রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪


অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। শনিবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হল বাংলাদেশ। শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১০ সালে পদ্মার উপর একটি দোতলা সেতু তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু হঠাৎই ২০১২ সালে প্রকল্প থেকে সরে যায় বিশ্বব্যাঙ্ক।

ওই বছরেই জুলাই মাসে বাংলাদেশ মন্ত্রিসভা ঘোষণা করে, তারা নিজেদের স্বপ্ন নিজেরাই পূরণ করবেন। শত প্রতিকূলতা কাটিয়ে বাস্তবায়নের কঠিন যাত্রায় সফল হয়েছে বাংলাদেশ।

গোটা প্রকল্পের জন্য মোট ৯১৮ হেক্টর জমি নেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতুকে জলের মধ্যে ধরে রেখেছে ৪০টি স্তম্ভ। জলের নীচে ১২২ মিটার পর্যন্ত গভীরে গিয়েছে এই স্তম্ভের ভিত। প্রত্যেকটি স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে মজবুত পাইল ইস্পাত দিয়ে। পৃথিবীর আর কোনও দেশে আর কোনও সেতুর স্তম্ভ এত গভীরে নেই।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, প্রায় ১০ হাজার কোটি বাংলাদেশী মুদ্রা দিয়ে তৈরি হওয়া এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) এক ধাক্কায় ১.২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারবে।

পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’ পৃথিবীর অন্য সব সেতুর চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় ১০ হাজার টন। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও সেতুটির কিছু হবে না।

এই সেতুর ফলে যাতায়াতের অনেকটা সুবিধা হবে। আগে কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে গেলে চারশো কিলোমিটার রাস্তা পার হতে হত। সময় লাগত প্রায় ১০ ঘণ্টা। এখন সড়ক পথে কমবেশি চার ঘণ্টায় পৌঁছনো যাবে। আর রেলপথে সময় লাগবে মোটামুটি সাড়ে ছ’ঘণ্টার মতো।

কলকাতা ছাড়াও পদ্মা সেতুর ফলে বঙ্গোপসাগর তীরের মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব একশো কিলোমিটার কমে যাবে। সংশ্লিষ্ট বন্দর দু’টিকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ফলে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগও সুগম হবে।

অর্থনীতিবিদদের আশা, পদ্মা সেতু ভারত-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্যেও নতুন সেতুবন্ধন করবে।


Skip to content