রবিবার ১০ নভেম্বর, ২০২৪


আজকে ছোটরা পড়াশোনার বাইরে সেভাবে বই পড়ছে না। তারা উপেন্দ্রকিশোর-সুকুমার- দক্ষিণারঞ্জন-অবনীন্দ্রনাথ পড়ে না। আমাদের শিশু-কিশোর সাহিত্যের ভাণ্ডার যে কত সমৃদ্ধ, তা তাদের অজানাই রয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনার ফাঁকে যেটুকু সময় পায় তারা, মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়েই তা কোথায় উধাও হয়ে যায়!
উত্তরবঙ্গের ‘কে কে এডুকেশনাল সোসাইটি’ এই পরিস্থিতি বদলাতে চায়। ছাত্রকল্যাণমুখী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দেবাশিস দেবশর্মা উত্তরবঙ্গের গণ্ডিতে সোসাইটির কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখেননি। সারা বছর ধরেই রাজ্যের প্রতিটি জেলায়, মহকুমায় ছোটদের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছেন।
‘কে কে এডুকেশনাল সোসাইটি’ ছোটদের মধ্যে জ্ঞানতৃষ্ণা এবং বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতে ‘মেধা অন্বেষণ’ পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। ছোটদের সৃজনই-শক্তি বাড়াতে ‘চিত্রকলায় রামধনু’ নামে একটি পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছোটরা বরাবরই অজানাকে জানতে চায়, অচেনাকে চিনতে চায়। তারা চিনুক, জানুক। সেই সঙ্গে লাভ করুক অনেক আনন্দ। হাসিতে খুশিতে ভরে উঠুক তাদের ছোট্ট জীবন। তাদের আনন্দ দিতে, মুখে হাসি আর খুশি ফোটাতে রাখা হয়েছে ‘জানা-অজানার মেধা অন্বেষণ’ নামাঙ্কিত একটি পরীক্ষা-ব্যবস্থারও। এগিয়ে থাকা সফল ছাত্র-ছাত্রীদের শংসাপত্রের সঙ্গে সঙ্গে হাত ভরে বই উপহার দেওয়া হয়। যেমন দেওয়া হল গতকাল কাটোয়ার সংহতি মঞ্চে।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৮: জ্বরে ভাত খাবেন?

নাট্যকার গিরিশচন্দ্রের সন্ধানে, পর্ব-৩০: গিরিশ ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার মনের বাঁক যাবে তো?” ঠাকুর বললেন, “যাবে, ঠিক যাবে”

এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কাটোয়া শহরে পূর্ব বর্ধমানের নানা প্রান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসে ভিড় করেছিল।‌ যারা পুরস্কৃত হয়নি, তারাও খুশি হয়েছে প্রাণবন্ত এক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পেয়ে। এই অনুষ্ঠানে দুশো জনেরও বেশি সফল ছাত্রছাত্রীদের হাতে ভালো ভালো বই তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দেবাশিসবাবু তাঁর স্বপ্নের কথা শোনালেন।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৫: আঁধার ভূবনে আবার কে তুমি জ্বেলেছ ‘সাঁঝের প্রদীপ’ খানি

আগামীদিনেও বইবিমুখ ছোটদের হাতে তিনি এ ভাবেই আরও আরও বই তুলে দেবেন। মনের আনন্দে ছোটরা বই পড়বে, প্রকৃত বন্ধুকে খুঁজে পাবে, এমনই আশা পোষণ করেন তিনি। পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে পুরস্কৃত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ছিলেন তাদের অভিভাবকরাও। জেলার স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এসেছিলেন। শুধু পুরস্কার বিতরণ নয়, মন ছুঁয়ে যাওয়া নৃত্যানুষ্ঠানের ব্যবস্থাও ছিল। ছিল লোকগান থেকে রবীন্দ্র সংগীত। শিক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। আনন্দের অনুষ্ঠান, মনের কোণের ভাবনাকে উসকে দেওয়ার অনুষ্ঠান। সকলের কাছে এই আয়োজন উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল।
কাটোয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান সমীরকুমার সাহা সুদীর্ঘকাল একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ‘কে কে এডুকেশনাল সোসাইটি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তিনি বললেন। দিলেন সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Skip to content