বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

আয়ুর্বেদে কুষ্ঠ রোগকে বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন কুষ্ঠ একটি রক্তজ বিকার, কুষ্ঠ একটি মহাগদ বা মহাব্যাধি। মহর্ষি সুশ্রত কুষ্ঠকে ঔপসর্গিক বা ইনফেকশাস ডিজিজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আবার কুষ্ঠকে ত্বগাময় বলেও উল্লেখ করেছেন। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আবার কুষ্ঠ রোগের ইংরেজি প্রতিশব্দ লেপ্রসি বলে অভিহিত করেছে। কিন্তু আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে কুষ্ঠ রোগ হল অনেক প্রকার ত্বকগত রোগের সমাহার, আর আধুনিক বিজ্ঞানর যা লেপ্রসি তা সেই অনেক প্রকার চর্ম রোগের মধ্যে বিশেষ কিছু প্রকারকে নির্দিষ্ট করে। তাই আয়ুর্বেদ মতে কুষ্ঠ রোগ মানেই লেপ্রসি, তা কিন্তু নয়।

কুষ্ঠ এই শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল, যা শরীরের ত্বককে বিকৃত ও কুৎসিত করে। সুতরাং এই যুক্তিতে প্রায় সমস্ত ধরনের চর্মরোগই কুষ্ঠ।
 

কুষ্ঠ রোগের নিদান বা কারণ

 

আহার গত কারণ

যেমন বিরুদ্ধ আহার, অর্থাৎ গুরু-লঘু, শীত-উষ্ণ, মধুর-লবণ, রুক্ষ-স্নিগ্ধ ইত্যাদি গুণ বিশিষ্ট আহার, নিয়ম না মেনে একসঙ্গে খাওয়া, মাংসের সঙ্গে পায়েস, দইয়ের সঙ্গে মাংস বা মাছ ইত্যাদি এই বিরুদ্ধ আহারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অত্যধিক রসাল, গুরু, তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়া, নতুন চালের ভাত, পিঠেপুলি, দই, তিল, গুড় ইত্যাদি বেশি খাওয়া, আগের খাবার জীর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও খাওয়া, মধু, রাবড়ি, কাকমাচি ইত্যাদি বেশি খাওয়া।
 

বিহার গত কারণ

অতি ভোজনের পরে বেশি পরিশ্রম করা, বেশি রোদে ঘোরা, বিশেষ করে ভরপেট খেয়ে রোদে থাকা, দুপুরে ঘুম, গরম কিছুখাবার পর হঠাৎ শীতল জলপান, গরম থেকে এসে শীতল জলে স্নান, খাদ্য জীর্ণ না হওয়া কালীন মৈথুন করা, মলমূত্রের স্বাভাবিক বেগকে চেপে রাখা।
 

অন্যান্য কারণ

আয়ুর্বেদীয় পঞ্চকর্ম থেরাপি অসম্যকভাবে করা, গুরুজন-ব্রাহ্মণ বা পূজনীয় ব্যক্তিদের অসম্মান করা, পাপীদের মতো আচরণ করা, বমির বেগকে চেপে যাওয়া ইত্যাদি।
 

রোগ উৎপত্তির ক্রম বা সম্প্রাপ্তি

উপরিউক্ত কারণগুলির সংস্পর্শে থাকার জন্য বায়ু, পিত্ত ও কফ—এই তিনটি দোষ প্রকুপিত হয়, ও ক্রমশ তির্যকভাবে শিরাগুলিতে প্রসরিত হয়ে ত্বক, রক্ত, মাংস, লসিকা ইত্যাদিকে দূষিত করে মন্ডল অর্থাৎ চামড়ার উপর চাকচাক দাগ নিয়ে এসে বিকৃত ত্বক উৎপন্ন করে, যা কুষ্ঠ বলে পরিচিত।

আরও পড়ুন:

অ্যালার্জির সমস্যায় নাজেহাল? চিন্তা নেই—আয়ুর্বেদে রয়েছে মুশকিল আসান

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১৯: সুন্দরবনের জঙ্গল-জননী বিশালাক্ষী

 

