা’ কথাটি থেকে তিস্তা কথাটির উৎপত্তি৷ পীঠনির্ণয়ের বর্ণনা ঠিকই আছে বলে মনে করা যেতে পারে৷ কারণ, খেয়া পারাপারের সময় করতোয়া নদীর মাঝখানে এলে দেখা যাবে তিস্তা নদী৷ আর অন্য একটা নদীর স্রোতধারা (ত্রিস্রোতা) করতোয়া নামে প্রবাহিত হয়ে চলেছে৷ জ্ঞানার্ণব তন্ত্রের পীঠ বর্ণনায় ত্রিস্রোতার উল্লেখ পাওয়া যায়৷
হয়েছে৷ ভারতচন্দ্র তাঁর অন্নদামঙ্গল কাব্যে বলেছেন—‘ত্রিরোতায় পড়ে বামপাদ মনোহর/অমরী দেবতা তাহে ভৈরব অমর৷’
একসময় জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে বৃহত্তম থানা ছিল বোদা৷ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর জলপাইগুড়ি জেলার পরিবর্তে দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয় বোদা৷ পরে ঠাকুরগাঁও জেলার সঙ্গে যুক্ত হয় এই থানা৷
করতোয়া নদীতে স্নান করে এই পীঠে পীঠদেবীকে পুজো দেওয়ার নিয়ম৷ শ্রীশ্রীভ্রামরী মাকে প্রতিদিন দুপুরে অন্নভোগ দেওয়া হয়৷ পুষ্পাঞ্জলির পর মায়ের প্রসাদ গ্রহণ করেন ভক্তরা৷ প্রাচীন এক শালগাছের নীচে ভ্রামরী দেবীর মন্দির৷ গর্ভগৃহে রয়েছেন শ্রীশ্রীভ্রামরী দেবী৷
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/02/Mahon-Lal.jpg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫১: বিয়েশাদির ঠাকুরবাড়ি
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/12/recipe-chilli.jpg)
রান্নায় লঙ্কার গুঁড়ো বেশি পড়ে গিয়েছে? ঘরোয়া উপায়ে কী ভাবে সামাল দেবেন? রইল টিপস
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/08/Ramayana.jpg)
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ১০: গঙ্গা এলেন মর্ত্যে, হলেন ভাগীরথী
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত দেবীমূর্তি ও প্রাঙ্গণের আরও কয়েকটি মূর্তি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়৷ মন্দিরের কিছুটা দূরে বহু বছরের একটা পুকুর আছে৷ ১৯৯৭ সালে পুকুরটি সংস্কার করা হয়৷ সেই সময় ওই পুকুরের ভেতরে একটা ছোট দেবীমূর্তি পাওয়া যায়৷ সেই মূর্তিটিই মন্দিরের বেদিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷ ২০০৬ সালে পীঠদেবীর মন্দিরটি সংস্কার করা হয়৷
বগুড়া থেকে ঢাকায় ফেরা এমন কোনও কঠিন ব্যাপার নয়৷ নাইট সার্ভিস সুপার এক্সপ্রেস বাস তো রয়েছে৷
আমি সিলেট থেকেও ঢাকায় এসেছিলাম রাতের বাসে৷ ট্রেনও আছে৷ সিলেট শহর থেকে বাসে ঢাকা ঘণ্টা পাঁচেক৷ আবার ফিরে আসি ঢাকার প্রসঙ্গে৷ তবে তার আগে কলকাতার কুমোরটুলির ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্বন্ধে কিছু তথ্য সংক্ষেপে জানিয়ে রাখি৷ এটি দেবোত্তর সম্পত্তি৷ মন্দির দেখাশোনা করেন ডাঃ শ্যামল চৌধুরি৷ প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টায় মন্দির খোলে৷ দুপুরে ঘণ্টাতিনেক বন্ধ থাকে৷ বিকেল ৪টায় খোলে৷ বন্ধ হয় রাত ৯টায়৷ নিত্যপুজো৷ তবে বলি নেই৷ পূজারির নাম শক্তি ঘোষাল৷ সেবাইত অজয় তেওয়ারি৷ মহাষ্টমীর দিন এই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে খুব ভিড় হয়৷ অষ্টধাতুর একচালা মূর্তিটির উচ্চতা দু-আড়াইফুট৷
