বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর, ২০২৪


‘কালো চিতা’ ইউসোবিও।

বাবা লোরিন্দ অ্যান্টনিও দ্য সিলভা ফেরেইরা এবং মা এলিসা বেনির চতুর্থ সন্তান ইউসোবিও দ্য সিলভা ফেরেইরার জন্ম পর্তুগালের তৎকালীন উপনিবেশ মোজাম্বিকের মাপুতো শহরে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে।

জন্মে ছিলেন ১৯৪২ সালের ২৫ জানুয়ারি। বাবা ছিলেন রেল শ্রমিক। নিজের দেশে তো বটেই, বিদেশেও ক্রীড়া প্রেমিক দর্শক তাঁকে ‘কালো চিতা’ নামেই চিনতেন। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে দুরন্ত গতি, নিখুঁত গোল এবং অসাধারণ ড্রিবলিংয়ের জন্য তিনি সর্বকালের একজন সেরা ফুটবলার।
শৈশবে মাত্র আট বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর অসহনীয় দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে বড় হতে থাকেন। মোজার ভিতরে কাগজ ঢুকিয়ে বল তৈরি করে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতেন। শৈশবেই তাঁর স্কিল দেখে অভিভূত হতেন প্রতিবেশীরা। অসম্ভব বুদ্ধিমত্তায় চোখের পলকে বোকা বানিয়ে প্রতিপক্ষকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে পরাস্ত করতে নিখুঁত ছিলেন এই জাত গোল শিকারি। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় তিনি তাঁর জাদুকরি ফুটবল প্রতিভা দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন গোটা বিশ্বকে।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১: চায়ের দোকান থেকে বিশ্বজয়

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২: ন্যাড়া মাথায় ভালো চুল গজায়?

ক্লাব ফুটবলে অভিষেক মাত্র ১৬ বছর বয়সে মোজাম্বিকের স্পোর্টিং দ্য লরেনসো মারকেজে। মাত্র আঠারো বছর বয়সে নজরে পড়েন সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার হোসে কার্লোস বাওয়ারের। তাঁর ডান পায়ের জোরালো শট আর ড্রিবলিংয়ের পারদর্শীতায় বাওয়ার এতটাই মুগ্ধ ছিলেন যে, নিজের দেশের সাও পাওলো ক্লাবে নিয়ে যেতে চান তিনি। কিন্তু ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৭: পুরীতে বাড়ি— রবীন্দ্রনাথের, গগনেন্দ্রনাথ-অবনীন্দ্রনাথের

মনের আয়না: পরীক্ষার আগে হারাচ্ছে মনঃসংযোগ? কী করলে ফিরবে মনঃসংযোগ? জেনে নাও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত

বাওয়ারের একসময়ের কোচ বেলা গাটম্যান পর্তুগালের এক অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বেনফিকা-র দায়িত্বে। ট্রায়াল পর্বে ইউসোবিওর খেলা দেখে গাটম্যান মুগ্ধ হয়ে সহকারীকে বলেছিলেন, ‘এ যে দেখছি সোনার টুকরো ছেলে।’ তাঁকে পেতে মরিয়া ছিল পর্তুগালের আরেক বিখ্যাত ক্লাব স্পোর্টিং লিসবন। বিনা ট্রায়ালেই তাঁকে নিতে চেয়েছিলেন। অন্যদিকে বার্ষিক ২০০০ ইউরোর বিনিময়ে বেনফিকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ ইউসোবিওর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে দলে টেনে নেন। শুরু হল ইউসোবিওর নতুন অধ্যায়।
আরও পড়ুন:

ডায়েট ফটাফট: সানস্ক্রিন মাখবেন তো বটেই, এবার খেয়েও দেখুন—সিঙ্গল ইনভেস্টমেন্টে ডবল প্রফিট!

স্বাদে-গন্ধে: একঘেয়ে কাতলা? স্বাদবদল করুন ‘কমলা কাতলা’ রেসিপিতে! রইল সহজ রেসিপি

বেনফিকা-র হয়ে অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করে সেই সময়ের পর্তুগালের সমস্ত সংবাদপত্রের শিরোনাম হন তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সে হ্যাটট্রিক করেই তার প্রথম গোলের শিরোপা। ব্যাস, আর পিছনে ফিরে তাকাতেও হয়নি ইউসোবিওকে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মাত্র একাত্তর বছর বয়সে লিসবন, পর্তুগালে তাঁর জীবনাবসান হয়। সর্বকালের একজন অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারের প্রয়াণে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। ইউসোবিও আছেন, থাকবেন।
*বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।

Skip to content