কুষ্ঠ রোগের প্রকারভেদ

সাধারণত ১৮ প্রকার কুষ্ট আয়ুর্বেদে আলোচিত হয়েছে। কুষ্ঠ মূলত দুই প্রকার—প্রথমত মহাকুষ্ঠ, যা সাত প্রকার এবং তার পরে ক্ষুদ্র কুষ্ঠ ১১ প্রকার। সাত প্রকার মহাকুষ্ঠ যেমন কপাল, ঔদুম্বর, মন্ডল, ঋষ্যজিহ্ব, পুণ্ডরীক, সিধ্ম ও কাকনক।
 

১১ প্রকার ক্ষুদ্রকুষ্ঠ

এককুষ্ঠ, চর্মাক্ষ্য, কিটিভ, বিপাদিকা, অলসক, দদ্রু, চর্মদল, পামা, বিস্ফোট, শতারু ও বিচর্চিকা। এই ১৮ প্রকার কুষ্ঠই দোষের প্রাধান্য অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের লক্ষণ প্রকাশ করে। যেমন কাকনক কুষ্ঠ বাতপ্রধান, ঔদুম্বর কুষ্ঠ পিত্ত প্রধান, মণ্ডল ও বিচর্চিকা কুষ্ঠ কফ প্রধান, ঋষ্যজিহ্ব বাত পিত্ত প্রধান, চর্মাক্ষ্য, এককুষ্ঠ, কিটিভ ও সিধ্ম ইত্যাদি কুষ্ঠ বাত কফ প্রধান, দদ্রু , শতারু, পুণ্ডরীক, বিস্ফোট , পামা, চর্মদল এই কুষ্ঠ গুলি কফ পিত্ত প্রধান এবং কাকনক কুষ্ঠ ত্রিদোষ প্রধান।

 

রোগের লক্ষণ

 

মহাকুষ্ঠ রোগের বিশেষ লক্ষণ

কপাল কুষ্ঠ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নন লেপ্রোমেটাস লেপ্রসির সঙ্গে তুলনীয়। এখানে কালো, ফ্যাকাশে ভাঙ্গা খোলামকুচির মত দাগ, রুক্ষ,কঠিন, পাতলা, অসম আকার বিশিষ্ট ছোপ ছোপ দাগ, ব্যথা, অল্প অল্প চুলকানি, অল্প দাহ, পুঁজ ইত্যাদি বিকৃতিগুলো দেখা যায়।
 

ঔদুম্বর কুষ্ঠ

একে আধুনিক বিজ্ঞানের লেপ্রোমেটাস লেপ্রসি এর সঙ্গে তুলনা করা যায়। এই ক্ষত সাধারণত দাহ, চুলকানি, লালভাব, কপিল বর্ণ, ডুমুরের ফলের মতো আকার বিশিষ্ট হয়।
 

মন্ডল কুষ্ঠ

কিছুটা আধুনিক বিজ্ঞানের নন-লেপ্রমেটাস লেপ্রসি ও সোরিয়াসিসের লক্ষণের মিলিত রূপ হয়। এখানে ৎসাদাটে বা রক্তবর্ণের স্থির, উন্নত তল দাগযুক্ত আকারের সন্নিবিষ্ট বিকৃতি থাকে।
 

ঋষ্যজিহ্ব কুষ্ঠ

এটিও একটি নন-লেপ্রমেটাস লেপ্রসির সমতুল্য রোগ। এখানে কঠিন প্রান্ত ভাগযুক্ত লালাভ বর্ণের অথচ মধ্যিখানে ফ্যাকাসে বর্ণযুক্ত বেদনাপূর্ণ ক্ষত থাকে, হরিণের জিভের মতো দেখতে দাগ গুলি ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।
 

পুণ্ডরিক কুষ্ঠ

এই কুষ্ঠ লেপ্রোমেটাস লেপ্রসির সঙ্গে অনেকটা সাযুজ্য রাখে। শ্বেত বর্ণযুক্ত লালপ্রান্ত ভাগ যুক্ত লাল পদ্মের মতো উন্নত তল বিশিষ্ট ছোপ ছোপ দাগ হয়।
 

সিধ্ম কুষ্ঠ

এই রোগটি অনেকটা পিটিরিয়েসিস লেপ্রসির সমতুল্য। সাদা বা তামাটে বর্ণের পাতলা চুলকানিযুক্ত, চুলকানোর পর ধুলো পড়ার মতো গুঁড়ো বের হয়। ক্ষত অনেকটা লাউয়ের ফুলের মতো দেখতে হয়। এখানে স্রাব থাকে। বুকের উপরেই বিশেষ করে দেখা যায়।
 

কাকনক কুষ্ঠ

এটিও লেপ্রোমেটাস লেপ্রসির সমান লক্ষণ যুক্ত। অনেকটা গুঞ্জা ফলের মতো। দেখতে লাল অথচ মাঝখানে কালো অথবা লাল-কালো মিশ্রণে বিন্যস্ত ছোপ দাগ , প্রচণ্ড ব্যথাযুক্ত অথচ পেকে যায় না। এখানে বায়ু পিত্ত ও কফ এই তিন দোষেরই প্রকোপ লক্ষিত হয়।

সুতরাং উপরিউক্ত লক্ষণগুলি বিচার করে বলা যায়, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের লেপ্রসি আয়ুর্বেদের মহাকুষ্ঠ নামক রোগের লক্ষণাবলীর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এই ত্বকগত রোগ মাইক্রো ব্যাকটিরিয়াম লেপ্রসি নামক জীবাণুর সংক্রমণে ঘটে থাকে,যে জীবাণু যক্ষা রোগ কারক জীবাণুর সাথে সাদৃশ্য যুক্ত। একে হ্যান্সেন ডিজিজ-ও বলা হয়।

আরও পড়ুন:

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-8: চলতি কা নাম কিশোর

কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-১০: রাজ ও স্প্যানিশ

 

১১ প্রকার ক্ষুদ্র কুষ্ঠের বিশেষ লক্ষণ

 

এককুষ্ঠ

সাধারণত আধুনিক বিজ্ঞানের সোরিয়াসিসের সমতুল্য। এখানে চামড়ায় ঘাম হয় না। অনেকটা জায়গা জুড়ে হয়। বড় বড় চাকা চাকা দাগ বা ক্ষত হয়, মাছের আঁশের মতো ছোপ ছোপ বিকৃতি লক্ষ্য করা যায়।
 

চর্মাক্ষ কুষ্ঠ

এটা অনেকাংশে স্ক্লেরডার্মা-র মতো, যেখানে ত্বক হাতির চামড়ার মতো মোটা হয়ে যায়।
 

কিটিভ কুষ্ঠ

এটিও লাইচেন বা সোরিয়াসিসের মতো লক্ষণ যুক্ত, ক্ষত বা দাগ, রুক্ষ, কঠিন স্পর্শযুক্ত হয়।
 

বিপাদিকা

এটি ফ্যাগেডস-এর মতো তীব্র বেদনাযুক্ত, হাত ও পায়ে ফুসকুড়ির মতো দানা হয়, ফেটে ও যায়।
 

অলসক

চুলকানি যুক্ত লাল বর্ণের স্ফোটক হয়, খুবই কষ্টকর ও ব্যথাযুক্ত।
 

দদ্রু

এটি রিং ওয়ার্ম ইনফেকশন, খুব চুলকানি যুক্ত, লাল লাল ছোপ ও ফুসকুড়ি হয়।
 

চর্মদল

এটি ইমপেটিগোর মতো লাল বর্ণ, তীব্র চুলকানি যুক্ত বেদনার সঙ্গে ত্বক ফেটে যায় এবং স্পর্শ সহ্য করতে পারা যায় না।
 

পামা

এটি আধুনিক বিজ্ঞানের স্কেবিজ ইনফেকশনের সমতুল্য। ছোট ছোট ফুসকুড়ি লাল আভাযুক্ত। প্রচণ্ড চুলকায়। চুলকালে আরাম। পরে জ্বালা করে ও রস-রক্ত বেরিয়ে আসে।
 

বিস্ফোট

এটি এরিথিমার সমতুল্য, হালকা সাদা লাল আভার পিড়কা এবং পাতলা…
 

শতারু

এই রোগ এরিথিমা ইন্ডুরেশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে, অনেক ছোট ছোট পিড়কা, দাহ ও বেদনা যুক্ত অবস্থায় ত্বকে বিকৃতি নিয়ে আসে।
 

বিচর্চিকা

এই রোগ একজিমার সঙ্গে তুলনীয়। হালকা ফ্যাকাসে লাল বর্ণের পিড়কা চুলকানি যুক্ত ও প্রচুর স্রাব যুক্ত।

 