কুমোরটুলির ঢাকেশ্বরী মন্দির নিয়ে ডাঃ চৌধুরির সঙ্গে কথা হল৷ বললেন, ‘১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মায়ের মূর্তি কলকাতায় নিয়ে আসা হয়৷ আমার ঠাকুর্দা দেবেন্দ্রনাথ চৌধুরি তখন জীবিত৷ গঙ্গার ধারে আমাদের পুরনো বাড়ি৷ ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরের যে সেবাইত মায়ের মূর্তিটিকে নিয়ে আসেন, তিনি ঠাকুর্দাকে চিনতেন৷ তাঁর অনুরোধে মায়ের মূর্তিটিকে ২৫ হরচন্দ্র মল্লিক স্ট্রিটে যথোচিত মর্যাদায় রাখা হল৷ মায়ের সেবা-পুজোও নিয়মিত চলতে লাগল৷ সেইসময় ঠাকুর্দা কুমোরটুলিতে একটি শিবমন্দির তৈরি করছিলেন৷ ১৯৪৮ সালে নবনির্মিত এই শিবমন্দিরেই ঢাকেশ্বরী মায়ের প্রাচীন মূর্তিটি ধুমধাম করে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷’
এই মন্দিরই এখন কলকাতার শ্রীশ্রীঢাকেশ্বরী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ৷ —চলবে
বগুড়া থেকে ঢাকায় ফেরা এমন কোনও কঠিন ব্যাপার নয়৷ নাইট সার্ভিস সুপার এক্সপ্রেস বাস তো রয়েছে৷
আমি সিলেট থেকেও ঢাকায় এসেছিলাম রাতের বাসে৷ ট্রেনও আছে৷ সিলেট শহর থেকে বাসে ঢাকা ঘণ্টা পাঁচেক৷ আবার ফিরে আসি ঢাকার প্রসঙ্গে৷ তবে তার আগে কলকাতার কুমোরটুলির ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্বন্ধে কিছু তথ্য সংক্ষেপে জানিয়ে রাখি৷ এটি দেবোত্তর সম্পত্তি৷ মন্দির দেখাশোনা করেন ডাঃ শ্যামল চৌধুরি৷ প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টায় মন্দির খোলে৷ দুপুরে ঘণ্টাতিনেক বন্ধ থাকে৷ বিকেল ৪টায় খোলে৷ বন্ধ হয় রাত ৯টায়৷ নিত্যপুজো৷ তবে বলি নেই৷ পূজারির নাম শক্তি ঘোষাল৷ সেবাইত অজয় তেওয়ারি৷ মহাষ্টমীর দিন এই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে খুব ভিড় হয়৷ অষ্টধাতুর একচালা মূর্তিটির উচ্চতা দু-আড়াইফুট৷
কুমোরটুলির ঢাকেশ্বরী মন্দির নিয়ে ডাঃ চৌধুরির সঙ্গে কথা হল৷ বললেন, ‘১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মায়ের মূর্তি কলকাতায় নিয়ে আসা হয়৷ আমার ঠাকুর্দা দেবেন্দ্রনাথ চৌধুরি তখন জীবিত৷ গঙ্গার ধারে আমাদের পুরনো বাড়ি৷ ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরের যে সেবাইত মায়ের মূর্তিটিকে নিয়ে আসেন, তিনি ঠাকুর্দাকে চিনতেন৷ তাঁর অনুরোধে মায়ের মূর্তিটিকে ২৫ হরচন্দ্র মল্লিক স্ট্রিটে যথোচিত মর্যাদায় রাখা হল৷ মায়ের সেবা-পুজোও নিয়মিত চলতে লাগল৷ সেইসময় ঠাকুর্দা কুমোরটুলিতে একটি শিবমন্দির তৈরি করছিলেন৷ ১৯৪৮ সালে নবনির্মিত এই শিবমন্দিরেই ঢাকেশ্বরী মায়ের প্রাচীন মূর্তিটি ধুমধাম করে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷’
এই মন্দিরই এখন কলকাতার শ্রীশ্রীঢাকেশ্বরী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ৷ —চলবে
* বাংলাদেশের জাগ্রত মন্দিরে মন্দিরে (Bangladesher Jagrata Mondire Mondire) : সুমন গুপ্ত (Suman Gupta), বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক।