সংস্কৃত, বিশেষ করে বৈদিক সংস্কৃত বিষয়ে স্যার ছিলেন মহীরূহ।
কোনওদিন ভাবিনি যে স্যারের সম্বন্ধে আকস্মিক শোক শ্রদ্ধাঞ্জলি লিখতে হবে। আসলে স্যার আমাদের মাঝে আর নেই, এটা মন মানতেই পারছে না। অশ্রুসজল হয়ে ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি। তাই আমার সহ অধ্যাপিকা, হুগলি মহসিন কলেজের ড. সঞ্চিতা কুণ্ডু যখন স্যারের সম্পর্কে কিছু লিখতে অনুরোধ জানায়, তখন ভেবে পাই না, ঠিক কি লিখবো?
সংস্কৃত, বিশেষ করে বৈদিক সংস্কৃত বিষয়ে স্যার ছিলেন মহীরূহ। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল রাত ৯.৩০ মিনিটে আমাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক অমরকুমার চট্টোপাধ্যায় অমরলোকে যাত্রা করেন।
সংস্কৃত, বিশেষ করে বৈদিক সংস্কৃত বিষয়ে স্যার ছিলেন মহীরূহ। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ এপ্রিল রাত ৯.৩০ মিনিটে আমাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক অমরকুমার চট্টোপাধ্যায় অমরলোকে যাত্রা করেন।
স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ২০১০ সালে, যখন সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা করতে আসি। তার আগেও স্যারকে চিনতাম, তবে তখনও সাক্ষাৎ হয়নি। সংস্কৃত কলেজেই প্রথম তাঁর সঙ্গে কথা হয়। আমি তখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছি। সেই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে অনেক কথা হতো। আমার কাজে স্যার খুব খুশি হন। এ বিষয়ে আমাকে অনেক সাহায্যও করেন।
তাঁর হাতের লেখায় সেই সকল চিরকুট এখনও আমার কাছে সযত্নে রাখা আছে। আমি স্বভাবত অন্তর্মুখী এবং লাজুক। কিন্তু স্যারের অমায়িক স্বভাব ও অহৈতুকী স্নেহ আমাকে প্রগলভ করেছিল। স্যারের সঙ্গে নানা ভবিষয়ে নির্দ্বিধায় চর্চা হতো। স্যার মাঝে মাঝেই আমাকে স্বাস্থ্য বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলতেন। ভীষণই স্নেহ করতেন, আমরা যাঁরা স্যারের সান্নিধ্যে এসেছি, তারা সকলেই এই স্নেহ এবং তাঁর ছত্রছায়া পেয়েছি।
তাঁর হাতের লেখায় সেই সকল চিরকুট এখনও আমার কাছে সযত্নে রাখা আছে। আমি স্বভাবত অন্তর্মুখী এবং লাজুক। কিন্তু স্যারের অমায়িক স্বভাব ও অহৈতুকী স্নেহ আমাকে প্রগলভ করেছিল। স্যারের সঙ্গে নানা ভবিষয়ে নির্দ্বিধায় চর্চা হতো। স্যার মাঝে মাঝেই আমাকে স্বাস্থ্য বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলতেন। ভীষণই স্নেহ করতেন, আমরা যাঁরা স্যারের সান্নিধ্যে এসেছি, তারা সকলেই এই স্নেহ এবং তাঁর ছত্রছায়া পেয়েছি।
আরও পড়ুন:
অমৃতলোকের পথে অধ্যাপক শ্রী অমরকুমার চট্টোপাধ্যায়
বিদ্যাসাগর ও বঙ্কিমচন্দ্রের পরে বাংলাভাষার স্বচ্ছন্দ, স্বাভাবিক প্রয়োগ ও বিস্তারে তাঁর অবদান ভোলার নয়/১
ডায়াবেটিস থাকবে দূরে, জেনে নিন কোন ফল কতটা পরিমাণে খাবেন, আর কোনটা খেতে হবে সাবধানে, দেখুন ভিডিয়ো
তিনি অসাধারণ বাগ্মী ও রসিক ছিলেন। শব্দ নিয়ে মজা করতেন। আমাদের লক্ষ্য হল স্বার্থ, অর্থাৎ ‘স্ব’ এর অর্থ খোঁজা। বেদান্তের ভাষায়—নিজেকে জানা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশান স্কলার প্রাপ্ত স্যার আশুতোষ কলেজের সংস্কৃতবিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এছাড়া তিনি কলকাতা, রবীন্দ্রভারতী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যামন্দির, বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশান স্কলার প্রাপ্ত স্যার আশুতোষ কলেজের সংস্কৃতবিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এছাড়া তিনি কলকাতা, রবীন্দ্রভারতী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যামন্দির, বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
আরও পড়ুন:
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৬: গরমে কক্ষনও ডিম খেতে নেই?
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: রোজ খাওয়ার পরে পান খান? অনেক ওষুধ কেনার খরচ বেঁচে যেতে পারে
তোমরা কি জানো cakewalk বা icing on the cake —এই idiom গুলোর মানে কি?
তাঁর লেখা অসংখ্য গ্রন্থ আছে। যেমন: বৈদিক ব্যাকরণ, বেদচর্চায় বঙ্গভূমি ও সামশ্রমী, পিঙ্গলের ছন্দঃশাস্ত্র, রবীন্দ্রভারতী থেকে প্রকাশিত বৈদিক মাধ্যমিক দেবতা, এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত আশ্বলায়ন শ্রৌতসূত্র। এছাড়া স্যারের লেখা বিভিন্ন গবেষণামূলক লেখা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে আছে। বৈদিক শ্রৌতযজ্ঞ বিষয়ে তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ লেখা আছে।
আরও পড়ুন:
অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১৬: বৈধীভক্তি ছাড়িয়ে রাগভক্তি লাভ হয়
মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-৬০: দুই ভাইয়ের সাক্ষাৎ হল, হনুমানের রূপে মুগ্ধ হলেন ভীমসেন
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৩: মোর সাধের বাসরে ঘটল ‘গৃহ প্রবেশ’
সংস্কৃত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হওয়ার পর ইউনিভার্সিটি ইনস্টিউট হলে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত দিবসে ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠান চাক্ষুষ করতে পেরে আমি ধন্য হয়েছি।
বর্তমানেও অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও স্যার বৈদিক সাহিত্যের ইতিহাসের উপর তাঁর গবেষণালব্ধ বই লেখা শেষ করেছিলেন।
নিরলস পরিশ্রমী, স্নেহশীল, ছাত্রদরদী আচার্য তথা এরকম একজন অভিভাবককে হারিয়ে আমরা মর্মাহত, বাকরূদ্ধ। স্যারের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়ে তাঁর অবিনাশী আত্মার শান্তি কামনা করি। শন্নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ। নমো ব্রহ্মণে।
বর্তমানেও অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও স্যার বৈদিক সাহিত্যের ইতিহাসের উপর তাঁর গবেষণালব্ধ বই লেখা শেষ করেছিলেন।
নিরলস পরিশ্রমী, স্নেহশীল, ছাত্রদরদী আচার্য তথা এরকম একজন অভিভাবককে হারিয়ে আমরা মর্মাহত, বাকরূদ্ধ। স্যারের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়ে তাঁর অবিনাশী আত্মার শান্তি কামনা করি। শন্নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ। নমো ব্রহ্মণে।
* ড. মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, অধ্যাপিকা, সংস্কৃত বিভাগ, বেথুন কলেজ।