চিকিৎসা

যেহেতু জীবাণু সংক্রমণের কারণে লেপ্রসি রোগটি হয় এবং আয়ুর্বেদের মহাকুষ্ঠের সাত প্রকার ভাগের সঙ্গে তার সাদৃশ্য আছে, তাই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জীবাণুনাশক ঔষধি গ্রহণ করা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলা বাঞ্ছনীয়। তবে মহাকুষ্ঠ বা ক্ষুদ্র কুষ্ঠ বলে আয়ুর্বেদে যে চর্মগত বা ত্বকগত রোগের কথা বলা হয়েছে, সব ক্ষেত্রেই আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসাশাস্ত্র মেনে চিকিৎসা করা হলে সুফল পাওয়া যাবেই।
 

চিকিৎসার সিদ্ধান্ত

নিদান পরিবর্জন। অর্থাৎ পূর্বে বলা আহার সম্বন্ধীয়, বিহার সম্বন্ধীয় ও অন্যান্য কারণগুলিকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
সংশোধন চিকিৎসা। অর্থাৎ শরীরে দোষ বাইরে বের করে ডিটক্সিফাই করতে হবে। তার জন্য বৈদ্যের পরামর্শ মতো বমন, বিরেচন, রক্ত মোক্ষণ, বস্তিকর্ম ও নস্যকর্ম ইত্যাদির সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
সংশোধন চিকিৎসা। অর্থাৎ ঔষধাদি খাওয়া, তেল লাগানো, প্রলেপ দেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে দোষলে সাম্যাবস্থায় নিয়ে আসা কর্তব্য।
 

চূর্ণ ঔষধ

বাকুচি চূর্ণ, পঞ্চনিম্ব চূর্ণ, নরসিংহ চূর্ণ, ত্রিফলাদি চূর্ণ এগুলির মধ্যে যে কোনও একটি ৩ থেকে ৬ গ্রাম প্রত্যহ খেতে দেওয়া যায়।
 

বটি

আরোগ্য বর্ধনী বটি, শশীলেখা বটি, কৈশোর গুগ্গূলু, পঞ্চতিক্তঘৃত গুগ্গুলু ইত্যাদির মধ্যে যে কোনও একটি ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম মাত্রায় দিনে দু’বার।
 

ক্বাথ বা পাচন

পটলাদি ক্বাথ, নিম্বাদি ক্বাথ, মঞ্জিষ্ঠ্যাদি ক্বাথ যে কোনও একটির ২০ থেকে ৪০ মিলিলিটার প্রত্যহ খাওয়ানো যেতে পারে।
 

আসব বা অরিষ্ট

খদিরারিষ্ট, মধ্যাসব, ত্রিফলাসব এদের যে কোনও একটি ২০ থেকে ৪০ মিলিলিটার মাত্রায় প্রত্যহ খাওয়ানো যায়।
 

ঘৃত

মহাতিক্ত ঘৃত, মহাখদির ঘৃত, ত্রিফলা ঘৃত এদের যে কোনও একটি ১০ থেকে ২০ গ্রাম মাত্রায় প্রত্যহ খাওয়ানো যেতে পারে।
 

তৈল

বাকুচি তৈল, কনকক্ষীরি তৈল, চালমোগরা তৈল, কুষ্ঠ রাক্ষস তৈল, মরিচ্যদি তৈল ইত্যাদি লাগানো যায়।
 

প্রলেপ

মনঃশিলাদি লেপ, হরি ত্ক্যাদি লেপ প্রলেপ হিসেবে দেওয়া যায়।
 

রসৌষধি

রস মানিক্য, তালকেশ্বর রস, কুষ্ঠ কুঠার রস, গন্ধক রসায়ন ইত্যাদি ১২৫ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় মধু বা ঘৃত-সহ খাওয়ানো যায়।

আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২০: অক্টোবর মাসের ষোলো, কী হল! কী হল?

পরিযায়ী মন, পর্ব-৮: চোখিধানির জগৎখানি

 

পথ্য

তিক্তরস প্রধান অন্ন, পটল, নিম, পুরনো ঘি, হলুদ, আমলকী, করলা, রসুন ইত্যাদি।
 

অপথ্য

বিরুদ্ধ ভোজন, পিষ্টক, নতুন চালের ভাত, মদ্য, তিল, গুড়, দিবা নিদ্রা, মূলমূত্র বেগ চেপে রাখা।

* বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ (Ayurveda) : ডাঃ প্রদ্যোৎ বিকাশ কর মহাপাত্র (Dr. Pradyot Bikash Kar Mahapatra), অধ্যাপক ও চিকিৎসক, ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ।

Skip to content