ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
সাধারণভাবে পুরুষের চেয়ে মহিলারা একটু বেশি এই রোগে আক্রান্ত হন। আধুনিক বিজ্ঞানের মতে এই রোগে মলদ্বার বা বায়ুর রক্তবাহী শিরা সমূহ তার স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ফেলে। ওই শিথিলতাপ্রাপ্ত শিরাগুলি যখন নিচের দিকে নেমে আসে, সে সময় প্রচণ্ড স্পর্শকাতর হয়ে যায় জায়গাটি। যখন শক্ত পায়খানা বা কুন্থন বেগ হয় তখন ওই শিরা সমূহ বেদনা কাতর হয়ে ওঠে ও গ্রন্থির মতো আকার পায়। আবার কখনও কখনও ফেটে গিয়ে ওই শিরাগুলি থেকে তাজা রক্ত বেরিয়ে আসে। অনেক কারণের জন্যই এই অর্শ রোগ হয়। যেমন মলাশয় বা রেকটামের নিম্নভাগের রক্তবাহী শিরাগুলিতে যদি রক্তচাপ বেশি হয়, পায়খানা করার সময় যদি বেশি কুন্থন দেখা যায়, অনেকক্ষণ বসে থেকে মলত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়, দীর্ঘস্থায়ী আমাশার জন্য, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়া হয়, মোটা বা মেদ বহুল মানুষের ক্ষেত্রে, গর্ভিণী মায়েদের ক্ষেত্রে, যাদের পায়ুর মাধ্যমে সেক্স উপভোগের অভ্যাস থাকে, যাঁরা শাকসব্জি কম খান বা খাদ্যতন্তু কম নেন, যারা বেশি ভারী জিনিস তোলেন তাঁদের এমনটা হতে পারে।
রোগের সাধারণ লক্ষণ
মলদ্বারে ব্যথা, পায়খানা করার সময় কষ্ট ও বিশেষ ধরনের অস্বস্তি, বসে থাকা অবস্থায় ও পায়ু প্রদেশে অস্বস্তি, পায়খানার রাস্তায় প্রচণ্ড চুলকানির অনুভব, কখনও রক্তপাত আবার কখনও রক্তপাত ছাড়াই ব্যথা, বেদনা, ফোলা ও কষ্টকর অস্বস্তির অনুভূতি। সাধারণত আধুনিক বিজ্ঞানে রোগের ভয়াবহতা অনুধাবন করানোর জন্য তিনটি ডিগ্রিতে এই রোগের অবস্থানকে সূচিত করা হয়েছে।
আধুনিক বিজ্ঞানে প্রথম ডিগ্রিতে কিছু চিকিৎসার বিধান থাকলেও তা তেমন ফলপ্রসু হয় না। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ডিগ্রির পাইলসের ক্ষেত্রে অপারেশন করার বিধান দেওয়া হয়। যদিও তা প্রায়শই অসফল প্রতিপন্ন হয়। তাই দেখা যাক অর্শ বা পাইলসের সম্বন্ধে আয়ুর্বেদ কী বলছে।
অর্শ রোগের আক্ষরিক অর্থ হল ‘অরিবৎ প্রাণান শৃনাতি ইতি অর্শঃ’। অর্থাৎ যা শত্রুর মতো রোগীর প্রাণের সংকট আনে তাহাই অর্শ। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, এই রোগকে আয়ুর্বেদ দুঃশ্চিকিৎস্য ও মারাত্মক বলে বর্ণনা করেছে। শুধু তাই নয় এই রোগে পাঁচ প্রকার বায়ু (প্রাণ, অপান, সমান উদান ও ব্যান), পাঁচ প্রকার পিত্ত (পাচক, সাধক, রঞ্জক, আলোচক ও ভাজক) এবং পাঁচ প্রকার কফ (ক্লেদক, রসক, অবলম্বক, শ্লেষ্মক ও তর্পক) সব গুলিই বিকৃত হয়। সেই সঙ্গে আমাদের মলাশয় ও পায়ুর মধ্যে অবস্থিত সংবরণী, বিসর্জনী ও প্রবাহনী নামক বলি তিনটি ও দূষিত হয়ে এই রোগ উৎপন্ন হয়।এ তে মাংসাংকুর সদৃশ্ গ্রন্থি পায়ু থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে সাথে কখনও রক্তপাত ঘটায় আবার কখনও রক্তপাত ছাড়াই প্রবল ব্যথা, বেদনা, ফোলা, মলদ্বারে কাঁটা কাঁটা বোধ-সহ প্রবল অস্বস্তিতে রোগী পীড়িত হয়। সুতরাং বায়ু, পিত্ত ও কফ এই তিন দোষেরই প্রকোপ ঘটাতে পারে এমন আহার (খাদ্যাভ্যাস), বিহার (কাজকর্ম) এবং আচার (আচরণ) হল রোগ সৃষ্টির মূল কারণ।
উদরি বা জলোদর রোগের মতো ভয়ংকর রোগেও আয়ুর্বেদে সফল চিকিৎসা রয়েছে, জানতেন?
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: রোজের খাদ্যতালিকায় তেঁতুল নেই! এ সব জানলে এমন ভুল আর নয়
রোগের নিদান
অর্শের প্রকারভেদ
অর্শের সাধারণ উপসর্গ
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-২০: পঞ্চমের সুর আর কিশোর-আশার অনবদ্য উপস্থাপনা, ‘এক ম্যায় অউর এক তু’ গানটি আজও সুপারহিট
অজানার সন্ধানে: এক লিটার পেট্রলে গাড়ি ছুটবে ১০০ কিমি! যুগান্তকারী যন্ত্র আবিষ্কার করেও রহস্যজনক ভাবে উধাও হন বিজ্ঞানী ওগলে
অর্শের চিকিৎসা
আয়ুর্বেদে সাধারণত চার রকম ভাবে চিকিৎসা করার কথা বলা হয়েছে।
আয়ুর্বেদে অগ্নি-কর্ম, ক্ষারকর্ম ও শস্ত্রকর্ম ছাড়াও অত্যন্ত ফলপ্রদ কিছু চিকিৎসা রয়েছে। যেমন: সংশোধন চিকিৎসা। অর্থাৎ শরীরের দোষগুলোকে বাইরে বের করে (ডিটক্সিফিকেশন) দেওয়া হয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। যেমন: বমন, বিবেচন, আস্থাপন বা অনুবাসন বস্তি এবং পিচ্ছা বস্তি।
সংশমন চিকিৎসা
চূর্ণ ঔষধি
বটি ঔষধ
ক্বাথ বা পাচন
আসব বা অরিষ্ট
রসৌষধি
ঘৃত ঔষধি
লেপনের জন্য তেল
পাক বা অবলেহো ঔষধ
মোদক ঔষধ
ইতিহাস কথা কও, কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-১: রাজবাড়ির ইতিকথা—ইতিহাসের অন্তরে ইতিহাস
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫: সুন্দরবন নামরহস্য
পথ্য